শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

রাষ্ট্রপতি যেভাবে চাইবেন, ইসি হবে সেভাবে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রপতি যেভাবে চাইবেন, ইসি হবে সেভাবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নিয়েছেন। বিএনপি তাদের প্রস্তাব দিয়েছে। তারা তাদের কথা বলেছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতি আলোচনা করবেন। আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। তিনি (রাষ্ট্রপতি) যেভাবে চাইবেন, নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। আমরা তা মেনে নেব। জাতীয় সংসদের ত্রয়োদশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তৃতায় গতকাল এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, আজ বিএনপি ভোট নিয়ে, নির্বাচন কমিশন নিয়ে কথা বলে। নির্বাচন কমিশন কীভাবে গঠন হবে, নির্বাচন কীভাবে হবে তা নিয়ে খালেদা জিয়া পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, আমরা বিএনপির হ্যাঁ-না ভোট দেখেছি। মিরপুর, মাগুরা, ঢাকা-১০ উপনির্বাচন দেখেছি। এমনকি ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন দেখেছি, ওই নির্বাচনের ফলও আমাদের দেখা আছে। সেনাবাহিনী মোতায়েন করে ভয়ভীতি সৃষ্টি করে প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ভোট চুরি করেছিল। এ জন্য জনগণ তাদের ক্ষমতা থেকে সরিয়েছে, তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি, পদত্যাগ করতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে ও পরে আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও করে মানুষ হত্যা করেছে। এমন কোনো কিছু নেই যা তাদের আক্রমণ থেকে বাদ গেছে। জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। জাতির কাছে এ জন্য খালেদা জিয়াকে ক্ষমা চাইতে হবে। তিনি বলেন, জ্বালাও-পোড়াও ও মানুষ পুড়িয়ে মারার যে মামলাগুলো হয়েছে সেই আসামিদের দ্রুত যেন শাস্তি হয় এটা আমরা চাইব। কারণ খুনি-সন্ত্রাসীদের স্থান বাংলাদেশের মাটিতে হবে না।

রোহিঙ্গা সমস্যা মিলিটারি পন্থায় সমাধান সম্ভব নয় : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যাটি রাজনৈতিক। মিলিটারি পন্থায় এর সমাধান সম্ভব নয়। বাংলাদেশে ডেনমার্কের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মিখাইল হেমনিদ উইনটার গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত উইনটার বলেন, বাংলাদেশের ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার ইস্পিত লক্ষ্য অর্জনে ডেনমার্ক অংশীদার হতে চায়। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ কথা জানান। তিনি বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোকপাত করেন। এমনকি মিয়ানমারের সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা সমস্যাও তাদের আলোচনায় উঠে আসে। এ সময় রোহিঙ্গা ইস্যু মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন ডেনিশ রাষ্ট্রদূত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তিনি রিফিউজি সমস্যা সম্পর্কে ভালোভাবেই অবগত। কেননা ’৭৫-এ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তাকেও দীর্ঘ ছয়টি বছর রিফিউজি হিসেবেই প্রবাসে কাটাতে হয়। রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির উল্লেখ করে বলেন, এটা তৃতীয় কোনো পক্ষের সাহায্য ছাড়া মিয়ানমারকে স্থানীয় পর্যায়েই সমাধান করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ডেনিশ উদ্যোক্তাদের এ দেশের কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, সারা দেশে তার সরকার ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে। এ সময় আগামী ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় ‘নবম গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন’ এবং উন্নয়ন সম্মেলন আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান ডেনিশ রাষ্ট্রদূত। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর