রবিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

এবার দিনাজপুরে হরিজনদের ১০ বাড়িতে আগুন

দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুরে হরিজন পল্লীর ১০টি বাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে পল্লীর হরিজন পরিবারের সাতটি ও হিন্দু পরিবারে তিনটি বাড়িতে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। সর্বস্ব হারিয়ে ওই ১০টি পরিবার একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার সেতাবগঞ্জ পৌরসভার মুর্শিদহাট রেল কলোনি হরিজনপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় জুয়েল নামে এক দুষ্কৃতকারীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। জুয়েল (২৩) সেতাবগঞ্জ রেল কলোনি পাড়ার সাবেক কমিশনার আইয়ুব আলীর ছেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দিবাগত রাতে রেল কলোনি হরিজন পাড়ায় সবাই ঘুমিয়ে ছিল। রাত আনুমানিক ৩টার দিকে দুষ্কৃতকারীরা হরিজনপাড়ায় এক এক করে সাতটি বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে আরও তিনটি বাড়িতে তা বিস্তৃত হয়। আগুন থেকে বাঁচতে ১০টি পরিবারের ৪৮ জন নারী-পুরুষ ও শিশু জীবন নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগেই ১০টি বাড়ির কাপড়-চোপড়, আসবাবপত্রসহ সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সেতাবগঞ্জ ফায়ার স্টেশনের স্টেশনমাস্টার জানান, আগুনে ১০টি বাড়ি পুড়ে গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনায় ঘন বসতিপূর্ণ আশপাশের বাড়িগুলো রক্ষা পেয়েছে। হরিজন পল্লীর নেতা মনির লাল বাসফোর বলেন, পূর্বশত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম লিটন জানান, দুর্গাপূজায় স্থানীয় জুয়েল নামে এক যুবকের সঙ্গে হরিজন সম্প্রদায়ের বিরোধ সৃষ্টি হয়। সেই বিরোধের জের ধরেই জুয়েল হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজনকে হুমকি দিয়ে আসছিল। এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজ জামান আশরাফ জানান, জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজনের নিরাপত্তার সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রত্যেককে একটি করে কম্বল ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে ৩০ কেজি চাল ও দুই বান টিন সরকারি সাহায্য প্রদান করেছে। এ ছাড়া সেতাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবদুস সবুর ক্ষতিগ্রস্তদের বসতবাড়ি নির্মাণে আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম সরবরাহ করেছেন। অন্যদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আফসার আলী দলের পক্ষ থেকে প্রতিটি পরিবারকে ২৫ কেজি করে চাল ও থালা-বাসন সরবরাহ করেছেন। এ ছাড়া বিএনপির পক্ষ থেকে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আসলাম প্রত্যেক পরিবারের মধ্যে নগদ এক হাজার করে ১০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর