বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

স্বামীর প্ররোচনায় নারীরা জঙ্গি

বিশেষ প্রতিনিধি

স্বামীর প্ররোচনায় নারীরা জঙ্গি

রাজধানীর দক্ষিণখানের আশকোনায় জঙ্গি আস্তানায় আত্মসমর্পণকারী দুই নারী স্বামীর প্ররোচনায় জঙ্গিবাদে এসেছেন। অপর নারী হতাশা থেকে হয়েছেন আত্মঘাতী। নারী জঙ্গিদের আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা ব্যতিক্রম। বিষয়টির অনুসন্ধান চলছে বলে জানিয়েছেন কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম। গতকাল বেলা সাড়ে ১২টায় রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় মনিরুল এ কথা বলেন। এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আশকোনার জঙ্গি আস্তানা থেকে গ্রেফতার দুই নারী রিমান্ডে আছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই দুই নারীর কাছ থেকে আশকোনার বাসায় কারা আসত, এমন কিছু ব্যক্তির সাংগঠনিক নাম পাওয়া গেছে। এদের গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে। আশকোনার জঙ্গি আস্তানায় অস্ত্র ও গ্রেনেড কেন মজুদ করা ছিল, তা জানার জন্য দুই নারী জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই বাসাটি মূলত অফিস-কাম-বাসা হিসেবে ব্যবহার করত জঙ্গিরা। জঙ্গি মুসা সাংগঠনিক কাজে সব সময়ই বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াত। তবে ওই বাসায় মাঝেমধ্যে আসত। আর নারী জঙ্গিরা নিজেদের ইচ্ছায় কেউ এ পথে এসেছেন বলে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে তারা অনেকেই স্বামীর প্ররোচনায় এ পথে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন। কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের শীর্ষ এই কর্মকর্তা বলেন, সূর্য ভিলায় জঙ্গি আস্তানায় আত্মঘাতী ওই নারী ছিলেন অনেক হতাশাগ্রস্ত। আগের স্বামী মারা যাওয়ার পর জঙ্গি সুমনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এরপর তিনিও জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েন। আর মূলত হতাশা থেকেই তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তানভীর কাদেরের স্ত্রী স্বামীর প্ররোচনায় জঙ্গিবাদে এসেছেন। এ ছাড়া জঙ্গি মারজানের স্ত্রী জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তাকেও তার স্বামী জঙ্গিবাদে আসতে বাধ্য করেছেন। নারীরা নিজের ইচ্ছায় নয়, বরং স্বামীর প্ররোচনা এবং আশ্রয় পেতেই জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছেন। তিনি জানান, এসব অস্ত্র কোথা থেকে এসেছে আর তাদের কী পরিকল্পনা ছিল, তা জঙ্গি মুসাকে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত বলা সম্ভব হবে না। তাদের আত্মঘাতী হামলা চালানোর পোশাক (সুইসাইডাল ভেস্ট) ও গ্রেনেডগুলো যেভাবে প্রস্তুত করা ছিল, তাতে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বড়দিন উপলক্ষে তাদের হামলার পরিকল্পনা ছিল। উল্লেখ্য, শুক্রবার রাত ১২টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের সিটিটিসি ইউনিট দক্ষিণখান থানার পূর্ব আশকোনার ৫০ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানে এক নারী ও এক কিশোর জঙ্গি নিহত হয়। পুলিশের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আত্মসমর্পণ করেন দুই নারী ও তাদের দুই সন্তান।

সর্বশেষ খবর