শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

নাফ নদীতে রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকাডুবি

মিয়ানমারে সেনারা শক্তির অপব্যবহার করছে : ইইউ

প্রতিদিন ডেস্ক

বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ বোঝাই একটি নৌকা নাফ নদীতে ডুবে গেছে। প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, নৌকার প্রায় সব আরোহীই ডুবে মারা গেছেন। নদীতে অনেকের দেহ ভাসতে দেখা গেছে। এদিকে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে রোহিঙ্গা নাগরিকদের বিতাড়ন করার ঘটনায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।

আমাদের কক্সবাজার প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গত রবিবার রাতে নাফ নদীর টেকনাফ প্রান্তে মিয়ানমারের বড়গজিরবিল গ্রাম থেকে একদল রোহিঙ্গা নৌকা নিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করার সময় জাদিমুড়া নামক স্থানে ডুবে যায়। স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছেন, ডুবে যাওয়া নৌকায় ৩০-৩৫ জন রোহিঙ্গা ছিল। এই সময় রেহেনা বেগম নামে এক রোহিঙ্গা নারী সাঁতার কেটে বাংলাদেশের জলসীমায় লালদিয়া দ্বীপে আশ্রয় নেন। গতকাল ভোরে বাংলাদেশি জেলেরা মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি এনজিও পরিচালিত হাসপাতালে ভর্তি করেন। জানা গেছে, নৌকার আরোহীদের অধিকাংশই নারী ও শিশু ছিলেন। উদ্ধার হওয়া ওই মহিলা স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, টেকনাফের এক দালালের মাধ্যমে তারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। নৌকাটি ছোট হলেও অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই হওয়ায় ডুবে যায়। এদিকে টেকনাফ বিজিবি-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আবু জার আল জাহিদ জানিয়েছেন, নৌকাডুবির খবর পেয়ে বিজিবির টহল দল নাফ নদীর বাংলাদেশের জলসীমায় সকাল থেকে দুই ঘণ্টাব্যাপী তল্লাশি চালিয়েছে। তবে এই অংশ থেকে কোনো লাশ উদ্ধার সম্ভব হয়নি। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, নৌকাডুবির ঘটনায় মিয়ানমারের অংশে অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে। ওই গ্রামের রোহিঙ্গারা নাফ নদীর মিয়ানমার জলসীমায় ব্যাপক খোঁজাখুঁজি করে ১৪টি মরদেহ উদ্ধার করে। আরও অনেককে ভাসতে দেখা গেছে।

রোহিঙ্গা গ্রামে কফি আনান : মিয়ানমারের বড়গজিরবিল গ্রামের এক রোহিঙ্গা মোবাইলে জানিয়েছেন, গত শনিবার দুপুরে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে গঠিত কমিশন তাদের গ্রাম পরিদর্শন করে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এ সময় রোহিঙ্গা নারী-পুরুষরা তাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর চলমান সহিংসতা, গণহত্যা, ধর্ষণের কথা তুলে ধরেন। রোহিঙ্গারা মানববন্ধন করে প্লাকার্ড ও ব্যানারও প্রদর্শন করেন। কফি আনান ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর ওই গ্রামে সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে শতাধিক পুরুষকে ধরে নিয়ে যায়। তারা দুটি গ্রামের ৫০-৬০টি বাড়িঘরও জ্বালিয়ে দেয়। এ অবস্থায় গৃহহারা নারী ও শিশুরা নাফ নদীর পাড়ে এসে আশ্রয় নেন এবং বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালান।

ক্ষুব্ধ ইইউ : রয়টার্স ও এএফপির খবরে বলা হয়েছে, এসব ঘটনায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) তরফ থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখপাত্র ফ্রেদেরিকা মেঘোরিনি গতকাল বলেছেন, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সেনাবাহিনীকে দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে মিয়ানমার। রোহিঙ্গা ইস্যুতে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি তুলে সংস্থার পক্ষ থেকে এই মুখপাত্র আরও বলেন, রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে সেনা শক্তির হাতে হাজার হাজার মানুষ নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন অবিলম্বে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মিয়ানমার সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর