রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা নারায়ণগঞ্জের মাঠে

মাহমুদ আজহার

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনকে ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে নিয়েছে বিএনপি। এ নির্বাচনে জয়-পরাজয় যাই হোক—তা নিয়ে ‘ইস্যু’ বানাবে দলটি। বিএনপি বলছে, সুষ্ঠু ভোট হলে ধানের শীষের প্রার্থী বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে। পরিস্থিতি এখনো অনুকূল বলেই মনে করছে তারা। এজন্য খোদ দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নাসিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। দলের সব নেতাকেও নিয়মিত মাঠে পাঠাচ্ছেন। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও ধানের শীষের প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানের গণসংযোগে অংশ নিয়েছেন। গতকাল প্রচারে অংশ নিয়েছেন প্রবীণ নেতা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদও। দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে নাসিক নির্বাচন সংক্রান্ত একটি কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিদিনই টিমে অন্তর্ভুক্ত হয়ে শতাধিক কেন্দ্রীয় নেতা গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। জানা যায়, ২৭টি ওয়ার্ডে ২৭ জন কেন্দ্রীয় নেতার সমন্বয়ে কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। দলের প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের পাশাপাশি প্রতিদিনই ওয়ার্ডভিত্তিক প্রচারণা চলছে। দিন-রাত প্রচারণা চালাচ্ছেন দলের নেতা-কর্মীরা। নাসিকের তিন থানায় তিনজন কেন্দ্রীয় নেতা দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে সদরে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সিদ্ধিরগঞ্জে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম ও বন্দরে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন। মিডিয়া সেল দেখভাল করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন। এ ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাখাওয়াতের পক্ষে  খোলা হয়েছে একটি আইডি। তরুণদের আকৃষ্ট করতেই ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে এ আইডি খোলা হয়েছে। গতকাল নারায়ণগঞ্জ বাস টার্মিনাল এলাকায় গণসংযোগকালে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘আমরা এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছি গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে। দেশে এখন একদলীয় শাসন চলছে। এই নির্বাচন বিএনপির জন্য যেমন পরীক্ষা, তেমনি সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের জন্যও পরীক্ষা। আমরা দেখতে চাই, সুযোগ আমরা সরকারকে দিয়েছি সেটি তারা নেয় কি না। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করতে চাই। দেখি তারা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন দেয় কি না। এই নির্বাচনের দিকে দেশি-বিদেশি সবাই তাকিয়ে রয়েছে।’ ও সময় দলীয় প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান ছাড়াও তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালকুদার দুলু, অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, বাবুল আহমেদ, আবুল খায়ের খাজা, এনডিপির চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মর্তুজা প্রমুখ। এদিকে গতকাল বিএনপির প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষা ও প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছি। জনগণ পরিবর্তনের জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। ২২ তারিখে যদি জনগণ ভোট দিতে পারে তাহলে পরিবর্তন আসবে, বিএনপি জয়ী হবে।’ নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নিয়মিত গণসংযোগে অংশ নেওয়া কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ন কুদ্দুসুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ‘প্রশাসন বা আওয়ামী লীগ যদি ভোট ডাকাতি না করে, তাহলে ধানের শীষের প্রার্থীর অবিস্মরণীয় বিজয় হবে।’  গত নির্বাচনে দলের প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকারকে বসিয়ে দেওয়ার ব্যাখ্যা দেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, এই নির্বাচনে যিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী, গত নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। শেষ মুহূর্তে আমরা কৌশলগত কারণে আমাদের প্রার্থীকে বসিয়ে দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছিলাম। যাতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে সহজেই পরাজিত করানো যায়।  সে কারণে তৈমূর মনে কষ্ট পেয়েছেন। এবার   চেয়ারপারসন বেশ কয়েকবার বলার পরও তৈমূর আলম খন্দকার ব্যক্তিগত কারণে প্রার্থী হননি। তবে তৈমূর আলম খন্দকার গতকাল প্রচারে অংশ নিয়ে বলেছেন, জীবন থাকতে কেন্দ্রে কাউকে গায়ের জোরে ঢালাও সিল মারতে দেব না। দলের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাব। গত কয়েকদিন ধরেই শতাধিক কেন্দ্রীয় নেতা নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিচ্ছেন। বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের মধ্যে রয়েছেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (অব.), আবদুল আওয়াল মিন্টু, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, মীর মোহাম্মদ নাছিরউদ্দিন, আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, মিজানুর রহমান মিনু, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, আতাউর রহমান ঢালী, আবদুস সালাম, মজিবুর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবীর খোকন, আবুল খায়ের ভূইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, শামা ওবায়েদ, মাহবুবুর রহমান শামীম, অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, কামরুজ্জামান রতন, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আ ক ন কুদ্দুসুর রহমান, সেলিমুজ্জামান সেলিম, মাহবুবুল হক নান্নু, নাজিম উদ্দিন আলম, তাবিথ আওয়াল, আফরোজা আব্বাস, শিরিন সুলতানা, সুলতানা আহমেদ, সাবেক ফুটবলার আমিনুল ইসলাম, আবদুল আউয়াল খান, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সাইফুল আলম নীরব, মীর সরফত আলী সুপ,  ডা. দেওয়ান মো. সালাহ উদ্দিন বাবু, গিয়াস উদ্দিন, হেলেন জেরিন খান, শাম্মী আক্তার, সালাউদ্দিন ভুইয়া শিশির, একরামুল হক বিপ্লব, বাবুল আহমেদ, আবুল হোসেন খান, আলবার্ট ডি. কস্তা, রফিক শিকদার, জাকির হোসেন রুকন, ছাত্রদল সভাপতি রাজিব হাসান, সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানসহ স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।

সর্বশেষ খবর