সোমবার, ২ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

তুরস্কে থার্টিফার্স্টে হামলা, নিহত ৩৯

প্রতিদিন ডেস্ক

নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে শনিবার রাত জেগেছিল গোটাবিশ্ব। রাত ১২টা ১ মিনিটে নববর্ষের উৎসবে মাতোয়ারা সব দেশ। এশিয়া ও ইউরোপের দেশ তুরস্কের বড় শহর ইস্তাম্বুলও ছিল মাতোয়ারা সেই ক্ষণ উদযাপনে। সেই শহরের রেইনা নাইট ক্লাবের দৃশ্যটাও একই। রাত যতই গভীর হতে থাকে ভিড়ও বাড়তে থাকে রাস্তাঘাট, দোকানপাট, নাইট ক্লাবে।

 স্থানীয় সময় রাত যখন ১টা তখনই সান্তার পোশাকে দুই ব্যক্তি ওই নাইট ক্লাবে ঢোকে। কিন্তু এই নকল সান্তা খুশির বদলে নিয়ে আসে মৃত্যুর বার্তা। নববর্ষের রাতের উৎসব মুহূর্তে মিলিয়ে যায় কান্নায়। বন্দুকবাজের এলোপাতাড়ি গুলি ছিনিয়ে নিল অন্তত ৩৯ জনের প্রাণ। যার মধ্যে কমপক্ষে ১৫ জন বিদেশি। এদের মধ্যে দুজন ভারতীয়। এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৬৯ জন। দুই ভারতীয় নিহত হওয়ার বিষয়টি টুইটারে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। তিনি বলেন, ‘তুরস্ক থেকে ভীষণ খারাপ খবর এসেছে। ইস্তাম্বুল হামলায় দুজন ভারতীয় মারা গেছেন।’ ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন ইস্তাম্বুুলে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত। মৃত দুই ভারতীয়ের নামও জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তারা হলেন— রাজ্যসভার সাবেক সাংসদের পুত্র আবিজ রিজভি এবং আরেকজন হলেন গুজরাটের বাসিন্দা খুশি শাহ। ইস্তাম্বুুলের গভর্নর ভ্যাসিপ শাহিন জানান, বন্দুকধারীর গুলিতে কমপক্ষে ৩৯ জন নিহত হয়েছেন।

 তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমান সয়লু আরও জানিয়েছেন, হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৬৯ জন। এদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হামলাকারীদের খুঁজে বের করতে অভিযান শুরুর কথাও জানিয়েছেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সান্তার পোশাকে থাকা দুই ব্যক্তিই হামলাকারী ছিল। তবে দুজনের হাতেই বন্দুক ছিল কিনা তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আততায়ীদের খোঁজ চলছে। ইস্তাম্বুলের ইউরোপের দিকে বসফরাসের পাশেই অবস্থিত নাইট ক্লাবটি। নববর্ষ উদযাপনে প্রায় ৭০০ লোক নাইট ক্লাবে উপস্থিত ছিলেন। এ দুজন সেখানে ঢুকে মজা করাও শুরু করে। প্রায় ৩০ মিনিট এভাবে কাটানোর পর আচমকাই বন্দুক বের করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে তারা। মুহূর্তে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে বহু লোক। অনেকেই আবার প্রাণ বাঁচাতে ক্লাবের পাশে বসফরাসের পানিতে ঝাঁপ  দেন।

হামলার খবর পেয়ে পুলিশ যতক্ষণে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, ততক্ষণে ক্লাব ছেড়ে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। এর আগেও একাধিকবার সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে তুরস্কে। গত বছরের ডিসেম্বরে একটি ফুটবল ম্যাচ চলাকালীন পরপর দুবার  বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ৪৪ জনের। চলতি বছরের জুন মাসে ইস্তাম্বুলের আতাতুর্ক বিমানবন্দরে আত্মঘাতী হামলায় মৃত্যু হয় ৪৭ জনের। এএফপি, বিবিসি

সর্বশেষ খবর