বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

আওয়ামী যুবলীগসহ চার নেতা নিখোঁজ

গাইবান্ধা

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

সুন্দরগঞ্জের পাশের উপজেলা সাদুল্যাপুরের আওয়ামী যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি মনোয়ারুল হাসান জীম মণ্ডলসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবদলের চার নেতা দুই দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। সুন্দরগঞ্জের এমপি লিটন খুন হওয়ার ১২ দিনের মাথায় চারজনের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় পরিবার এবং দলীয় লোকজন চরম উৎকণ্ঠা ও আতঙ্কে রয়েছেন। নিখোঁজদের কেউ কেউ পথিমধ্যে হঠাৎ উধাও হন। আবার কাউকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন পরিবারের সদস্যরা। নিখোঁজরা হলেন— সাদুল্যাপুর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মনোয়ারুল হাসান জীম মণ্ডল (৪০), দামোদরপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদেক (৩৫), নলডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাইদুল ইসলাম প্রিন্স (৩০) ও নলডাঙ্গা ইউনিয়ন জাতীয়তাবাদী যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক শফিউল ইসলাম শাপলা (৩২)। এদিকে  নিখোঁজদের মধ্যে কাউকে তুলে নিয়ে যাওয়া এবং আটকের ব্যাপারে কিছুই বলতে পারছে না জেলা পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। তারা বলছেন, এমন পরিচয়ের কাউকে তারা আটক করেনি। জীম মণ্ডলের বাবা গোলাম মোস্তফা ডিপটি মণ্ডল বলেন, গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে জীম সাদুল্যাপুর উপজেলার কৃষি ব্যাংক মোড় থেকে তার (টিভিএস এপাচি) মোটরসাইকেল চালিয়ে নলডাঙ্গা রওনা হন। পথে লালবাজার এলাকা থেকে তিনি সাদেককে তার মোটরসাইকেলে তুলে নেন। এরপর থেকে তারা দুজন নিখোঁজ। ডিপটি মণ্ডল আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাদা পোশাকের লোকজন অথবা জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা এ দুজনকে তুলে নিয়ে গেছে। এ ঘটনার পর থেকে তাদের দুজনের মোবাইল ফোনও বন্ধ। জীমের মোটরসাইকেলেরও কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এ নিয়ে জীমের স্ত্রী লাভলী বেগম গতকাল দুপুরে সাদুল্যাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। নিখোঁজ মাইদুল ইসলাম প্রিন্সের ভাই নলডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম নয়ন বলেন, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাদা পোশাকের কিছু লোক নিজেদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে নলডাঙ্গা রেলগেট এলাকা থেকে প্রিন্সকে তার সুজুকি মোটরসাইকেলসহ তুলে নিয়ে যায়। র‌্যাব, পুলিশ ও ডিবি পুলিশের কাছে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারাও এ সম্পর্কে কোনো তথ্য জানে না বলে জানিয়েছে। এ ব্যাপারে গতকাল দুপুরে সাদুল্যাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। নিখোঁজ যুবদল নেতা শফিউল ইসলাম শাপলার বাবা আমিনুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে নলডাঙ্গার কাচারি বাজার এলাকায় সাদা পোশাকের কয়েক ব্যক্তি শফিউলকে আইডি কার্ড দেখিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের পরিচয় দিয়ে নিয়ে চলে যায়। সাদুল্যাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার খান বিপ্লব জানান, পথিমধ্যে হঠাৎ উধাও কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি বেশ উদ্বেগের। এ নিয়ে জেলা পুলিশ সুপারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তারা সব জায়গায় খোঁজখবর নিচ্ছেন। সাদুল্যাপুর থানার ওসি ফরহাদ ইমরুল কায়েস লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, ঘটনাগুলো তিনি জেনেছেন। বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।  গাইবান্ধা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) রবিউল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তিনিও শুনেছেন। পুলিশের কোনো শাখা তাদের আটক কিংবা তুলে নিয়ে যায়নি। তবে গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর