সোমবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্তে কাজ চলছে আইনের খসড়ার

—আইনমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক


যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্তে কাজ চলছে আইনের খসড়ার

সাজাপ্রাপ্ত ও চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে এ সংক্রান্ত একটি আইনের খসড়া প্রস্তুত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। গতকাল বাংলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত মানবাধিকার পদক-২০১৬ শীর্ষক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। অনুষ্ঠানে তৃণমূল পর্যায়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১০ জন মানবাধিকারকর্মীকে পদক প্রদান করা হয়। মন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসা বিভিন্ন সংগঠন আগে  থেকেই মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিতদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে এ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় বিষয়টি সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় সরকার মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তারপরও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো কিছু ঘটনা ঘটছে। ওই ধরনের ঘটনায় আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন এবং যারা স্বাধীনতাবিরোধী তাদেরই হাত রয়েছে। মানবাধিকার রক্ষায় আমাদের সকলের সচেষ্ট থাকতে হবে। যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। তিনি আরও বলেন, নাসিরনগরসহ দেশের অন্যান্য স্থানে যারা সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটাচ্ছে তাদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা হবে। এমন শাস্তি দেওয়া হবে যাতে সবাই জানে এ ধরনের কাজ করলে ওই শাস্তি হবে। এদিকে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ সরিয়ে দিতে প্রধান বিচারপতির বক্তব্যের লিখিত অনুলিপি দিতে সুপ্রিমকোর্টকে অনুরোধ করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ওই অনুষ্ঠান  শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ অনুরোধ জানান আইনমন্ত্রী। এর আগে শনিবার এক অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের ১১৬ এবং ১১৬ (এ) সংবিধানের প্রিন্সিপালসের সঙ্গে কনফ্লিক্ট করে। যার পরিপ্রেক্ষিতে এই দুই বিধান সংবিধানের পরিপন্থী। যা আমাদের পবিত্র বই থেকে অতি তাড়াতাড়ি সরিয়ে দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আমি সকাল বেলা খবরের কাগজে পড়েছি। কিন্তু আমি মনে করছি, খবরের কাগজে হয়ত তার পূর্ণাঙ্গ বক্তৃতা আসেনি। সেটা বোঝার জন্য আমি অলরেডি সুপ্রিমকোর্টকে অনুরোধ করেছি, তার বক্তব্য যদি উনি লিখিত দিয়ে থাকেন তাহলে সেই কপিটা যেন আমাকে  দেওয়া হয়। এটা দিলে আমি সঠিকভাবে অনুধাবন করে আমার যে কথা সেগুলো বলতে পারব। যতক্ষণ পর্যন্ত কপিটা না পাই ততক্ষণ পর্যন্ত আমি কোন বক্তব্য দিয়ে ভুল  বোঝাবুঝির সৃষ্টি হোক, সেটা চাই না।

আইনমন্ত্রী বলেন, কিন্তু আমি একটা কথা অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে বলব, এখন যে অনুচ্ছেদগুলো রয়েছে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ব্যাপারে (১১৬-ক ), সেটা সরকার সম্পূর্ণভাবে মেনে চলে। বিচারিক কাজে বিচারককে কোনোভাবে নির্বাহী বিভাগ হস্তক্ষেপ করে না। আমরা করি না। আমরা ১১৬-ক সম্পূর্ণভাবে মেনে চলি ও সম্মান করি। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের গভর্নিং বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান সেলিনা হোসেন বক্তব্য রাখেন।

সর্বশেষ খবর