বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
আওয়ামী লীগ বিএনপির পাল্টাপাল্টি

নেতা-কর্মীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে বার্তা বিএনপির

আজ সেই ৫ জানুয়ারি

মাহমুদ আজহার

নেতা-কর্মীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে বার্তা বিএনপির

আজ আলোচিত ৫ জানুয়ারি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তৃতীয় বর্ষ। বিএনপি এ দিনকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করছে। দিবসটি উপলক্ষে সারা দেশের জেলা ও মহানগরে কালো পতাকা মিছিল ও কালো ব্যাজ ধারণ করবে দলটি। সরকারি দলের হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে জেলা ও মহানগরগুলোতে এ কর্মসূচি পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয় কেন্দ্র থেকে। তবে এ কর্মসূচি ‘শান্তিপূর্ণভাবে’ পালন করতে বলা হয়েছে। কোনো সংঘাতপূর্ণ কর্মকাণ্ডে না জড়িয়ে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করতে বলা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে ঢাকায় বিকালে শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে দলটি। এতে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া যোগ দেবেন। আজ খালেদা জিয়ার বিশেষ আদালতে হাজিরা দেওয়ার দিন ধার্য রয়েছে। এ কারণেই রাজধানীর কর্মসূচি দুই দিন পেছানো হয়। সমাবেশ সফল করতে এ নিয়ে আজ বিকাল ৩টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভা ডাকা হয়েছে। তবে গতকাল পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশ করতে পুলিশি অনুমতি পায়নি বিএনপি। এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচি হবে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ। আশা করি, সরকার তাতে বাধা দেবে না। দেশে আজ বিরোধী দলকে সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হয় না। মানুষ ন্যায় বিচার পাচ্ছে না। পদে পদে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। ৫ জানুয়ারি একটি কালো দিবস। তাই আমরা গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন করছি।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা সংঘাত চাই না, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করব। এখন সরকার যদি গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে আসে, সেটা ভিন্ন কথা। আওয়ামী লীগ বিজয় দিবস পালন করুক, আমাদের আপত্তি নেই। আমরা এ দিন গণতন্ত্রের হত্যা দিবস হিসেবে পালন করব।’ জানা যায়, কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে আপাতত কোনো সংঘাতে জড়াবে না বিএনপি। এ কারণেই কৌশলগত ভাবে রাজধানীতে আজ কোনো কর্মসূচি রাখা হয়নি। বিএনপি আশা করছে, তাদের শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার অনুমতি দেবে সরকার। শেষ পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে না দিয়ে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে হলেও সমাবেশ করতে চায় দলটি। বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, বিএনপি আরও অন্তত তিন-চার মাস কোনো সংঘাতপূর্ণ কর্মসূচিতে যাবে না। এর মধ্যে দলকে পূর্ণাঙ্গভাবে গুছিয়ে তোলা হবে। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সংলাপ কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলেও মনে করে বিএনপি। নির্বাচন কালীন সহায়ক সরকার নিয়েও দলের প্রধান বেগম জিয়া শিগগিরই প্রস্তাবনা তুলে ধরবেন। রাষ্ট্রপতি বা সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক কোনো সাড়া না পেলে পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশন গঠন ও নির্বাচনকালীন সরকার নিয়েই রাজপথে নামার চিন্তাভাবনা দলটির। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এ দিনে মানুষের স্বাধীনভাবে ভোট প্রদানের অধিকার ও ইচ্ছাকে ধ্বংস করা হয়েছে। বিএনপি মানুষের হারানো অধিকার ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য নিরন্তর আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এ জন্যই আজ সারা দেশে জেলা ও মহানগরে শান্তিপূর্ণভাবে কালো পতাকা মিছিল ও কালো ব্যাজ ধারণ করতে নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপিসহ অধিকাংশ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ টানা দ্বিতীয়বার সরকার গঠন করে। এর পর থেকে প্রতিবছর বিএনপি দিনটিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ আর আওয়ামী লীগ ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর