বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

থার্টিফার্স্ট নাইটেও নাশকতার ছক ছিল জঙ্গিদের

আত্মঘাতী জঙ্গির নাম শাকিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট (সিটি)। এরা হলেন রিয়াজ ওরফে ইঞ্জিনিয়ার ওরফে রাকিব, আবু বিন সাঈম ওরফে বাপ্পি ওরফে অপু, কাজী আবদুল্লাহ আল ওসমান ওরফে আহসান, সোহাগ ওরফে চেয়ারম্যান ও মামুন ওরফে হিমেল। তাদের কাছ থেকে ৩০ কেজি তরল ও পাউডারজাতীয় বিস্ফোরক পদার্থ, বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি এবং বই উদ্ধার করা হয়। সিটি বলছে, গ্রেফতার ব্যক্তিরা থার্টিফার্স্ট নাইটে নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল।

গতকাল দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে সিটির প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর দারুস সালাম এলাকা থেকে জেএমবির ওই পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। সংগঠনের রাজশাহী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত জিয়া, হায়দার ও শহিদুল্লাহর নির্দেশনা ও পরামর্শ অনুযায়ী তারা কাজ করছিল। থার্টিফার্স্ট নাইটে নাশকতার পরিকল্পনা অনুযায়ী বিস্ফোরক দ্রব্য ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করেছিল তারা। মনিরুল ইসলাম বলেন, রাজধানীর আশকোনার ‘সূর্য ভিলা’র জঙ্গি আস্তানায় আত্মঘাতী বোমায় নিহত শাকিরার বাড়ি ভোলায়। অক্টোবরে তেজগাঁও এলাকা থেকে তার স্বামী জেএমবির সদস্য রাশেদুর রহমান ওরফে সুমনকে গ্রেফতার করা হয়। সুমন গ্রেফতার হওয়ার পরই শাকিরা নব্য জেএমবিতে যোগ দেন। সুমনকে গ্রেফতারের পর জেএমবির অর্থ সংগ্রহের পদ্ধতি ও তাদের বেশ কিছু সদস্যের অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। সুমনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়েই জেএমবির পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিটিপ্রধান বলেন, ডাকাতি ও ছিনতাই হলো তাদের অর্থ সংগ্রহের মূল উৎস। এসব অর্থ তারা বোমা ও ককটেল তৈরিসহ সংগঠনের কাজে ব্যয় করে। গ্রেফতার রিয়াজ কিছুদিন আগে ভারতে গিয়েছিলেন। সেখানে জঙ্গিনেতা সালেহউদ্দিন সালেহিনের সঙ্গে দেখা করে জঙ্গি কার্যক্রম সম্পর্কে দীক্ষা নেন। নিজেকে বাঁচানোর জন্যই শীর্ষ পর্যায়ের জঙ্গি মারজান আত্মগোপনে আছেন। মারজান ছাড়া আরও বেশ কয়েকজন শীর্ষ পর্যায়ের জঙ্গিকে এখনো গ্রেফতার করা যায়নি। তারা আত্মগোপনে আছে। নিচের সারির কেউ কেউ তাদের তত্পরতা প্রকাশের মাধ্যমে নেতা হওয়ার চেষ্টা করছে। প্রতিটি গ্রেফতার অভিযানের পর নতুন নতুন নাম পাওয়া যাচ্ছে। জঙ্গিদের পুরোপুরি ধ্বংস করতে সময় লাগবে। মনিরুল ইসলাম জানান, আশকোনার জঙ্গি আস্তানা থেকে উদ্ধার হওয়া ১৯টি তাজা গ্রেনেড হাতে তৈরি করা হয়েছিল। এসবের কিছু গ্রেনেড ছিল বেশ শক্তিশালী। সুইসাইডাল ভেস্ট ছিল জঙ্গিদের নতুন প্রযুক্তি। আত্মঘাতী নারীটি সুইসাইডাল ভেস্টে যেসব গ্রেনেড রেখেছিলেন, এসবের কিছু বিস্ফোরণ ঘটেছে। কিছু বিস্ফোরিত হয়নি। জঙ্গি কার্যক্রমের জন্য আত্মসমর্পণকারী তৃষার অনুতাপ থাকলেও শিলার কোনো অনুতাপ নেই। শিলার বদ্ধমূল ধারণা, জঙ্গি কার্যক্রমের মাধ্যমে বেহেশতে যাওয়া যাবে।

সর্বশেষ খবর