নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে গোপন কক্ষে না গিয়ে প্রকাশ্যে সিল মেরে ভোট দিয়েছেন সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান। নারায়ণগঞ্জ বার একাডেমি (স্কুল) কেন্দ্রে বেলা ২টা ৪০ মিনিটে সাংবাদিকদের সামনে সিল দিয়ে ব্যালট পেপার উঁচিয়ে দেখান যেখানে নৌকা প্রতীকে সিল মারা দেখা গেছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়ী হবেন।
এর আগে বেলা আড়াইটার দিকে শামীম ওসমান তার গাড়িতে করে ভোট দিতে আসেন। তার সঙ্গে অন্য কাউকে কেন্দ্রে ঢুকতে দেখা যায়নি। তার দুজন সঙ্গী গাড়ি থেকে নামেননি। ভোট দেওয়ার পর নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান বলেন, ‘বলেছিলাম একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। তাই-ই হচ্ছে। সেটাই হয়েছে।’ এজন্য তিনি নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। শামীম ওসমান বলেন, প্র্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সব নির্বাচন যে সুষ্ঠু হয় তা দেশবাসী দেখেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন আছে। সেখানে দ্বিতীয়বার ভোট গণনার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন তুলতে পারবে না। একজন এমপি হয়ে প্রকাশ্যে ভোট দিতে পারেন কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আপনারা সাংবাদিকরা নির্বাচনের কিছু খুঁজে পাচ্ছিলেন না। আমি চেয়েছি নিজেকে রক্তাক্ত করে আপনাদের খুশি করতে।’ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে কী হবে— জানতে চাইলে শামীম ওসমান বলেন, ‘আজকের নির্বাচন দেখে বিএনপি নির্বাচনে আসবে। বিএনপির প্রতি আমার এ আহ্বান থাকবে।’ তিনি আইভীর প্রতি অনুরোধ জানান, জয়ী হওয়ার পর তিনি যেন এই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেন। এই নেতা-কর্মীরা শেখ হাসিনার নির্দেশে নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন। আইভী জিতলে আইসক্রিম খাওয়া প্রসঙ্গে শামীম ওসমান বলেন, ‘ও (আইভী) না খাওয়াক, আমি খাওয়াব। কারণ, নির্বাচন নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে বুধবার রাতে ঢাকা থেকে অনেক সাংবাদিক এসেছিলেন। থাকা-খাওয়ার জায়গা পাচ্ছিলেন না। আমি গরিব মানুষ হলেও খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছিলাম। দু-একটি গণমাধ্যম খবর প্রকাশ করেছে, আমি নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে বসে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছি।’ ভয়ভীতিতে ভোটাররা কেন্দ্রে আসছেন না— বিএনপির মেয়র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে শামীম ওসমান বলেন, ‘তিনি (সাখাওয়াত) কি লিখিত অভিযোগ করেছেন? উনি ভালো আইনজীবী। তার নির্বাচনী আইন জানা উচিত। তিনি যদি রিটার্নিং কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ দিতেন, আমিও তার পাশে থাকতাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের অনেক লোক ও পত্রিকা আছে, তারা খুব চেষ্টা করেছে নির্বাচনকে একটা ইস্যু বানানোর। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের অনেক লোকের পায়ের নিচে মাটি নেই। তারা বিভিন্নভাবে উসকানি দিয়ে এসেছে। আমি নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি করে এখানে এসেছি। ওই উসকানিতে তারা চলতে পারে, কিন্তু আমরা চলি না।’
