শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

আমলাতান্ত্রিক মনোভাব পরিহার করে জনসেবক হোন : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশাসনের নবীন কর্মকর্তাদের যে কোনো পরিস্থিতিতে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার এবং জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাস মোকাবিলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের আমলাতান্ত্রিক মনোভাব পরিহার করে জনগণের খাদেম হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী গতকাল বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমির ৯৮তম ও ৯৯তম আইন ও প্রশাসন কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দিচ্ছিলেন। শাহবাগে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমি অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠানে কোর্সে উত্তীর্ণদের সনদ বিতরণ শেষে ভাষণ দিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের কর্মচারীদের নিজেদের জনসেবায় উৎসর্গ করতে হবে। সব কিছুর উপরে জাতীয় স্বার্থকে স্থান দিতে হবে। জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ যাতে কখনো বাংলার মাটিতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেজন্য সরকার মসজিদের ইমাম, শিক্ষক, অভিভাবকসহ সব শ্রেণি-পেশার লোকদের নিয়ে একটা সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলছে। তিনি বলেন, ইসলাম ধর্মে কখনো মানুষ খুন করতে বলেনি। মানুষের জীবন থাকবে কি থাকবে না, তা নির্ধারণ করার দায়িত্ব আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের এটা যে মানুষের হাতে নয় তা বোঝাতে হবে। আমরা দেশকে দক্ষিণ এশিয়ায় একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন, জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদিক, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান, একাডেমির রেক্টর ড. এম আসলাম আলম। প্রশিক্ষণার্থীদের পক্ষে রেক্টর অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত ৯৮তম কোর্সের মোহাম্মদ সোহাগ হাওলাদার এবং ৯৯তম কোর্সের মোহাম্মদ নাহিদুল করিম তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। গ্রাম বর্তমান সরকারের উন্নয়নের মূল লক্ষ্য জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গ্রামের অর্থনীতিকে আমরা আরও শক্তিশালী ও উন্নত করতে চাই। গ্রামীণ অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে হবে, দারিদ্র্য বিমোচন করতে হবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই সরকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে চলছে। তিনি বলেন, শিক্ষাই হচ্ছে একমাত্র পথ যার মাধ্যমে একটি দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করা যায়। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে বাংলাদেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে সরকার কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আঞ্চলিক সহযোগিতা আমরা বৃদ্ধি করেছি। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন হচ্ছে। আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুযোগ আছে। ২০০১-২০০৬ সালের সরকারের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একদিনে ১৩ জন সচিবের চাকরি গেল। সামরিক বাহিনীর অবস্থা তো আরও খারাপ। প্রায় ১ হাজার ২০০ কর্মকর্তাকে সামরিক বাহিনী থেকে বিদায় দিয়ে দিল। 

সার্বিকভাবে দেশ গড়তে প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে প্রশিক্ষণ কোর্স শেষ করা হলো তাতে প্রশিক্ষিতরা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবেন। তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সমগ্র বাংলাদেশে ইন্টারনেট সার্ভিস। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উেক্ষপণ করছি। ঘরে বসে নিজের দেশের মধ্যে যোগাযোগ এবং বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ আমরা করে দিয়েছি। ডিজিটাল সেন্টার বাস্তবায়ন করেছি।

বাংলাদেশ সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আবির্ভূত হবে : মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ভারত ও রাশিয়ার বীর যোদ্ধারা অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ একটি মহান ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আবির্ভূত হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ প্রকাশ করেছেন। তারা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশের ব্যাপক পরিবর্তনের প্রশংসা করেন এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি বিজয়ী ও মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে এ দেশ ও জনগণের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। এই বীর যোদ্ধাদের গতকাল সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া এক সংবর্ধনায় এ কথা বলেন। ভারতের ২৯ জন এবং রাশিয়ার ৫ জন যোদ্ধা  সস্ত্রীক বাংলাদেশের ৪৬তম বিজয় উৎসবে যোগ দিতে ঢাকায় এসেছেন।

সর্বশেষ খবর