সোমবার, ২ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

গ্রামীণ ব্যাংককে নতুন ভূমিকায় চান মুহিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। এজন্য ব্যাংকটিকে ঢেলে সাজানো হবে। তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পেছনে মূলত দুটি উদ্দেশ্য ছিল—একটি হচ্ছে গরিব মানুষকে ঋণ দেওয়া। আরেকটি তাদের মধ্যে ঋণ ফেরতের অভ্যাস গড়ে  তোলা। দুটি উদ্দেশ্যই সফল হয়েছে। ফলে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য শতভাগ সফল হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। গতকাল সচিবালয়ে নিজ দফতরে অর্থবিভাগ এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, এখন মানুষ ঋণ নেয় এবং তা ফেরতও দেয়। তাই গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালনার ক্ষেত্রে নতুন করে ভূমিকা সৃষ্টি করতে চাই। সরকার গ্রামীণ ব্যাংককে পুনরুজ্জীবিত করে ব্যাংকিং সিস্টেমের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে চায়। এ লক্ষ্যে গ্রামীণ ব্যাংকের নামে চলা মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তিতে উদ্যোগ নেওয়া হবে। আমি যখন অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিই তখন গ্রামীণ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ৪০ শতাংশ। এখন ৯ শতাংশে নেমে এসেছে, যা সহনীয়। এ সময় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ? সময় মন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। পরে নতুন বছর উদযাপন উপলক্ষে দুটি কেক কাটেন অর্থমন্ত্রী। একই অনুষ্ঠানে অর্থ বিভাগ এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল আলমের নেতৃত্বে সমিতির একটি প্রতিনিধি দল অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এদিকে, দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বই বিতরণ উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন তিনি। অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী তার নিজের শৈশব জীবনের অম্ল মধুর স্মৃতিমন্থন করেন। তিনি বলেন, আমিও রাত থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছি। ভাবছি, এমন একটা আসরে যাব, যে আসরটা আমাদের সময়ে কখনো হতো না। এ রকম নতুন বই আমরা সব সময় পেতাম না। অনেক সময় পুরনো বই দিয়ে ক্লাস করতে হতো। আজকের দিনে আমার খুব আনন্দ, তোমাদের হাতে এই বইগুলো যাবে, তোমরা অত্যন্ত খুশি হবে, নতুন বইয়ের গন্ধ শুঁকবে এবং সেখানে মোটা মোটা হরফে নাম লিখে দিবে। যথাসময়ে যখন তোমাদের পড়াশোনা শেষ হয়ে যাবে, তখন বইটিকে বিসর্জন করে দেবে। সেখানেও আনন্দ আছে। হ্যাঁ... আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি, বইটা পড়েছি, জ্ঞান আহরণ করেছি, শিক্ষিত হয়েছি। তিনি বলেন, তোমাদের হাতে বই তুলে দেওয়ার উদ্দেশ্যটা হচ্ছে, আমাকে জ্ঞান আহরণ করতে হবে, শিক্ষাদীক্ষা করতে হবে, মানুষ হয়ে গড়ে উঠতে হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের যারা কর দেন, তাদের টাকা-পয়সা আমরা এখানে খরচ করি। আমাদের জনগণও কখনো শিক্ষার ব্যাপারে আপত্তি করে না। কারণ তাদের সন্তানরা তাদের ভবিষ্যৎ গড়ে ওঠে। উৎসবে আসা কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়, হৈ-হুল্লোড়ে আর পতাকা উড়িয়ে তারা মাতিয়ে রাখে মাঠ। ছিল শিশুদের নাচ-গান আর সিসিমপুরের পরিবেশনা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন।

সর্বশেষ খবর