রবিবার, ৮ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
বিএনপির বিক্ষোভ আজ

অবরুদ্ধ বিএনপি কার্যালয়, ফটকের সামনে জলকামান

নিজস্ব প্রতিবেদক

অবরুদ্ধ বিএনপি কার্যালয়, ফটকের সামনে জলকামান

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গতকাল পুলিশের কঠোর অবস্থান —বাংলাদেশ প্রতিদিন

রাজধানীতে সমাবেশের অনুমতি না পেয়ে আজ রবিবার সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। জেলা, উপজেলা, মহানগরসহ রাজধানী ঢাকা মহানগরীর প্রতিটি থানায় এ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে দলটি। ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে ঢাকায় সমাবেশের অনুমতি না পাওয়ার  পাশাপাশি ৫ জানুয়ারি দেশের বিভিন্ন স্থানে দলের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে এই কর্মসূচি দেওয়া হয়। গতকাল সকালে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। রিজভী যখন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করেন, তখন কার্যালয়ের সামনে ছিল পুলিশের তিন স্তরের কড়া প্রহরা। ভোর থেকেই রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সেখানে পুলিশের সাঁজোয়া যান ও জলকামান দেখা যায়। কার্যালয়ের সামনে রাখা হয় পুলিশ প্রিজনভ্যান, জলকামান এবং এপিসি কার। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে দলের তিনজন কর্মীকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। ভোর থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের প্রতিটি গেটে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা অবস্থান নেয়। দিনভর কাউকেই ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। গোটা উদ্যান ছিল ফাঁকা। তবে সারাদিন নয়াপল্টন কার্যালয়ের বাইরে বিএনপির কোনো নেতা-কর্মীকে দেখা যায়নি। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, দলের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, সহ-দফতর সম্পাদক বেলাল আহমেদ প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। রিজভী আহমেদ বলেন, ঢাকায় আজ (শনিবার) সমাবেশের অনুমতি না দিয়ে সরকার গণতন্ত্রের সব দরজা-জানালা বন্ধ করে দিয়েছে। নাগরিক-স্বাধীনতার গলায় ফাঁসির দড়ি ঝুলিয়ে দিয়েছে। সরকার আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে নিজেদের লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত করে যখন যেমন খুশি, বিরোধী দলকে লাগাতারভাবে দমন করে যাচ্ছে। এখন নিঃশব্দ বোবাকণ্ঠই হচ্ছে— আওয়ামী বাকশালীদের কাছে প্রিয়। এর প্রতিবাদে দেশের সব জেলা, উপজেলা ও মহানগরে এবং রাজধানী ঢাকায় থানায় থানায় এই কর্মসূচি পালন করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আহমেদ অভিযোগ করেন, নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সকাল থেকেই জলকামানসহ ভারী-মাঝারি অস্ত্রসজ্জিত কয়েক প্লাটুন পুলিশ-র?্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, সরকার বিএনপির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একই রকমের যুদ্ধংদেহী পরিস্থিতি বিরাজমান। এ সরকার পুলিশকেই ক্ষমতার উৎস মনে করে। এদিকে নয়াপল্টন ও আশপাশের এলাকায় পুলিশের উপস্থিতি সম্পর্কে রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার শিবলী নোমান সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ সব সময় জনস্বার্থ রক্ষায় কাজ করে। কেউ যাতে অননুমোদিত সমাবেশ করে জনস্বার্থ বিঘ্নিত করতে না পারে, সে জন্য আমরা দায়িত্ব পালন করছি। তার আগে সকালে পুলিশ মোতায়েনের কারণ জানতে চাইলে রমনা থানার পরিদর্শক কাজী শাহীদুজ্জামান জানান, এখানে বিএনপি একটি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আমাদের কাছে তথ্য আছে, বিএনপির দুই গ্রুপে গোলমাল হতে পারে। এতে প্রাণহানিসহ জনগণের স্বার্থ বিঘ্নিত হতে পারে। তাই জনস্বার্থ রক্ষায় আমরা এখানে এসেছি। তবে বিএনপির কোন দুই গ্রুপে গোলমাল হতে পারে সে প্রশ্ন তিনি এড়িয়ে যান। ‘বিএনপি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করতে চাচ্ছে’— আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে রিজভী আহমেদ বলেন, ষড়যন্ত্রটা কী ধরনের, এর প্রকরণ কী, তা জানাতে হবে। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, উর্দি পরা কেউ আর খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় বসাবে না। খুব সুন্দর কথা। কিন্তু আমরা তো বারবার দেখেছি, উর্দি পরাদের আপনারাই সমর্থন করেছেন। কাজেই এই উর্দির কথা বলে মানুষকে আর বিভ্রান্ত করা যাবে না।

সর্বশেষ খবর