রবিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ফখরুল চাইলেন সেনা, ইসির না

নিজস্ব প্রতিবেদক ও নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে (নাসিক) সেনা মোতায়েনের পরিস্থিতি নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। এ সিটিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিকের চেয়ে সুন্দর রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। অন্যদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন।

গতকাল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও  জেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা  বৈঠক শেষে সিইসি সেনা মোতায়েনের দাবিটি নাকচ করে দেন। পাশাপাশি নাসিকে দলীয় প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের পক্ষে প্রচারণা চালাতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সেনা মোতায়েনের দাবি জানান। রাজধানীর শেরেবাংলনগরে এনইসি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, আনসার-ভিডিপি, কোস্টগার্ড, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা ও স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। এ সময় সিইসি বলেন, নারায়ণগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিকের চেয়ে সুন্দর রয়েছে। আগামীতে তা আরও উন্নত হবে। এখন পর্যন্ত সেনা মোতায়েনের মতো কোনো পরিস্থিতি নেই। বৈঠকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা নারায়ণগঞ্জে ভোটের পরিস্থিতি ভালো রয়েছে বলেও জানিয়েছেন। সিইসি জানান, নারায়ণঞ্জে সন্ত্রাসী-মাস্তান ও বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী যারা নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টি করবে তাদের  গ্রেফতারে অভিযান চলছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছি। এখন তা চলমান রয়েছে। আগামীতে এ অভিযান আরও দৃশ্যমান করতে বলেছি। এদিকে নাসিকে নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন কতটুকু সুষ্ঠু হয়, তার ওপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্বাচন। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সেনাবাহিনী জরুরি।’ গতকাল সকালে নগরীর বাণিজ্যিক এলাকা ডিআইটি দলীয় কার্যালয়ের সামনে তিনি একটি পথসভা করেন। পরে বিভিন্ন স্থানে পথসভায় বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল। এ সময় নাসিক নির্বাচনে দলের সমন্বয়ক গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, দলীয় প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানসহ হাজার হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি মেয়রসহ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কের ২ নং রেলগেট, উকিলপাড়া এলাকায় গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ও অবস্থানের ফলে বাংলাদেশের জনগণ বিজয়ী হবে। আগামী দিনগুলোতে অবশ্যই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। বর্তমান সরকার গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করেছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা মৃতপ্রায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে চাই। আর গণতন্ত্রের প্রতীক হলো ধানের শীষ। তাই গণতন্ত্র রক্ষায় বিএনপির প্রার্থীকে ধানের শীষের প্রতীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে হবে।’ পরে সিদ্ধিরগঞ্জের এসিআই পানির কল, গোদনাইল রসুলবাগ. চিত্তরঞ্জন, চৌধুরীবাড়ি, ২নং বাসস্ট্যান্ড, বার্মাস্যান্ড, আদমজী কদমতলী, সাইলো রোড ও সিদ্ধিরগঞ্জপুল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। গণসংযোগ শেষে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় জনতার উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে সারা দেশে সংগ্রামী মানুষ হিসেবে পরিচিত অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ধানের শীষ প্রতীক তুলে দিয়েছেন। এ নির্বাচন শুধু একটা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নয়, গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচন।’ এ সময় তিনি দলের চেয়ারপারসনের পক্ষ  থেকে  মেয়র প্রার্থী সাখাওয়াতের হাতে দলীয় প্রতীক ধানের শীষের ছড়া তুলে দেন।

সর্বশেষ খবর