মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

তাদের হাতে তীর ধনুক লজ্জার

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

তাদের হাতে তীর ধনুক লজ্জার

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেছেন, ‘গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল পল্লীতে এসে আজ আমরা দুঃখ পেয়েছি, লজ্জা পেয়েছি এই দেখে যে, আত্মরক্ষার জন্য বাংলাদেশের নাগরিকদের তীর-ধনুক-লাঠি হাতে থাকতে হচ্ছে। জমি থেকে উচ্ছেদের ঘটনায় এখানে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে, তদন্তে এসে আমরা সেসবের পরিচ্ছন্ন ইঙ্গিত পেয়েছি। এ ঘটনায় যারা দায়ী তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’ গতকাল গোবিন্দগঞ্জে রংপুর চিনিকলের ইক্ষু খামারের জমি থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদের ঘটনা তদন্ত করতে এসে সাঁওতাল পল্লী মাদারপুর গ্রামের গির্জার সামনে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, সাঁওতালরা বৈধ-অবৈধ যেভাবেই চিনিকলের খামারের জমিতে বসতি গড়ে তুলুক না কেন, তাদের আইনি প্রক্রিয়ায় উচ্ছেদ করা হয়নি। মিলের খামারের জমি লিজ দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চিনিকল বন্ধ কিংবা অন্য কোনো কারণে মিলের জমি যদি লিজ দিতে হয়, তবে তা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সাঁওতালদের দেওয়া দরকার ছিল। কোনোভাবেই প্রভাবশালীদের জমি লিজ দেওয়া ঠিক হয়নি। খামারের জমিতে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া প্রসঙ্গে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, মানুষের চলাফেরা, কথা বলা, এক হওয়ার স্বাধীনতা সংবিধানে স্বীকৃত। কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলেছি, এজাহারে নাম উল্লেখ না থাকলে অহেতুক কাউকে ধরে যেন হয়রানি না করা হয়।’ রংপুর চিনিকলের ইক্ষু খামারের জমি থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদ সরেজমিন তদন্ত করতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, আদিবাসী-বিষয়ক সংসদীয় ককাস এবং ইউএনডিপির হিউম্যান রাইটস প্রোগ্রামের ১০ সদস্যবিশিষ্ট একটি দল গতকাল সাঁওতাল পল্লীতে আসে। এতে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন আদিবাসী-বিষয়ক সংসদীয় ককাসের আহ্বায়ক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, সদস্য এ কে ফজলুল হক এমপি, টিপু সুলতান এমপি, ককাসের টেকনোক্র্যাট সদস্য অধ্যাপক ডক্টর মেজবাহ কামাল, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) শরিফ উদ্দিন। ইউএনডিপির হিউম্যান রাইটস প্রোগ্রামের শর্মিলা রাসুল, তাসলিমা নাসরিন, শংকর পাল প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর