মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

বারবার আবেদন, বিএনপি অনুমতি পায়নি সমাবেশের

নিজস্ব প্রতিবেদক

৫ জানুয়ারি উপলক্ষে রাজধানীতে সমাবেশ করতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহার করতে বিএনপি অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিল ২৬ ডিসেম্বর। একটি আবেদন করা হয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাছে, আরেকটি গণপূর্ত বিভাগে। সমাবেশের তিন দিন আগে গণপূর্ত বিভাগ বিএনপিকে চিঠি দিয়ে জানায়, পুলিশ অনুমতি দিলে তাদের আপত্তি নেই। কিন্তু পুলিশ অনুমতি প্রসঙ্গে কোনো বক্তব্য দেয়নি। হতাশ হয় বিএনপি। পরে ৭ জানুয়ারি সমাবেশের আগের দিন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক প্রস্তুতি সভায় বলেন, সোহরাওয়ার্দীতে অনুমতি দিতে সমস্যা হলে তারা নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেই কর্মসূচি পালন করতে চান। এ নিয়ে ডিএমপির কাছে নতুন প্রস্তাবও নিয়ে যায় বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। কিন্তু ওই দিনও পুলিশ সাড়া দেয়নি।

শুধু চলতি বছরের ৫ জানুয়ারিই নয়, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির পর থেকে এই পর্যন্ত সাতবার সমাবেশের অনুমতি চেয়ে পায়নি বিএনপি। তিন বছরে মাত্র দুবার সমাবেশের অনুমতি পায় দলটি। এর মধ্যে একটি হলো ২০১৫ সালের ১ মে শ্রমিক সমাবেশ। যেটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও সমাবেশের অনুমতি পেয়েছিল বিএনপি। এর আগে ২০১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর মার্চ ফর ডেমোক্রেসি উপলক্ষে ঢাকায় চলো কর্মসূচির অনুমতি পায়নি বিএনপি। ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার অনুমতি মেলেনি। একই বছরের ৭ নভেম্বর রাজধানীতে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে সমাবেশ করতে পারেনি বিএনপি। ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে র‌্যালি করতে পারেনি দলটি। যদিও এর মধ্যে ঘরোয়াভাবে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আলোচনা সভা করেছে বিএনপি। এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিএনপি যদি এতই দুর্বল হয় তবে কেন তাদের সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এর কারণ সরকার জানে, বিএনপি রাস্তায় নেমে পড়লে তাদের সামাল দেওয়া যাবে না। দেশে এখন দুই ধরনের আইন চলছে। একটি হচ্ছে আওয়ামী লীগের জন্য। আরেকটি বাকিদের জন্য। দেশের একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলকে সমাবেশ করতে দেওয়া হয়নি।’ জানা যায়, গত বছর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে বিএনপির পক্ষ থেকে ৭ নভেম্বর ও পরে ৮ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়। প্রথমে উল্লিখিত দুই দিনের একদিনও অনুমতি দেয়নি পুলিশ। এমনকি অনুমতি না দেওয়ার ব্যাপারে কোনো কারণও বিএনপিকে জানানো হয়নি বলে জানান রিজভী আহমেদ। এরপর বিকল্প হিসেবে ৮ নভেম্বর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভা করার জন্য অনুমতি চেয়ে ডিএমপিকে চিঠি দেয় বিএনপি। কিন্তু সে চিঠিরও উত্তর দেয়নি পুলিশ। এরপর আবার ১০ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে আরও একটি চিঠি পাঠায় বিএনপি। সেই চিঠির জবাবও না পেয়ে ওই দিন সংবাদ সম্মেলন করে সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়। গতকাল দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা আমাদের রাস্তায় বেরোতে দেবেন না, মানববন্ধন করতে দেবেন না, আমাদের ছেলেমেয়েদের লাঠিপেটা করে তাড়িয়ে দেন।

অথচ আপনারা রেগুলারলি রাস্তায় নামছেন। গত ৫ জানুয়ারিও ঢাকায় ২-৩ জায়গায় সমাবেশে করেছেন, মিছিল করেছেন। অথচ সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলকে আপনারা সভা-সমাবেশ করতে দেবেন না। তাহলে পুলিশকে এখন বলে দিলেই হয়, দেয়ার আর নাউ টু রুলস—একটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের জন্য, আরেকটা হচ্ছে রেস্ট অব দ্য পিপলস।’

সর্বশেষ খবর