বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

এত জুলুমেও দল সচল সেটা কম কী : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

এত জুলুমেও দল সচল সেটা কম কী : ফখরুল

এক বছরের সফলতা ব্যর্থতার মূল্যায়ন করতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এত      জুলুম নির্যাতনের পরও দল সচল রয়েছে। নানা প্রতিকূল পরিবেশেও আমরা সম্মেলন করেছি। কেন্দ্রীয় কমিটি করেছি। জেলা কমিটি করছি। এটাই বা কম কীসের।’ গতকাল সন্ধ্যায় টেলিফোনে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে এক বছরে দলের কর্মকাণ্ডের মূল্যায়ন করতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। মির্জা আলমগীর বলেন, ‘যে দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মানুষের মৌলিক অধিকার নেই, সভা-সমাবেশ করার অধিকার নেই, সে দেশে স্বাভাবিক রাজনৈতিক পরিবেশের চিন্তা করাই ভুল। সংসদ নির্বাচনে ৫ ভাগ মানুষ ভোট দিচ্ছে না। ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করা হচ্ছে। বিএনপির মতো একটা জনপ্রিয় গণতান্ত্রিক দলকে বৈরী পরিস্থিতিতে রাজনীতি করতে হচ্ছে।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান থেকে শুরু করে কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের লাখ লাখ নেতা-কর্মীকে মামলার জালে আটকানো হচ্ছে। সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগে এসব মামলা হচ্ছে। হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে বন্দী করা হয়েছে। নেতাদের সাজা দেওয়া হচ্ছে। তারপরও বিএনপি টিকে আছে। এটা টিকে থাকবেও।’ বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘এত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কিছু কিছু ব্যর্থতা থাকাটাই স্বাভাবিক। যেখানে আমরা স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে পারি না, সভা-সম্মেলন করতে পারি না, সেখানে কিছু ব্যর্থতা থাকতেই পারে। এটা বড় কোনো ব্যর্থতা নয়। একটি ফ্যাসিস্ট শক্তির সঙ্গে গণতান্ত্রিক শক্তির সংগ্রাম অসম সংগ্রাম। সেখানে কিছু ব্যর্থতা থাকলে বড় করে দেখার সুযোগ নেই। আমাদের যেসব দুর্বল দিকগুলো গণমাধ্যমে আসছে, এটা মূলত ওই কারণেই।’ তিনি বলেন, ‘দেশে এখন সুষ্ঠু রাজনীতি চর্চার পরিবেশ নেই। যার কারণে বিএনপি গত কয়েক বছরে সুষ্ঠুভাবে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাতে পারেনি। এরপরও আমরা একটি কাউন্সিল করেছি। যে কাউন্সিলে ভেন্যুর জন্য দুই দিন আগে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আমাদের জেলাগুলোতে কাউন্সিল করতে গেলে ভেন্যু দেওয়া হচ্ছে না। জনসভা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এর মধ্যেও আমরা বিগত ১ মে জনসভা করেছি। নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিশাল জনসভা করেছি। কয়েকটি জেলায় কাউন্সিল করেছি। সুযোগ পেলে সব জেলায় কাউন্সিল করব।’ বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছি রাষ্ট্রপতির কাছে। আমরা এরইমধ্যে নারায়ণগঞ্জসহ সব স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চালু রাখতে যতটুকু চেষ্টা দরকার আমরা তা করছি। এটা আমাদের এক বছরের অর্জন। এত কিছুর মধ্যেও আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর গুম, খুন জুলুম-নির্যাতনের পরও দলকে সচল রাখার চেষ্টা করছি। এত নির্যাতনের পরও আমাদের কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত দলের কোনো নেতা দল ত্যাগ করেনি।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি গণতান্ত্রিক দল। দেশ ও মানুষের রাজনীতি করে। জনগণের সঙ্গে অতীতেও ছিল। ভবিষ্যতেও থাকবে। সবার কাছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বিএনপি আন্দোলন করে আসছে। এখনো আমরা দাবি থেকে সরিনি। আমরা আশা করব, রাষ্ট্রপতি সব দলের সঙ্গে কথা বলে একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। এরপর একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করে খুব শিগগিরই একটি জাতীয় নির্বাচনের উদ্যোগ নেবেন।’

সর্বশেষ খবর