সোমবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

প্রার্থীদের যত সম্পদ

গোলাম রাব্বানী

জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অর্থসম্পদের অভাব নেই। প্রার্থীদের মধ্যে অধিকাংশই কোটিপতি। অনেকেরই সম্পদের পাহাড় রয়েছে। তবে এ নির্বাচনে সশিক্ষিত থেকে উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রার্থীদের অনেকেরই পেশা ব্যবসা হলেও মত্স্যচাষিও রয়েছেন। নির্বাচন   কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া প্রার্থীদের হলফনামা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। যদিও ইসির ওয়েবসাইটে সব প্রার্থীর হলফনামা পাওয়া যাচ্ছে না। হলফনামার তথ্য অনুযায়ী—সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যক্ষ এনামুল হক সরকারের স্ত্রীসহ তার বার্ষিক আয় ১৫ লাখ টাকার বেশি। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তার নগদ টাকা রয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৪৭৯ টাকা। ১৯ লাখ টাকার শেয়ার রয়েছে। জীবন বীমা ৩ লাখ টাকা। স্থায়ী আমানত ২ লাখ ২৮ হাজার। স্ত্রীর নামে নগদ টাকা দেখানো হয়েছে ৭৫ হাজার। ব্যাংকে দেখানো হয়েছে ১০ লাখ ৮৮ হাজার ৫০২ টাকা। এ ছাড়াও নির্ভরশীলদের নামে ব্যাংকে রয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার টাকার বেশি। ফ্ল্যাট রয়েছে একটি। তবে তার নামে মোটা অংকের ব্যাংক ঋণ রয়েছে। হবিগঞ্জের চেয়ারম্যান প্রার্থী ডা. মো. মুশফিক হুসেন চৌধুরীর বার্ষিক আয়ের খাতে কৃষি থেকে ২৪ হাজার, বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্টসহ অন্যান্য খাতে ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৭৬০ টাকা। সঞ্চয়পত্র ২ লাখ ২৬ হাজার ৬২০ টাকা। ব্যাংক ডিপিএস হিসাব আমানতে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৮ টাকা। পেশা থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার। জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে প্রাপ্ত ভাতা ৩ লাখ ৩০ হাজার। অংশীদারি ব্যবসা থেকে ১ লাখ ১১ হাজার ৪৬০ টাকা। এ ছাড়াও অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকার পরিমাণ ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত টাকার পরিমাণ ২ লাখ ৯০ হাজার, ডিপিএস ১৯ লাখ ৫৮ হাজার ৭৭০ টাকা। পোস্টাল সেভিংসসহ স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ১৮ লাখ টাকা। সিলকো ফার্মাসিউটিক্যাল লি.-এ তার শেয়ার রয়েছে ১০ হাজারটি। আছে বাস-ট্রাক, মোটরগাড়ি। নিজের নামে ২০ ভরি ও স্ত্রীর নামে ২০ ভরি সোনা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে কৃষি জমি ৯ একর, ১০.২৬ শতাংশ জায়গার ওপর চারতলা দালান যার মূল্য ৩১ লাখ টাকা। তিন কাঠার ওপর ৬তলা বিল্ডিং, ঢাকার উত্তরায়, মূল্য ১ কোটি ৪৪ লাখ ৭৯ হাজার ৭৩৭ টাকা। সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী আহবাব হোসেন চৌধুরী। তিনি শিক্ষাগত যোগ্যতায় নিজেকে সশিক্ষিত হিসেবে উল্লেখ করেছেন। পেশায় তিনি উল্লেখ করেছেন প্রাইভেট, মত্স্যচাষ। অপর প্রার্থী নুরুল হুদা মুকুটের শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি পাস। কৃষি খাত থেকে বার্ষিক আয় ১ লাখ ১৫ হাজার। বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ভাড়াবাবদ পান ২ লাখ ১৬ হাজার। ব্যবসা থেকে ৩ লাখ ২৫ হাজার। নির্ভরশীল ব্যক্তিদের নামে ৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। নিজের নামে অস্থাবর সম্পদের নগদ টাকা ৮৫ হাজার, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ২৭ লাখ ২ হাজার ১৬৮ টাকা। শেয়ার রয়েছে ১৫ লাখ টাকার। বাস-ট্রাক, মোটরগাড়ি ইত্যাদির মূল্য দেখিয়েছেন ২৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। সোনার মূল্য ৫০ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে সোনা দেখিয়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকার। স্থাবর সম্পদ নিজের নামে চারতলা একটি বাড়ি। স্ত্রীর নামে অকৃষি জমি রয়েছে ৫ কাঠা। নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী আনোয়ার হোসেনের পেশা বেসরকারি চাকরি। বার্ষিক আয় ১৪ লাখের বেশি। