বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

দুপক্ষের কারোরই চরম পর্যায়ে যাওয়া ঠিক হবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুপক্ষের কারোরই চরম পর্যায়ে যাওয়া ঠিক হবে না

একে আজাদ চৌধুরী

প্রধান দুই দল ৫ জানুয়ারি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘৫ জানুয়ারির কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে সবাই পালন করুক। দুপক্ষের কারোরই চরম পর্যায়ে (এক্সট্রিম পয়েন্টে) যাওয়া ঠিক হবে না। এটাও মনে রাখতে হবে, এটা গণতন্ত্র হত্যা দিবস নয়। গণতন্ত্রের হত্যার রূপ আমরা দেখেছি। এ দিনকে গণতন্ত্রের বিজয় না বলে অভিযাত্রা বলাটাও আমি সমীচীন মনে করি।’ গতকাল রাতে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বললেন বিশ্ববিদ্যালয়  মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক এই চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র সত্যিকারার্থে হত্যা করা হয়েছিল, ১৯৭৫ সালে। দেশকে কিভাবে পেছানো হয়েছে বিশ্ববাসী তা দেখেছে। আবার ১৯৮২ সালেও গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়। বিগত ওয়ান ইলেভেনেও গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়। ওই সময় ইয়াজউদ্দিন আহমেদ কিভাবে রাষ্ট্রপতি ও সরকার প্রধান হয়ে গেলেন, সেটাও জাতি দেখেছে। ওই দুই বছর কিভাবে দেশ চলেছে, তা সবাই দেখেছে। আমি মনে করি, তার চেয়ে আমরা বেশি ভালো আছি। এটা গণতন্ত্রের অভিযাত্রা। তবে এ ক্ষেত্রে অসম্পূর্ণ থাকতে পারে। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে আমাদের আরও কাজ করতে হবে। ওই সময় নির্বাচন না হলে কি হতো বলা মুশকিল।’

এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে বিগত ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের একান্ত প্রয়োজন ছিল। সে নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ হতে পারে। ওই সময় নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত ছিল বলেই আমরা অনেক কিছু অর্জন করতে পেরেছি। সেই দিন নির্বাচন না হলে সরকার চলমান না থাকলে যে কোনো ঘটনা ঘটে যেতে পারত। আমরা ওয়ান ইলেভেনেও দেখেছি, দেশ কয়েক বছর পেছনে গেছে। আবার নতুন করে যাত্রা শুরু করতে হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে নির্বাচন অপরিহার্য। সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক, এটাই আমরা চাই। যদি কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, তাহলেও গণতন্ত্রের স্বার্থেই নির্বাচন হতে হবে। এখন আমি মনে করি, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রয়েছে। এটাকে আরও সুষ্ঠু করতে যা যা প্রয়োজন সেটা সরকার করবে। এরই মধ্যে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতি সংলাপ ডেকেছেন। এটাকে স্বাগত জানাই।’  অধ্যাপক চৌধুরী আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘ভবিষ্যতে গণতন্ত্রের সুবাতাসই আরও ভালোভাবে বইবে। এক ধাপে সব অর্জন সম্ভব নয়। মনে রাখতে হবে, গণতন্ত্র শুধু একবারের নির্বাচন বা একটি ভোট নয়। নির্বাচন জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষায় এ নির্বাচনের বিকল্প ছিল বলে মনে হয় না। যারা নির্বাচনে সেদিন অংশ নেয়নি, তারা নিশ্চয় ভুল করেছে। তারা এখন উপলব্ধি করছে, এটা ভুল করেছে। তবে ওই নির্বাচনে কিছু অপূর্ণতা থাকলেও তা শোধরাতে সব দল মিলে একটি ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে পারে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো বিজয় হলে আছি, হারলে নেই—এই নীতি বর্জন করতে হবে। সভ্য সমাজে এমন হতে পারে না।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর