সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

কলকাতার মাদার হাউসে হামলার পরিকল্পনা মুসার

কলকাতা প্রতিনিধি

মধ্য কলকাতার ৫৪/এ আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু রোডে অবস্থিত মিশনারি অব চ্যারিটিজের সদর কার্যালয় মাদার হাউসে বড়সড় হামলার পরিকল্পনা ছিল জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস)। কয়েকদিন আগে কলকাতার ব্যাঙ্কশাল আদালতে মুসার বিরুদ্ধে পেশ করা চার্জশিটে এমনটাই উল্লেখ করেছে এনআইএ।

এনআইএ সূত্রের খবর, কয়েক মাস আগে পশ্চিমবঙ্গ থেকে আইএস জঙ্গি সন্দেহে আটক মুসাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে ভারতের তদন্তকারী এ সংস্থাটি। জেরায় মুসা স্বীকার করেছেন, তার প্রধান লক্ষ্য ছিল মাদার হাউসে আসা ব্রিটিশ, মার্কিন ও রুশ নাগরিকদের ওপর হামলা করা, যারা নিয়মিত এই মাদার হাউসে আসতেন। এমনকি মুসা নিজেই এ হামলার ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করেছিলেন বলেও জানতে পেরেছেন তদন্তকারী গোয়েন্দারা। কারণ সিরিয়া ও লিবিয়ায় ব্রিটিশ, মার্কিন, রাশিয়া এই তিন শক্তির সঙ্গেই লড়াই করতে হচ্ছে আইএসকে। তাই এই তিন দেশের নাগরিকদের ওপর হামলা করে প্রতিশোধ নেওয়াই লক্ষ্য ছিল মুসার।

উল্লেখ্য, ১ জুলাই ঢাকায় জঙ্গি হামলার পর ৪ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান রেলস্টেশনে বিশ্বভারতী ফার্স্ট প্যাসেঞ্জার থেকে মুসাকে (২৫) যৌথভাবে আটক করে ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ এবং পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দা পুলিশ সিআইডি। মুসাকে জেরা করে ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সম্পৃক্ততার বিষয়টি জানতে পারেন এনআইএর গোয়েন্দারা।

এর পরই ঢাকায় জঙ্গি সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখতে আগস্টে মুসাকে জেরা করতে কলকাতায় আসে বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র‌্যাবের গোয়েন্দা দল। আইএসের সঙ্গে মুসার সম্পৃক্ততার বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখতে চলতি মাসের গোড়ার দিকে কলকাতায় আসে মার্কিন গোয়েন্দা এজেন্সি ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) প্রতিনিধি দল। এনআইএ সূত্রের খবর, আইএস জঙ্গি সদস্য ও গুলশান হামলার মূল হোতা আবু সুলেমান এবং ইন্ডিয়ান মুজাহিদীন সদস্য ও জেএমবি ফলোয়ার শফি আরমারের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততা ছিল মুসার। প্রধানত সোশ্যাল অ্যাপস ও টেলিগ্রামের মাধ্যমেই মুসা এদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত এবং কলকাতায় হামলার ছক নিয়ে আলোচনা করত বলে অভিযোগ। পাশাপাশি সিরিয়া, ইরাক ও বাংলাদেশে একাধিক জঙ্গি নেতার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল মুসার।

এদিকে হামলার পরিকল্পনার খবর জানার পরই কয়েক গুণ নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে মাদার হাউসের। হাউসের সামনে মোতায়েন করা হয়েছে কলকাতা পুলিশ, কমান্ডো বাহিনী, স্থানীয় থানার পুলিশকে। সাদা পোশাকে রয়েছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারাও।

সর্বশেষ খবর