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকা রয়েছে ২০ লাখ ৩৮ হাজার ৪১০ টাকা। ব্যাংকে জমা ৪৩ হাজার ৬৭২ টাকা। পোস্টাল সেভিং সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ (প্রাইজবন্ড) খাতে ১২ লাখ টাকা। সোনা মূল্যবান ধাতুর পরিমাণ ২০ হাজার টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে আড়াই শতাংশ জমিসহ তিনতলা বাড়ি। টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ফজলুর রহমান খান ফারুকের শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএ পাস। পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। বার্ষিক আয় প্রায় ৯ লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকার পরিমাণ ২৯ লাখ ৮৪ হাজার ৫৭০ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৯ লাখের বেশি। নিজের নামে ২০ ভরি সোনা রয়েছে। স্ত্রীর নামে ব্যাংকে জমা রয়েছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫৮৭ টাকা ও পোস্টাল সেভিংস সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানত খাতে বিনিয়োগ ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৪৮৮ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নামে ৭ শতাংশ অকৃষি জমি, ১৭২.২১ বর্গ মিটারের তিনতলা ভবন। স্ত্রীর নামে ১৪শ বর্গফুটের ফ্ল্যাট রয়েছে। অপর প্রার্থী ফজলুল হক মল্লিকের শিক্ষাগত যোগ্যতা ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। তিনি পেশায় সরকারি চাকুরে ছিলেন। বার্ষিক আয় প্রায় ৪ লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকা রয়েছে ৩ লাখ। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা সাড়ে তিন লাখ। স্ত্রীর নামে ৫ ভরি সোনা। স্থাবর সম্পদের কৃষি জমি ২৫৬ শতাংশ। অকৃষি জমি ৫০ শতাংশ, স’ মিল একটি, বাড়ি একটি। তবে তার দেনা রয়েছে। গাজীপুরে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সাবেক ডাকসু ভিপি আকতারুজ্জামান। পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসা থেকে তার বার্ষিক আয় ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৮২৬ টাকা। চাকরির খাতে দেখিয়েছেন ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা প্রায়। ব্যাংক ইন্টারেস্ট ৬৭ হাজারের বেশি। এ ছাড়া প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীলদের আয় দেখিয়েছেন পেশাগত খাত থেকে ৪ লাখ ১৩ হাজার ৩৮৫ টাকা। ব্যাংক ইন্টারেস্ট দেখিয়েছেন ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৯৩৭ টাকা। অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন নগদ টাকা ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৭৫৩ টাকা। স্ত্রীর নামে ৬ লাখ ২২ হাজার ২০৫ টাকা। পোস্টাল সেভিংস সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ খাতে নিজের নামে ১০ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে ৫৫ লাখ ৬০ হাজার ৪১৬ টাকা। নিজের নামে মোটরগাড়ি চারটি। (মূল্য ৭৫ লাখ ৯৯৫ টাকা) স্ত্রীর নামে গাড়ি একটি। সোনা ও মূল্যবান ধাতু রয়েছে নিজের নামে ৭০ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে ১ লাখ ৭১ হাজার ৯৯৯ টাকা। স্থাবর সম্পত্তিদের মধ্যে ৩০৮.১২ শতাংশ অকৃষি জমি, দালান একটি, বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট একটি, স্ত্রীর নামে অকৃষি জমি ৫ কাঠা। তবে তার মোটা অঙ্কের ঋণ রয়েছে। ঢাকা জেলা পরিষদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মাহবুবুর রহমানের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকা রয়েছে ৪৭ লাখ ৩৫ হাজার ৭৫০ টাকা। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে ৬৫ শতাংশ কৃষি জমি, ৬১ শতাংশ অকৃষি জমি। মোটা অঙ্কের ব্যাঙ্ক ঋণ রয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর