জমি অধিগ্রহণের লক্ষ্যে ‘স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল আইন, ২০১৬’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিলেও এটি অধিকতর যাচাই-বাছাই করতে আইনমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কমিটি করে দিয়েছে মন্ত্রিসভা। নতুন এ আইনে জমির ক্ষতিপূরণ হবে জমির দামের তিনগুণ। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে প্রস্তাবিত আইনটির খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, এখন পর্যন্ত ভূমির ক্ষতিপূরণ দেড় গুণের মধ্যে আছে, নতুন আইন হলে সেটা তিনগুণ হবে। অর্থাৎ, কোনো ভূমির দাম এক কোটি টাকা হলে তার সঙ্গে আরও দুইশ পারসেন্ট যুক্ত হয়ে তিন কোটি টাকা হবে। ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সময় ১২ মাসের জমি কেনাবেচার দলিলের গড় বিবেচনায় নিয়ে জমির দাম নির্ধারণ করা হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এতদিন ১৯৮২ সালের একটি অধ্যাদেশ অনুসরণ করে জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হতো। উচ্চ আদালতের নির্দেশে সামরিক শাসনের সময় জারি করা ওই অধ্যাদেশ এখন বাংলায় করা হচ্ছে। এতে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়িয়ে আইনটিকে নতুন করে করা হচ্ছে।

তিনি জানান, স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল আইনের খসড়া আরও যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন?্য উপস্থাপন করতে মন্ত্রিসভা আইনমন্ত্রীকে প্রধান করে একটি কমিটিকে দায়িত্ব দিয়েছে। এই কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন ভূমি সচিব ও প্রতিরক্ষা সচিব। তবে কমিটি প্রয়োজন মনে করলে আরও সদস?্য নিতে পারবে। তিনি বলেন, আইনটি ব্যাপকভাবে জনস্বার্থ সম্পৃক্ত হওয়ায় আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে আইনমন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কোন উদ্দেশ্যে ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে তা স্পষ্ট করতে আইনের ‘পাবলিক পারপাস’ ও ‘পাবলিক ইন্টারেস্ট’—শব্দ দুটোর সংজ্ঞা ও বিশ্লেষণ আইনে সন্নিবেশিত করতে বলা হয়েছে। আইনের খসড়ায় ওই শব্দ দুটি যেভাবে আনা হয়েছে তাতে বিস্তারিত বোঝা যায় না। হাইকোর্টের নির্দেশনার আলোকে বিস্তারিতভাবে সবগুলোকে একসঙ্গে করতে বলা হয়েছে। এছাড়া মন্ত্রিসভায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০১৬ আইন আকারে জারি করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে মন্ত্রিসভা বাংলাদেশ ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জন আইন-২০১৬ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।