মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

আমার বক্তব্যে কোনো রাষ্ট্রদ্রোহ ছিল না : মান্না

নিজস্ব প্রতিবেদক

আমার বক্তব্যে কোনো রাষ্ট্রদ্রোহ ছিল না : মান্না

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘আমার বক্তব্যে কোনো রাষ্ট্রদ্রোহ ছিল না। আমি কখনো হিংসাত্মক রাজনীতি করি না।’ গতকাল বেলা ১১টায়     জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। দীর্ঘ ২১ মাস কারা ভোগের পর জামিনে মুক্তি পেয়ে এই প্রথম তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন। কারাগারে থাকাকালে গণমাধ্যমকে ‘পাশে’ পেয়েছেন বলে জানান মাহমুদুর রহমান মান্না। এজন্য গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। এ সময় মান্না সাংবাদিকদের বলেন, ‘চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে বলেছেন। আমি বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করাতে চাই। এজন্য হাইকোর্টে পাসপোর্ট চেয়ে আবেদন করব।’ অডিও টেপ ফাঁস হওয়া প্রসঙ্গে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমার সঙ্গে যে ব্যক্তির কথোপকথন হয়েছিল, তাকে আমি চিনি না। তার কণ্ঠটি আমার কাছে অপরিচিত ছিল। এর আগে আমি তার সঙ্গে কোনো দিন কথা বলিনি। কথোপকথনটি পরীক্ষা করলেই বোঝা যাবে।’ কারাগারে থাকার অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘অনেকে বিনা বিচারে দেশের জেলখানাগুলোতে বছরের পর বছর কাটাচ্ছেন। এমনও অনেকে আছেন, যারা ২০ বছর ধরে বিনা বিচারে কারাগারে আছেন। যারা ক্ষমতায় ছিল বা আছে, তারাই এজন্য দায়ী। এজন্য তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজে এটা চলতে পারে না। ইট-পাথরের মতো কারাগারও এখন অমানবিক। রাষ্ট্রকে মানবিক হতে হবে।’ মান্না বলেন, ‘আমরা বলেছি, দুটো বড় দল, যারা দেশ চালাচ্ছে এখন পর্যন্ত। তারা জনগণের ন্যায্য অধিকার যে প্রতিষ্ঠা করতে পারছে বা এর জন্য লড়াই করছে, এর চেষ্টা করছে, এ রকম মনে করি না আমরা। অতএব আমরা একটা অলটারনেটিভ কারেন্ট (বিকল্পধারা) তৈরির চেষ্টা করছি।’ নির্বাচন কমিশন গঠনে সব দলের কাছে রাষ্ট্রপতির আহ্বানের বিষয়টি কীভাবে দেখেন—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মান্না বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি যেটা করছেন তা কেবল ফরমালিটি বলেই আমার কাছে মনে হয়। সংলাপে কী হবে না হবে তা আমার পক্ষে বলা দুষ্কর। তবে নির্বাচন কমিশন যতই নিরপেক্ষ হোক, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাকে দেখতে হাসপাতালে গেছেন উল্লেখ করে মান্না বলেন, ‘আমাকে তিনি দেখতে গিয়েছিলেন, এজন্য আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ। তার সঙ্গে আমার সব সময় সুসম্পর্ক রয়েছে। আমরা একই বয়সী এবং আমাদের সম্পর্কও বন্ধুত্বপূর্ণ।’

পাসপোর্ট ফেরত দেওয়ার নির্দেশ : বন্ধ হয়ে যাওয়া দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের পাসপোর্ট ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ। মাহমুদুর রহমানের করা পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) আবেদনের নিষ্পত্তি করে গতকাল প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। মাহমুদুর রহমানের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে তাকে জামিন দেওয়া হয়েছিল। আপিল বিভাগের সেই আদেশের পুনর্বিবেচনা চেয়ে তিনি আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত আদেশ দিল। আদেশের অনুলিপি পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচারিক আদালতকে মাহমুদুর রহমানের পাসপোর্ট ফেরত দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারবেন। আদালতে মাহমুদুর রহমানের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও তানভীর আহমেদ আল আমিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। ২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল একটি মামলায় গ্রেফতার হন মাহমুদুর রহমান। পরে তার বিরুদ্ধে আরও মামলা হয়। সব মামলায় জামিন পেয়ে ২৩ নভেম্বর তিনি কারামুক্ত হন।

সর্বশেষ খবর