শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
সালতামামি ২০১৬ রাজনীতি

প্রতিকূলতা থাকলেও প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে

----------ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রতিকূলতা থাকলেও প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে

বিগত এক বছর প্রতিকূলতা থাকলেও প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, গুলশানের হলি আর্টিজান ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলা ছিল আমাদের জন্য একটি প্রতিকূল পরিবেশ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে তা মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে।

গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। বিগত এক বছর রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের কেমন কাটল সেসব মূল্যায়ন করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশব্যাপী জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী গণজোয়ার সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। এই প্রথম প্রত্যেকটি সাংগঠনিক জেলা সম্মেলন শেষে দলের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন ব্লাডের সঞ্চার হয়েছে। সবকিছু মিলে কিছুটা প্রতিকূল পরিবেশ থাকলেও প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তি ছিল সমানে সমান। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বছর শুরুতেই আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাই। এর মধ্যেই চলতে থাকে অসম্পন্ন জেলাগুলো সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব বের করে আনা। ৫ ধাপে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও অধিকাংশ আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি-শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি দেশের মানুষ আস্থাশীল। তিনি বলেন, চলতি বছর আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতিশীলতা ফিরেছে। সারা দেশের সাংগঠনিক সফরের পাশাপাশি জেলা সম্মেলন করার সময় নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বিরোধপূর্ণ জেলায় সফর করেছেন। তারা নেতায় নেতায় দ্বন্দ্ব, এমপি-মন্ত্রীদের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের দূরত্ব কমিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। আগে যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন তৃণমূল আওয়ামী লীগ অনেক বেশি শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এবার কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে তৃণমূল থেকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের দিয়ে একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়। আমরা নতুন নেতৃত্ব আসার পর সাংগঠনিক সফর শুরু করি। কিন্তু দলের অধিকাংশ নেতাই এমপি-মন্ত্রী হওয়ায় জেলা পরিষদ নির্বাচনের কারণেই ডিসেম্বরে কোথায়ও যেতে পারিনি। তবে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের তিনটি জেলায় সফর করি। এ ছাড়াও যেখানেই অভ্যন্তরীণ কোন্দল, সেখানেই কেন্দ্রীয় নেতারা ছুটে গেছেন। অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে আওয়ামী লীগ এখন অনেক বেশি শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ। তিনি বলেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধের কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ করা হয়। যেগুলোর ভিসিসহ প্রশাসনের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। মাথাব্যথার কারণে মাথা কেটে ফেলার পক্ষে আমরা নই। ক্যাম্পাসগুলো খুলে দিতে শিক্ষামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলেছি এবং এটা বাস্তবায়ন হয়েছে। এ ছাড়া ছাত্রলীগের শক্তিশালী সাংগঠনিক ইউনিট ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলগুলোতে কমিটি ছিল না। সেগুলোতে কমিটি দেওয়া হয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের শত্রু বিএনপি নয়। আমাদের অভিন্ন শত্রু দরিদ্রতা ও জঙ্গিবাদ। দরিদ্রতা দূর করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমরা দেশব্যাপী একটা গণজোয়ার সৃষ্টি করতে  পারলেও এতে আত্মতৃপ্তির কিছুই নেই। কারণ প্রকাশ্যে জঙ্গিরা না থাকলেও ভিতরে ভিতরে তারা সক্রিয়। জঙ্গিবাদকে চিরতরে নির্মূল করতে আমাদের দলের সবশ্রেণির নেতা-কর্মী এবং দেশবাসীর সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য। তিনি বলেন, ২০১৬ সালে আমাদের যা কিছু ভালো ছিল-সেগুলো নেব এবং যেসব ভুলত্রুটি ছিল সেগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীতে নতুন উদ্যমে যাত্রা শুরু করব। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল একটি সুসংগঠিত দলে পরিণত করে আগামী নির্বাচনে আবার আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটের মাধ্যমে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসব।

সর্বশেষ খবর