সোমবার, ৯ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

হুজুগে মেতে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ নয় : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেখানে বিনিয়োগ করবেন সে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানুন, ভালোভাবে খোঁজ-খবর নিন। প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা ও আর্থিক বিবরণী জেনে নিন। কিছু না জেনে হুজুগে মাতবেন না। হুজুগে মেতে সব শেষ করে, তারপর হায়-হায়, এটা যেন না হয়। তিনি বলেন, গুজব ও ধারণার ওপর নির্ভর করে বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার দায় ব্যক্তির নিজের। না জেনে বিনিয়োগ করে সব হারাবেন, তারপর সব দোষ দেবেন অর্থমন্ত্রী আর সরকারের। গতকাল সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। পুঁজিবাজার হবে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের এক নির্ভরযোগ্য উৎস। তিনি বলেন, সর্বস্তরের বািনিয়োগকারীদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং যৌক্তিক বিনিয়োগের কলা-কৌশল সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দিতে  বিএসইসির এই বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম সুফল বয়ে আনবে। শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, স্টক এক্সচেঞ্জ ও তালিকাভুক্ত কোম্পানিসমূহ সুশাসন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি বাজারের কর্মকাণ্ডের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার গড়ে তুলবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য পুঁজিবাজার বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘমেয়াদি পুঁজি সরবরাহের ব্যবস্থা করে থাকে। পাশাপাশি এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা তাদের সঞ্চয় সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের সুযোগ পান। এর ফলে শিল্প ও কলকারখানা বিকাশের পাশাপাশি বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে শিল্প ও অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের অন্যতম উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সুদৃঢ় অবস্থান আমাদের একান্ত কাম্য। শেয়ার বাজারে লেনদেন কারচুপি ও অনিয়ম শনাক্ত করতে যথাযথ নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ অব্যাহত রয়েছে এবং পুঁজিবাজার সংক্রান্ত মামলাসমূহ দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ঢাকায় একটি স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। বিএসইসির আর্থিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ডের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আইনি বিধান রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ‘সহায়তা তহবিল’ নামে ৯০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়েছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য আইপিও-তে ২০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করা হয়েছে।

 স্বাগত বক্তব্যে বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, ভারতে কোনো মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত না হলে সেখানে ব্যবসা করার কোনো সুযোগ নেই। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ প্রসঙ্গে বলেন, বিষয়টির প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। আমাদের অর্থনীতি যে জায়গায় পৌঁছেছে তাতে তাদের (বহুজাতিক কোম্পানি) এদেশে বিনিয়োগের জন্য একটু চাপ সৃষ্টি করতে পারি।

 

সর্বশেষ খবর