শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

এখনো রহস্যে মেজর জিয়া

কোনো তথ্য নেই গোয়েন্দা ও পুলিশের কাছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

এখনো রহস্যে মেজর জিয়া

এখনো রহস্যের মধ্যেই রয়ে গেছেন শীর্ষ জঙ্গি নেতা মেজর জিয়া। তিনি কোথায় আছেন-এমন প্রশ্নের সঠিক জবাব নেই পুলিশ ও গোয়েন্দাদের কাছে। ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকার পুরস্কার ঘোষিত এই জঙ্গি নেতাকে ধরতে সারা দেশে অভিযান চালালেও বার বার ব্যর্থ হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জানা গেছে, সেনাবাহিনীতে একটি ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টার পর ২০১২ থেকেই জিয়ার আর কোনো হদিস নেই। জিয়াকে ধরতে ওই সময় পটুয়াখালী শহরের সবুজবাগ এলাকায় তার শ্বশুর মোখলেছুর রহমানের বাসায় দফায় দফায় অভিযান চালায় পুলিশ। রাজধানীর কয়েকটি স্থানেও জিয়ার খোঁজে চলে অভিযান। কিন্তু আজও জিয়া রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষিত অপর শীর্ষ জঙ্গি নেতা তামিম আহমেদ চৌধুরী নারায়ণগঞ্জে পুলিশের ‘অপারেশন হিট স্ট্রং-২৭’-এ নিহত হওয়ার পর জঙ্গি দমনে একধাপ এগিয়ে যায় বাংলাদেশ পুলিশ। অনেকের ধারণা ছিল, মেজর জিয়া হয়তো এবার ধরা পড়ে যাবেন। কিন্তু তা হয়নি। এ ছাড়া জঙ্গি ডেরায় এখনো আত্মগোপনে দুর্ধর্ষ জঙ্গি নুরুল ইসলাম মারজানসহ আরও কয়েকজন। গোয়েন্দারা বলছেন, এরাই এখন তাদের প্রধান টার্গেট। গত ২ আগস্ট চাকরিচ্যুত  মেজর জিয়াকে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে পুলিশ সদর দফতর। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, গত দুই বছরে বাংলাদেশে একের পর এক ব্লগার, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, লেখক-প্রকাশক, বিদেশি নাগরিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু হত্যার প্রেক্ষাপটে জিয়ার নাম আলোচনায় আসে। এ ছাড়া গুলশান, শোলাকিয়া ও কল্যাণপুরে ঘটনার মূলহোতাদের মধ্যে মেজর জিয়া অন্যতম। কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম জানান, তারা পলাতক মেজর জিয়া, মারজানসহ কয়েক জঙ্গিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাদের মতো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য সংস্থাগুলোও তাদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে। চাকরিচ্যুত মেজর জিয়ার পুরো নাম সৈয়দ মো. জিয়াউল হক। বাবার নাম জিল্লুল হক। বাড়ি মৌলভীবাজারের মস্তফাপুরে। তার পাসপোর্ট নম্বর, এক্স-০৬১৪৯২৩। ঢাকার বারিধারা ডিওএইচএসে ৯ নম্বর রোডে ৫১২ নম্বর বাড়ির তৃতীয়তলায় জিয়ার পরিবারের ঠিকানা রয়েছে পুলিশের কাছে। সর্বশেষ জিয়া মিরপুর সেনানিবাসের পলাশ ভবনের ১২ তলায় ছিলেন। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, আত্মগোপনে থেকে জিয়া আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের (এবিটি) আধ্যাত্মিক নেতা শাইখ জসিমউদ্দিন রাহমানীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ধীরে ধীরে এবিটির শীর্ষ পর্যায়ের একজন নেতা হয়ে ওঠেন। জিয়ার কমান্ডো ট্রেনিং রয়েছে। তিনি প্রথমে আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সামরিক কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। প্রায় দুই শতাধিক সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেন। গোয়েন্দাদের কাছে খবর আছে, তিনি দেশেই আত্মগোপনে থেকে সক্রিয়। মুফতি জসিম উদ্দিন রাহমানী গ্রেফতার হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, ধরা পড়ার আগে তিনি একাধিকবার ঢাকা ও চট্টগ্রামে মেজর জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, মেজর জিয়া কোথায় থাকতে পারেন, এ বিষয়ে তারা কিছু তথ্য পেয়েছেন। তবে ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করায় তাকে জালে আটকানো যাচ্ছে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর