শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ফেডারেল রিজার্ভের বিরুদ্ধে মামলা করবে বাংলাদেশ

রিজার্ভ চুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেডারেল রিজার্ভের বিরুদ্ধে মামলা করবে বাংলাদেশ

বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি হওয়া রিজার্ভের অর্থ ফেরত পেতে ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফিলিপাইন সফররত আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল সেখানে রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি) এবং ফেডারেল রিজার্ভসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন আইনগত দিকগুলো বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক যে আইন সহায়ক নিয়োগ করেছে তিনি ইতিমধ্যে মামলার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। ফলে যে কোনো সময়ই মামলা দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র।

এদিকে রিজার্ভের চুরি যাওয়া বাকি অর্থ ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি) ফেরত না দেওয়ায় ফেডারেল রিজার্ভের বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। দেশের অর্থনীতিবিদরা আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার কথা বলেছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ইন্টারন্যাশনাল কোর্টে যাব কিনা—আমি নিশ্চিত না। তবে এ ব্যাপারে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের বিরুদ্ধে হয়তো কোনো মামলাও করতে পারি। তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কার মতো অর্থ ছাড়ের ব্যাপারে তাদের বিবেচনা করা উচিত ছিল। তারা প্রথমে অথরাইজেশন চেয়েছে, সন্দেহ করেছে আবার টাকা পাঠিয়েছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত বলে আমি মনে করি। তবে কোন সময় কখন করা হবে আমি নিশ্চিত না। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের এই ব্যাংকেই রাখা বাংলাদেশের রিজার্ভের অর্থ আরসিবিসির মাধ্যমে ৮১ মিলিয়ন ডলার সরানো হয়। গতকাল সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী বলেন, রিজাল ব্যাংকের (আরসিবিসি) অ্যাটিচ্যুড (মনোভাব) মোটেও ভালো নয়। তারা যে প্রমিজ (চুরি যাওয়া রিজার্ভের অর্থ ফেরত) করেছে সেটা না মানলে অনৈতিক হবে।

 তারা বিস্ময়কর ভাবে মোড় নিয়েছে (অর্থ ফেরত দেবে না জানিয়ে)। এখন রিজাল ব্যাংকের গভর্নর ও অর্থ পাচার প্রতিরোধ কমিটির চেয়ারম্যান ও তাদের সরকার কী ব্যবস্থা নেবে সেটা আমাদের দেখা দরকার। প্রয়োজনে আমিও কথা বলব। ইতিমধ্যে আমাদের আইনমন্ত্রীর নেতৃত্বে গভর্নরসহ একটি প্রতিনিধি দল সেখানে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংসদীয় কমিটির অভিযোগ আপনি রিজার্ভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন আটকে রেখেছেন— এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংসদীয় কমিটি সত্য কথা বলেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক ঠিকই উত্তর দিয়েছে, আমি সেটা প্রকাশ করছি না। তিনি বলেন, যখন আমি মনে করব দিস ইজ গুড টাইম টু পাবলিশ তখন প্রকাশ করব। সংসদীয় কমিটিতেও তখন দেওয়া হবে। সংসদীয় কমিটি পরামর্শ দিতে পারে। পরামর্শ নেওয়া ন?া নেওয়া নির্বাহী কমিটির বিষয়। কোনো নির্দেশ দেওয়া তাদের পক্ষে উচিত নয়। এ কারণেই আমি প্রকাশ করিনি। রিজার্ভ চুরির তদন্তের আগে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে, সেখানে মামলার ব্যাপারও আছে। রিপোর্টের বাইরে আরও কিছু বিষয় আছে। সেজন্য এখন তা প্রকাশ করা হচ্ছে না। এটা পাবলিশড করব। আমার সময় যত রিপোর্ট হয়েছে সবগুলো পাবলিশড করা হয়েছে। কোন সময় পাবলিশড করা হবে সেটা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, ফেডারেল রিজার্ভ আমাদের অর্থ ফেরত পেতে সহায়তা দেবে। প্রথমে তারা মেনে নিয়েছে অথরাইজড অর্ডার হয় না। এখন সেই অর্ডারের ওপর ভিত্তি করে তারা বলেছে আমরা দিতে বাধ্য নই। তাদের এই স্টেটমেন্টে মূল্যবোধের একটা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আর বেশি কিছু বলতে চাই না। কারণ আনিসুল হকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এখন ফিলিপাইনে রয়েছেন।

সর্বশেষ খবর