শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

খালেদা জানতেন বিএনপি হারবে

আলী রিয়াজ

খালেদা জানতেন বিএনপি হারবে

জাফরুল্লাহ চৌধুরী

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি হারবে তা খালেদা জানতেন। আমি মনে করি আইভীর যোগ্যতাই তাকে জয়ী করেছে। তার বিপরীতে বিএনপি যাকেই প্রার্থী করত সে হারত। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ সিটি মেয়র নির্বাচন নিয়ে এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিএনপি ঘরানার বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। একান্ত আলাপচারিতায় গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে তিনি নির্বাচন সম্পর্কে নিজের মত তুলে ধরেন। জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, নারায়ণগঞ্জে আইভী একজন যোগ্য প্রার্থী। তিনি রাজনৈতিক পরিবারের মেয়ে। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জে ত্বকী মঞ্চের আন্দোলনে তিনি অনেক প্রচার পেয়েছেন। সেখান থেকে উঠে এসে মেয়র হয়েছেন। গত মেয়াদে প্রথমবার তিনি সফলতার সঙ্গেই মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার যে পরিচিতি, যে জনপ্রিয়তা সেখানে বিএনপির কোনো প্রার্থীরই তা ছিল না। তিনি বলেন, বিএনপি সাখাওয়াত খানকে মনোনয়ন না দিয়ে তৈমূর খন্দকার বা অন্য কাউকে দিলেও তারা হারতেন। হয়তো কিছুটা ভোট বাড়ত। বিএনপির সিদ্ধান্ত নিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, নারায়ণগঞ্জে আইভী বিএনপির সৃষ্টি এটা তাদের বলা উচিত ছিল। এর আগের মেয়র নির্বাচনে বিএনপি সরে আসার কারণেই আইভী জিতেছেন। এবারও আইভীকে বিএনপি সমর্থকরা ভোট দিয়েছেন। কারণ কাউন্সিলর প্রার্থী বিএনপি সমর্থক জিতেছেন ১১ জন। সেখানেও আইভী জিতেছেন। নারায়ণগঞ্জ একটি সন্ত্রাসের এলাকা বলে পরিচিত। সেখানে আইভীর পজিটিভ ইমেজ তাকে জিতিয়েছে। নারায়ণগঞ্জে জিতবে বা হারবে এটা বিএনপি দলীয়ভাবে কীভাবে নিয়েছে তা জানি না তবে আমি মনে করি খালেদা জিয়া অবশ্যই জানতেন। আবার প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে বিএনপি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বলে আমি মনে করি। তৈমূর খন্দকার চাননি মেয়র হতে। তিনি সম্ভবত পরবর্তীতে এমপি হতে চান। এটা ঠিক আছে। আর সাখাওয়াত খানের ক্লিন ইমেজ হিসেবে পরিচিতি আছে। সেখানকার নাগরিকসমাজের প্রতিনিধি তিনি। তাকে মনোনয়ন দেওয়া সঠিক সিদ্ধান্ত। তার পরাজয় যতটা না আওয়ামী লীগের কাছে হয়েছে তার চেয়ে বেশি আইভীর কাছে। জাফরুল্লাহ চৌধুরী নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বলেন, অবশ্যই একটি ভালো নির্বাচন হয়েছে। কোনো ধরনের প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার মতো ঘটনা ঘটেনি। এটা রাজনীতির জন্য একটি ভালো দিক। এটা ধরে রাখতে হবে। বিএনপি এ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের ভীতি কেটেছে। তারা এখন রাস্তায় নামার সাহস পেয়েছে বলে আমি মনে করছি। আগামী সংসদ নির্বাচনে এটা কতখানি গুরুত্ব বহন করবে তা বিএনপির কার্যক্রমের ওপর নির্ভর করবে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি কতখানি আস্থা পেয়েছে জানতে চাইলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, নির্বাচন কমিশন বা সরকারের অবস্থান কীভাবে বিএনপি নেবে তার ওপর নির্ভর করে। তবে আমার ধারণা বিএনপি তার আগের অবস্থান থেকে সরে আসবে। তারা সব নির্বাচনেই অংশ নেবে। নারায়ণগঞ্জে হেরেছে এটা তাদের জন্য কোনো নেতিবাচক দিক নয়। কারণ বিএনপির ভোট এখনো আছে। এবং তা অনেক। ক্ষমতায় যাওয়ার মতো ভোট এখনো তাদের আছে। এর পরও আমি মনে করি বিএনপির অনেক ভুল আছে সেগুলো কাটাতে হবে।

সর্বশেষ খবর