শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
জেলা পরিষদ নির্বাচন

আচরণবিধি লঙ্ঘন পদে পদে

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্দলীয় জেলা পরিষদ নির্বাচনেও প্রার্থীরা পদে পদে আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। ভোটারদের কোনো ধরনের উপঢৌকন দেওয়া নিষিদ্ধ থাকলেও প্রার্থীরা তা মানছেন না। পাশাপাশি প্রকাশ্যেই চলছে ভোট কেনাবেচা। নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে একেবারেই নির্বিকার। তারা দেখেও না দেখার ভান করছেন।

জামালপুরে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শেরপুরে ভোট কেনাবেচার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী।

জামালপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে পোস্টার ছাপানোয় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জাহিদ আনোয়ারের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী আনজুমান আরা। এ ব্যাপারে তিনি রিটার্নিং অফিসারের কাছে অভিযোগ করেছেন। রিটার্নিং অফিসার ও জামালপুরের জেলা প্রশাসক শাহাবুদ্দিন খান জানান, তিনি অভিযোগ পেয়েছেন। জাহিদ আনোয়ারকে অবিলম্বে সব পোস্টার সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। জাহিদ আনোয়ারের ঘোড়া প্রতীকের পোস্টারে লেখা হয়েছে, ‘আসন্ন জামালপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক মনোনীত ও সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী।’ জেলা পরিষদ নির্বাচনে তাকে দল সমর্থন দিলেও নির্দলীয় এই নির্বাচনে পোস্টার বা প্রচারণায় দলের নাম ব্যবহার আচরণবিধির লঙ্ঘন। জাহিদ আনোয়ার ছাড়া কোনো প্রার্থীর পোস্টারে দলীয় পরিচয় ব্যবহার করা হয়নি। জামালপুরে চেয়ারম্যান পদে ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এইচ আর জাহিদ আনোয়ার ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ চৌধুরীর মধ্যে মূল লড়াই হবে বলে মনে করা হচ্ছে। জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা দলের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ চৌধুরীর পক্ষে মাঠে নেমেছেন। অন্যদিকে জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য রেজাউল করিম রেজনুসহ দলের পদবঞ্চিত নেতারা রয়েছেন এইচ আর জাহিদ আনোয়ারের পক্ষে। শেরপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, শেরপুর সদর আসনের এমপি জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিকের বিরুদ্ধে দল সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে ভোট কেনার অভিযোগ তোলেছেন বিদ্রোহী প্রার্থী হুমায়ুন কবির রুমান। তার অভিযোগের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাল্টা অভিযোগ তোলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী চন্দন কুমার পাল। তিনি গতকাল দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, টিআর-কাবিখা প্রকল্প বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে দুজন প্রভাবশালী নেতা ভোট কিনছেন। গত বুধবার সংবাদ সম্মেলনে বিদ্রোহী প্রার্থী হুমায়ুন কবির রুমান হুইপ আতিককে নির্বাচনকালে শেরপুরে থাকতে না দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করেন। দল সমর্থিত প্রার্থী চন্দন কুমার পাল পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী ভোটের মাঠে আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন। ভয়ে অনেক ভোটার আমার সঙ্গে প্রকাশ্যে কথা বলতে পারছেন না।

আমি ভোট চাইতে গেলে ভোটাররা পালিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগের ব্যাপারে হুমায়ুন কবির রুমান বলেন, আমার পক্ষে টিআর-কাবিখা দেওয়ার মতো কোনো লোক নেই। কারও কাছে অবৈধ অস্ত্র থাকলে তা অবশ্যই উদ্ধার করা উচিত। হুইপ আতিউর রহমান আতিক বলেন, আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সত্য নয়। নির্বাচনী প্রচারণায় আমি অংশ নিচ্ছি না।

দুই ইউনিয়নের ভোটার তালিকায় স্থগিতাদেশ : সাতক্ষীরার রমজান নগর ও কৈখালী ইউনিয়নের ভোটার তালিকার ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পৃথক দুটি রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এবং বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই দুটি ইউনিয়নের ভোটার তালিকার ওপর দুই মাসের স্থগিতাদেশ দেয়। এ আদেশের ফলে এখন সাতক্ষীরায় জেলা পরিষদ নির্বাচনের সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর