শুক্রবার, ৬ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঢাকায় আওয়ামী লীগের ব্যাপক শোডাউন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকায় আওয়ামী লীগের ব্যাপক শোডাউন

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গতকাল রাজধানীতে সাংগঠনিক শক্তির মহড়া দিয়েছে আওয়ামী —বাংলাদেশ প্রতিদিন

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গতকাল রাজধানীতে সাংগঠনিক শক্তির মহড়া দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিশাল শোডাউন করে দলের শীর্ষ নেতারা বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে আন্দোলনের নামে  বিএনপি ৫ জানুয়ারি গণহত্যা চালিয়েছিল। আবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে চাইলে তাদের চরম মূল্য দিতে হবে। গতকাল বিকালে ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ উপলক্ষে রাজধানীতে পৃথক সমাবেশ করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। মহানগর দক্ষিণ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ও মহানগর উত্তর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে এ সমাবেশের আয়োজন করে। উভয় সমাবেশে বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে তা বিশাল জনসভায় রূপ নেয়। কেবল ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই আনন্দ শোভাযাত্রা, সভা-সমাবেশের মাধ্যমে গণতন্ত্রের বিজয়োৎসব পালন করে দলটি। গতকাল দুপুর থেকেই বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে ও ধানমন্ডির রাসেল স্কয়ারে জড়ো হতে থাকেন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। অনেকটাই উৎসবমুখর পরিবেশে বাদ্যবাজনার তালে তালে অসংখ্য মিছিল নিয়ে তারা একত্র হন এ দুটি স্থানে। বেলা আড়াইটার মধ্যেই উভয় স্থান লোকে-লোকারণ্য হয়ে পড়ে। তবে এ দুটি জনসভা ঘিরে রাজধানীতে ব্যাপক যানজটেরও সৃষ্টি হয়। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, সঠিক গণতন্ত্রচর্চা ছাড়া সুশাসন হয় না। বর্তমানে দেশে গণতান্ত্রিক ধারা সৃষ্টি হয়েছে, ভবিষ্যতে এ ধারা আরও শক্তিশালী হবে। রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রধান হাতিয়ার নির্বাচন। নির্বাচন ছাড়া রাষ্ট্রব্যবস্থা অনুমোদন হয় না। সঠিক গণতন্ত্রের চর্চা অব্যাহত রাখলে নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সেনাবাহিনীর দরকার হয় না। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনি নির্বাচন বর্জন করে কী পেলেন? আপনার এ সিদ্ধান্ত ছিল অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আপনি কি ভেবেছেন, ক্যান্টনমেন্ট থেকে ইউনিফর্ম পরা কেউ সাঁজোয়া যান নিয়ে এসে আপনাকে ক্ষমতার সিংহাসনে বসাবে? এটা কখনো হবে না, কোথাও হয়নি। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। বঙ্গবন্ধু এভিনিউর সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে আন্দোলনের নামে বিএনপি ৫ জানুয়ারি গণহত্যা চালিয়েছিল। সে পরিস্থিতি অত্যন্ত যোগ্যতার সঙ্গে মোকাবিলা করে শেখ হাসিনা দেশকে রক্ষা করেছিলেন। তিনি বলেন, তারা আবার পানি ঘোলা করতে চায়। আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা করতে চায়। তবে এ দেশে আর গণহত্যা করতে দেওয়া হবে না। এ দেশের অগ্রগতি ও অগ্রযাত্রা কাউকে ব্যাহত করতে দেওয়া হবে না। শিল্পমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যদি শিক্ষা না পেয়ে থাকে তবে ১৯ সালের নির্বাচনে বাংলার মানুষ তাদের চিরদিনের মতো গণতন্ত্রের শিক্ষা দিয়ে দেবে। নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতিকে আওয়ামী লীগ সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে জানিয়ে প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা আশা করি, রাষ্ট্রপতি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য একটি শক্তিশালী ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন।’ বিএনপির উদ্দেশে রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা আশা করব, বিএনপি আর সন্ত্রাসের পথে যাবে না। নাশকতার পথে যাবে না। যদি যায় তাহলে তাদের চরম মূল্য দিতে হবে।’ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সমাবেশে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম রহমত উল্লাহর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আহমদ হোসেন, হাছান মাহমুদ, ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়, মহানগর ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে বক্তৃতা করেন মোজাফফর হোসেন পল্টু, মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এ কে এম এনামুল হক শামীম, ফজলে নূর তাপস, শাহে আলম মুরাদ, ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, জাকির হোসাইন প্রমুখ। উভয় সমাবেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উপস্থিত থাকলেও শুভেচ্ছা জানানো ছাড়া বক্তৃতা করেননি।

সর্বশেষ খবর