বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার

বিশ্বের অভিজাত সুগন্ধি ব্র্যান্ড আল্ হারামাইন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্বের অভিজাত সুগন্ধি ব্র্যান্ড আল্ হারামাইন

মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান

নারী-পুরুষের রুচি ও চাহিদার কথা মাথায় রেখে ভিন্ন ভিন্ন ঘ্রাণের সুগন্ধি প্রস্তুত করে বিশ্ব জয় করেছে বাংলাদেশের একটি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বাজারে বেশ সুনামের সঙ্গে অভিজাত ব্র্যান্ডের আতর বাজারজাত করছে, যা সেখানকার ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও উচ্চ শ্রেণির ক্রেতাদের শৌখিন জীবনযাপনের অত্যাবশ্যকীয় প্রসাধনীতে পরিণত হয়েছে। তবে সব ধরনের ক্রেতার কথা মাথায় রেখে আতরের পাশাপাশি সুগন্ধিসহ নানা ধরনের প্রসাধনী প্রস্তুত করছে প্রতিষ্ঠানটি। বিশ্ব মাতিয়ে সম্প্রতি দেশের বাজারেও নজর দিয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটি। এরই মধ্যে ঢাকায় তিনটি আউটলেট খুলেছে আল্ হারামাইন পারফিউমস্। মন মাতানো ঘ্রাণ ও বাহারি মোড়কে ক্রেতাদের হাতে তুলে দিচ্ছে মোহনীয় এই সুগন্ধি।

অবাক করা বিষয় হলো এই সুগন্ধি বিক্রি করেই আল্ হারামাইন পারফিউমস্ গ্রুপ অব কোম্পানিজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান আজ প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে সবচেয়ে সম্পদশালী ব্যক্তি। পরপর চারবার বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব বা সিআইপি হিসেবে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ভূষিত হয়েছেন আল্ হারামাইন পারফিউমস্ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান। সবচেয়ে বেশি বিদেশি মুদ্রা দেশে এনে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গত তিনবার রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন তিনি।

উন্নত ফর্মুলা ও সুদৃশ্য মোড়ক বা প্যাকেজিং এবং আধুনিক বিপণন ব্যবস্থা ও অভিনব সুগন্ধি প্রস্তুতের পাশাপাশি বর্তমানে গ্রুপটি দেশের স্বাস্থ্য খাত ও চা বাগান ব্যবসায় যুক্ত হয়েছে। প্রবাসী উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠিত এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যানও এখন মাহতাবুর রহমান।

বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের প্রস্তুতকৃত এই সুগন্ধি এখন বিশ্বের ৬৫টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে ১০০টি নিজস্ব শোরুম রয়েছে আল্ হারামাইনের। বিশ্বখ্যাত এই সুগন্ধি উৎপাদিত হচ্ছে দুবাইয়ের কারখানায়। কারখানাটির আয়তন ১৬ হাজার ২১৫ বর্গমিটার। ৩ হাজার জন শ্রমিক কাজ করছে কারখানাটিতে। যার বেশির ভাগই বাংলাদেশি ও ভারতীয়।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বিশ্ববাজারে অবস্থান করে নেওয়া বাংলাদেশি উদ্যোক্তা মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান তার সাফল্যের কাহিনী তুলে ধরেন। কীভাবে এই ব্যবসায় এলেন জানতে চাইলে মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান বলেন, ‘শুরুটা হয়েছিল আমার বাবার হাত ধরে। আমার বাবার নাম মওলানা কাজী আবদুল হক। আমাদের গ্রামের বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজারের নাটেশ্বর গ্রামে। সিলেটের সুজানগরে আগর কাঠ হতো। ওই আগর কাঠ দিয়ে অনেক সুন্দর আতর হতো। কিন্তু বাংলাদেশে ওই আগর কাঠের বাজার ছিল না। ভারতসহ আশপাশের দেশগুলোতে আগর কাঠের বাজার ছিল। ১৯৫৬ সালে আমার বাবা যখন প্রথমবারের মতো সৌদি আরবে যান হজ করতে, তখন তিনি সঙ্গে করে বেশ কিছু আগর কাঠ নিয়ে গিয়েছিলেন। সৌদি আরবের বাংলাদেশিদের কাছে আগরের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকায় আমার বাবা সেখানে সুগন্ধির ব্যবসা শুরুর পরিকল্পনা করেন। ১৯৭০ সালে তিনি পবিত্র মক্কা নগরী থেকে সুগন্ধির ব্যবসা শুরু করেন। আমি ১৯৭৫ সালে প্রথম বাবার সঙ্গে সৌদি আরবে যাই। তখন আমি কেবল উচ্চমাধ্যমিক পাস করে বিএ পরীক্ষা দিয়েছি।’

এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি মাহতাবুর রহমানকে। খুবই অল্প সময়ে সুগন্ধির ব্যবসায় দক্ষতা অর্জন করেন তিনি। সংযুক্ত আরব আমিরাতে (দুবাই) তিনি প্রথম শোরুম খোলেন ১৯৮১ সালে। পরবর্তীতে ব্যবসা পরিচালনার সুবিধার্থে দুবাইয়ে ১১ হাজার বর্গফুট জায়গার ওপর সুসজ্জিত প্রধান কার্যালয় স্থাপন করেন। ১৬ হাজার ২১৫ বর্গমিটারের জায়গার ওপর কারখানা স্থাপন করেন। কারখানাটিতে সর্বাধুনিক মানের সুগন্ধি প্রস্তুত করতে পূর্ণাঙ্গ ও সেমি অটোমেটিক অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করছেন। উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করে নিত্যনতুন সুগন্ধি তৈরির জন্য গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ খুলেছেন। পরবর্তীতে মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশে এই ব্যবসা সম্প্রসারণ করেন মাহতাবুর রহমান।

আইএসও সনদপ্রাপ্ত এই সুগন্ধি বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। মাহতাবুর রহমান বলেন, ‘গত বছর আমরা ৩ হাজার ৬০০ কনটেইনার পণ্য রপ্তানি করেছি। এত বড় ব্যবসা পরিচালনার জন্য আমরা কখনো দেশে-বিদেশের কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেইনি এবং ভবিষ্যতে ঋণ নেওয়ার ইচ্ছাও নেই।’

তিনি বলেন, আমরা বর্তমানে ছয় ভাই এই ব্যবসা দেখাশোনা করছি। ভাইদের মধ্যে আমি দ্বিতীয় ও বোনদের মধ্যে চতুর্থ। এখন আমার ছেলে ও ভাতিজারা এই ব্যবসায় যুক্ত রয়েছে। এটা পুরোপুরি আমাদের পারিবারিক ব্যবসা। বিদেশে ব্যবসা করতে হলে সেখানকার স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হয় বলে নামকাওয়াস্তে কয়েকজন বিদেশিকে এই ব্যবসায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু তারা এখান থেকে কোনো মুনাফা নেন না। মুনাফা পুরোপুরি আমাদেরই থাকে।

বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের জন্য আলাদা অর্থনৈতিক অঞ্চলের একটি দাবি তিনি জানিয়েছিলেন গত রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে। সে বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে মাহতাবুর রহমান বলেন, রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে আমি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সাহেবের কাছে প্রবাসী উদ্যোক্তাদের পণ্য উৎপাদন ও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাজারজাত করার সুবিধার্থে আলাদা একটি ইপিজেড তৈরির দাবি করেছিলাম। কেননা সরকার ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার মধ্যে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল থাকতে পারে প্রবাসী উদ্যোক্তাদের জন্য।

বিদেশি ক্রেতাদের মন জুগিয়ে দেশের বাজারেও এখন নজর দিয়েছে আল্ হারামাইন পারফিউমস্ গ্রুপ অব কোম্পানিজ। ঢাকায় যমুনা ফিউচার পার্ক ও বসুন্ধরা শপিং মলে সুদৃশ্য তিনটি আউটলেট খুলেছে এই সুগন্ধি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে গ্রুপটির বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ডের সুগন্ধি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে জনপ্রিয় ব্র্যান্ডগুলো হলো আল্ হারামাইন, উদ আল হালাল ও আরঅ্যান্ডআর।

ইউরোপের বাজারে প্রবেশ করতে গিয়ে কিছুটা হোঁচট খেতে হয়েছিল এই সুগন্ধি ব্যবসায়ীকে। এ কারণে ইউরোপের বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন ব্র্যান্ডিংয়ে যেতে হয়েছে আল্ হারামাইনকে। এ বিষয়ে মাহতাবুর রহমান বলেন, আমরা যখন ইউরোপের বাজারে এই আতর বাজারজাত শুরু করি তখন সেখানকার ক্রেতারা মনে করতে লাগল এটা কোনো ধর্মীয় বা আরবীয় পণ্য। যে কারণে আমরা আরঅ্যান্ডআর নামে ভিন্ন একটি কোম্পানি করে এই সুগন্ধি বাজারজাত শুরু করি। এ জন্য আমরা ফ্রান্সে একটি কারখানা করি। সেখান থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আরঅ্যান্ডআর ব্র্যান্ডের সুগন্ধি রপ্তানি করা হচ্ছে।

মাহতাবুর রহমান বলেন, আমাদের আল্ হারামাইন কোম্পানিটি মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক কোম্পানি। উৎপাদন হয় দুবাইতে। কিন্তু এর কাঁচামাল আসে মূলত কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, লাউস ও থাইল্যান্ড থেকে। এগুলোর ফাইনাল প্রসেসিং হয় দুবাইতে। দুবাইতে আমাদের ৩ হাজার কর্মী কাজ করে কারখানা, অফিস ও শোরুম মিলিয়ে। মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের আল্ হারামাইন ব্র্যান্ডের ১০০টি নিজস্ব শোরুম আছে। এ ছাড়াও আমরা সৌদি আরবসহ কয়েকটি দেশের বড় বড় কোম্পানির সঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চার করেছি। আমরা সুগন্ধি প্রস্তুত করি। ওই কোম্পানিগুলো সেই সুগন্ধি বিক্রি করে। এরকম শোরুম রয়েছে ৩৮০টির মতো।

নিজ দেশের বাইরে ব্যবসা করে সফল এই উদ্যোক্তা বাংলাদেশের আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন। পরে প্রবাসী উদ্যোক্তাদের এনআরবি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান হন মাহতাবুর রহমান। বর্তমানে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সুগন্ধির ব্যবসার পাশাপাশি বর্তমানে দেশের স্বাস্থ্য ও চা বাগানের ব্যবসায় যুক্ত হয়েছেন মাহতাবুর রহমান। তিনি বলেন, সিলেটে আল্ হারামাইন টি-গার্ডেন নামে আমাদের একটি চা বাগান আছে। আর একটি হাসপাতাল করছি অত্যন্ত আধুনিক হাসপাতাল, ২৫০ শয্যার। এর মেডিকেল ইকুইপমেন্টগুলোও আনা হচ্ছে বিদেশ থেকে। ইতিমধ্যে হাসপাতালের জন্য ভবন নির্মাণ প্রায় শেষ হয়েছে। খুব শিগগিরই এই হাসপাতাল আমরা চালু করতে পারব বলে আশা করছি। এত কিছুর পরও একটি অনলাইন পত্রিকার বিভ্রান্তিকর সংবাদ আমাকে খুবই দুঃখিত ও ব্যথিত করেছে। তারা বলেছে, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ (বিডি) লিমিটেডের ঋণ খেলাপির দায়ে আমার বাড়ি নাকি নিলামে উঠবে। কিন্তু ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের সঙ্গে আমি যুক্ত হই ২০০৯ সালে। ২০১৪ সালে আমি ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ থেকে বের হয়ে আসি। আমার পদত্যাগপত্র আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের পর্ষদ সভায়ও আমার পদত্যাগের বিষয়টি অনুমোদিত হয়েছে ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫। এ ছাড়াও রেজিস্টার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের (আরজেএসসি) তালিকা থেকেও আমাকে অবসর দেখিয়ে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। আরজেএসসি থেকে যখন একজনের নাম বাদ দেওয়া হয় তখন ওই কোম্পানিতে ওই ব্যক্তির কোনো দায় থাকে না। এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহাও তার বক্তব্যে বলেছেন, মাহতাবুর রহমানের নাম এখানে নেই। তবুও আমাকে নিয়ে এ ধরনের একটি বিভ্রান্তিকর সংবাদ পরিবেশন করায় আমি খুবই দুঃখ পেয়েছি।

