বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

আর্টিজানে নিহত পুলিশ পরিবারের পাশে প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

আর্টিজানে নিহত পুলিশ পরিবারের পাশে প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল তার কার্যালয়ে নিহত পুলিশের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অনুদানের চেক তুলে দেওয়ার সময় সান্ত্বনা দেন

গুলশানের হলি আর্টিজান ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলায় নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারকে আর্থিক অনুদান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দুই পৃথক হামলায় নিহত চার পুলিশ সদস্যের পরিবারের সদস্যদের হাতে মোট ৫০ লাখ টাকার চেক তুলে দেন তিনি। গতকাল সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চেক প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান, এ সময় প্রধানমন্ত্রী নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং তাদের সান্ত্বনা দেন। গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সিনিয়র সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট রবিউল করিম এবং বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সালাউদ্দিন খান চলতি বছর ১ জুলাই হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন। ৭ জুলাই শোলাকিয়া ঈদ জামাতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন কনস্টেবল জহুরুল হক ও কনস্টেবল আনসারুল হক। রবিউল করিমের মা করিমন নেছা, বাবা সাজেদুল ইসলাম, স্ত্রী উম্মে সালমা, সালাউদ্দিন খানের স্ত্রী বেগম রিম করিম, মেয়ে সামান্থা, ছেলে সেম রাইয়ান, কনস্টেবল আনসারুল হকের মা রাবেয়া আক্তার, স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগম এবং কনস্টেবল জহিরুল হকের মা জুবাইদা খাতুন চেক গ্রহণ করেন। চেক গ্রহণকালে নিহত পুলিশ পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। প্রধানমন্ত্রী তাদের সান্ত্বনা এবং ভবিষ্যতে তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। চেক প্রদান অনুষ্ঠানে নিহতদের পরিবারের ৯ সদস্যের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, স্বরাষ্ট্র সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম ও পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক উপস্থিত ছিলেন।

এসডিজি অর্জনে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ ও নরওয়ে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নরওয়ের সঙ্গে বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে এসডিজি বাস্তবায়নে দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। গতকাল নরওয়ের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত সিডসেল ব্লেকেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠক শেষে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তন এবং বাণিজ্য ও জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতে দুই দেশের মধ্যকার সহযোগিতা জোরদারের পন্থা নিয়ে আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে নরওয়ের বিনিয়োগকে স্বাগত জানাবে। নরওয়ে মৎস্য, ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, জাহাজ নির্মাণ খাতেও বিনিয়োগ করতে পারে। এ ছাড়া জ্বালানি খাত ও সমুদ্র ভূতাত্ত্বিক জরিপে সহযোগিতাকেও স্বাগত জানাবে বাংলাদেশ। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের বনায়ন, উপকূলীয় অঞ্চলে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা ও অন্যান্য কার্বন নিষ্ক্রিয়করণ প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে বলেন, তার দেশ নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচি শুরু করেছে এবং সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে পরিবেশ ইস্যুকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। নরওয়ের রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দৃষ্টিতে বাংলাদেশ খুবই আকর্ষণীয় একটি দেশ। তিনি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সহযোগিতা সম্প্রসারণে গুরুত্ব আরোপ করেন। মিজ ব্লেকেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করে বলেন, এটি বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য সুলক্ষণ। তিনি বলেন, ২০১২ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে নরওয়েতে বাংলাদেশের রপ্তানি ৬০ শতাংশ বেড়েছে। রাষ্ট্রদূত এমডিজি অর্জনে বাংলাদেশের প্রশংসা করে বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে দেশটি উৎসাহব্যঞ্জক সাফল্যের স্বাক্ষর রাখবে। নরওয়ে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে কাজ করতে আগ্রহী উল্লেখ করে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর