শান্তিতে নোবেলজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ব্যাংকিং ব্যবস্থাটি ভুল নীতির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। কেননা, ব্যাংক তাকেই টাকা দেয় যার এরই মধ্যে অনেক টাকা আছে, তাকে নয় যার টাকা নেই। ভারত সফররত প্রফেসর ইউনূস ৮ জানুয়ারি চণ্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন। রাজধানীর ইউনূস সেন্টার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল এ তথ্য জানায়। ইউনূস সেন্টার জানায়, নোবেল লরিয়েট প্রফেসর ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দিয়েছে চণ্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয়। ৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়টির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কর্তৃপক্ষ এর নির্বাহী পরিষদের সদস্য হতে প্রফেসর ইউনূসকে আমন্ত্রণ জানায়। ওই দিনই বিশ্ববিদ্যলয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি তুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর শান্তম সিং সন্ধু ও উপাচার্য ড. আর এস বাওয়া।
অনুষ্ঠানে প্রফেসর ইউনূস বলেন, তিনি দরিদ্র মানুষের হাতে পুঁজি তুলে দিতে গ্রামীণ ব্যাংক তৈরি করেছিলেন। তিনি গ্র্যাজুয়েটদের উদ্যোক্তা হতে এবং চাকরি না খুঁজে বরং চাকরি সৃষ্টির চেষ্টা করতে উৎসাহিত করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, তারা ভাগ্যবান কেননা তারা এমন এক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়া শেষ করে বের হচ্ছে যখন বিস্ময়কর সব প্রযুক্তি একজন উদ্যোক্তাকে বিভিন্ন উদ্ভাবনশীল উপায়ে তার সামাজিক লক্ষ্য অর্জনের কাজটি অনেক সহজ করে দিয়েছে। তারা আরও ভাগ্যবান, তারা এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছে যার উদ্দেশ্যই হচ্ছে তার ছাত্রদের সমাজের সেবার জন্য প্রস্তুত করা। সামাজিক ব্যবসা, প্রযুক্তি ও তারুণ্যের সম্মিলিত শক্তি কীভাবে একটি নতুন পৃথিবী সৃষ্টি করতে পারে তা তিনি শিক্ষার্থীদের কাছে ব্যাখ্যা করেন। প্রফেসর ইউনূস চণ্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছালে উপাচার্য ও সিনিয়র শিক্ষকরা তাকে পাঞ্জাবের ঐতিহ্যবাহী জাঁকজমকপূর্ণ কায়দায় অভ্যর্থনা জানান। বিশ্ববিদালয়টির পুরো ক্যাম্পাস প্রফেসর ইউনূসের ছবিসংবলিত ফেস্টুন দিয়ে সজ্জিত ছিল। উপাচার্য তার একটি উপস্থাপনায় ইউনূসকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব গুরুত্বপূর্ণ অর্জন ও ঘটনাবলি বিষয়ে অবহিত করেন। বৈঠকে উপাচার্য ঘোষণা করেন, বাংলাদেশের ইউনূস সেন্টারের সঙ্গে যৌথভাবে চণ্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ‘ইউনূস সামাজিক ব্যবসা কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠা করা হবে। সামাজিক ব্যবসার ওপর বিভিন্ন কোর্স চালু ছাড়াও কেন্দ্রটি প্রতি বছর ভারতের বিভিন্ন স্থানে সামাজিক ব্যবসার ওপর জাতীয় ফোরামের আয়োজন করবে।