বাংলাদেশের ব্যাংক ব্যবসায় যুক্ত হওয়ার বিষয়ে এই উদ্যোক্তা বলেন, প্রবাসীদের একটি ব্যাংক দেওয়ার জন্য দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল। অবশেষে প্রবাসীদের ব্যাংক দিয়েছেন এ জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমি ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু প্রবাসীদের ব্যাংক দেওয়ার যে উদ্দেশ্য ছিল— প্রবাসীদের রেমিট্যান্স আনা, প্রবাসীদের উৎসাহিত করা, সেই কাজগুলো এখনো পুরোপুরি হচ্ছে না। আমরা চেষ্টা করছি প্রবাসীদের বিনিয়োগ যাতে আরও বেশি আসে। তারা যেন আমাদের ব্যাংকের মাধ্যমে বেশি বেশি বিনিয়োগ করতে পারেন। আপনারা জানেন বিদেশি ব্যাংকের সুদ অনেক কম। বাংলাদেশে তারা বিনিয়োগ করলে বেশি মুনাফা পাবে। তাছাড়া বাংলাদেশ সরকারের ঘোষিত ১০০ ইপিজেডের মধ্যে একটি ইপিজেড প্রবাসীদের জন্য দেওয়া হলে তাদের বিনিয়োগ আরও বাড়বে। মধ্যপ্রাচ্যে বসবাসরত বাংলাদেশিদের কিন্তু সেখানে নাগরিকত্ব পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই দেখবেন সেখানে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকরাই বেশির ভাগ রেমিট্যান্স পাঠান। যাদের বয়স বেড়েছে এবং ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে তারা বাংলাদেশে ফিরে আসবেন। তারাই বেশি টাকা আনছেন। কিন্তু ইউরোপ-আমেরিকার প্রবাসীরা তুলনামূলক কম টাকা পাঠান। তারা ওই দেশেই বেশি বিনিয়োগ করেন। আমাদের দেশের মতো দেশে বিদেশি বিনিয়োগ অত্যন্ত প্রয়োজন। সরকারকে মনে রাখতে হবে, বিদেশি কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করতে এলে তারা কিন্তু তাদের বিনিয়োগ ও মুনাফা দুটোই ফেরত নিয়ে যায়। কিন্তু প্রবাসীরা দেশে বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগ ও মুনাফা পুনরায় দেশেই বিনিয়োগ করে থাকে।

নতুন করে যেসব প্রবাসী বিদেশে বিনিয়োগ করতে চান তাদের উদ্দেশে মাহতাবুর রহমান বলেন, ‘আমি দুবাইতে বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। আমরা সবসময় বিদেশিদের আহ্বান জানাই আমাদের দেশে আসার জন্য। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সঙ্গে আমাদের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা রয়েছে। এর আওতায় আমরা যেসব বিদেশি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী তাদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকি। কিন্তু আমরা সরকারের কাছে বারবার আহ্বান করছি যাতে বিদেশিদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার প্রক্রিয়াটি ওয়ানস্টপ সার্ভিস করা হয়। না হলে তাদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। যে কারণে অনেক বিদেশি ব্যবসায়ী বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখালেও শেষ পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারেন না। এখনো কিন্তু বাংলাদেশের শ্রমিকদের মজুরি অনেক কম। তাছাড়া গ্যাস-বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থাও অনেক উন্নত। এখনো অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী আছেন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চান।

আর বাংলাদেশের যেসব উদ্যোক্তা বিদেশে বিনিয়োগ করতে চান তাদের উদ্দেশে মাহতাবুর রহমান বলেন, এখন আফ্রিকান দেশগুলোতে বিনিয়োগের কিছু সুযোগ আছে। সেখানে কৃষি খাতে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। সেখানকার কৃষি জমি অনেক উর্বর। সেখানে অনেক কাষ্ঠল বৃক্ষ রয়েছে যা প্রসেস করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে অনেক লাভবান হওয়া যাবে বলে আমি মনে করি।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে মাহতাবুর রহমান বলেন, আমরা তো আলহামদুলিল্লাহ সুগন্ধির ব্যবসা করি, মধ্যপ্রাচ্যের যে কোনো স্থানে আল্ হারামাইনের নাম জানতে চাইলে সবাই একবাক্যে বলতে পারবে। আমরা বর্তমানে দেশের দিকে অগ্রসর হচ্ছি। এর পাশাপাশি দেশের চিকিৎসা খাতে আমরা যুক্ত হচ্ছি। অনেক বড় একটি উন্নত স্বাস্থ্যসেবাসম্পন্ন হাসপাতাল করছি। পাশাপাশি চা উৎপাদনেও রয়েছি।

সর্বশেষ খবর