শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

অশ্রু চোখে বিদায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামার

প্রতিদিন ডেস্ক

অশ্রু চোখে বিদায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামার

আট বছর আগে পরিবর্তনের ডাক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় বসেন বারাক ওবামা। গত পরশু প্রেসিডেন্ট হিসেবে শেষ ভাষণ দিলেন ওবামা। সেই ভাষণ ছিল নিজেকে আবার পরিচয় করে দেওয়ার, আবেগের, কান্নার আর আনন্দের। শিকাগোতে দেওয়া শেষ ভাষণে ওবামা মার্কিন জনগণকে গণতন্ত্র রক্ষা করার আহ্বানও জানিয়েছেন।

বিদায়ী ভাষণে পরিবার, স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়েও কথা বলেন ওবামা। আর তাদের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি।  ভাষণে স্ত্রী মিশেল ওবামা এবং দুই সন্তান মালিয়া ও শাশার কথা বলতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন ওবামা। ভাষণে তিনি তার স্ত্রীকে ‘সেরা বন্ধু’ আখ্যায়িত          করেন। এরপর তিনি মিশেলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘তোমার কাজ আমাকে যেমন গর্বিত করেছে, তেমনি গর্বিত করেছে দেশকেও।’ ওবামা বলেন, ‘গত ২৫ বছর ধরে তুমি আমার সঙ্গে আছো। তুমি কেবল আমার স্ত্রী আর আমাদের সন্তানের মা নও, তুমি আমার সেরা বন্ধুও বটে। এই হোয়াইট হাউসে থাকাকালে তুমি তোমার মতো করে সব কাজ সুচারুভাবে সামলেছ।  তোমাকে কখনো বলতে হয়নি। তুমি আমার সব কাজের অংশীদারিত্ব নিজের করে নিয়েছ।’ বক্তৃতার এক পর্যায়ে এসে ওবামা ১৮ হাজার দর্শকের সামনে রুমাল বের করে নিজের  চোখ মোছেন। ওবামার বিদায়ী ভাষণের সময় তার পাশে কালো পোশাক পরে বসে ছিলেন ফার্স্ট লেডি মিশেল। বক্তব্যে দুই মেয়ের কথাও উল্লেখ করেন ওবামা। তিনি বলেন, ‘আমার  মেয়েরা আমার সম্মান ও সুনাম অক্ষুণ্ন রেখেছে। আজ আমি বলছি, তাদের বাবা হিসেবে আমি গর্বিত।’ ২০০৮ সালে শিকাগো নগর থেকে হোয়াইট হাউসে গিয়েছিলেন ওবামা। গত পরশু একই নগরেই হাজারো জনতার সমাবেশে ওবামা তার বিদায়ী ভাষণটি দেন। শিকাগোতে হাজার হাজার সমর্থকের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রায় সব বিবেচনাতেই আট বছর আগের তুলনায় আমেরিকা এখন ভালো ও শক্তিশালী দেশ। আগামী ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন। বিদায়ী ভাষণ দেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্টদের দীর্ঘ ঐতিহ্যের অংশ। সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ এবং বিল ক্লিনটন তাদের শেষ ভাষণ হোয়াইট হাউসে বসেই দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ওবামা দিলেন শিকাগো গিয়ে। এই ভাষণের জন্য শিকাগোকে বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে ওবামা বলেন, তিনি যেখান থেকে শুরু করেছিলেন সেখানেই শেষ করতে চেয়েছেন। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের আগেই ওবামা আমলের বহু পদক্ষেপ বাতিল করার ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন। এমন বাস্তবতায় ওবামা তার দুই মেয়াদের সাফল্যের পক্ষেই অকাট্য যুক্তি তুলে ধরেন। ওবামা বলেন, তার প্রণীত স্বাস্থ্য বীমা বাতিল করে কেউ যদি বিকল্প স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করতে পারেন, যে নীতিতে স্বল্প ব্যয়ে বেশি মানুষ স্বাস্থ্যসেবা পাবে, তাহলে তিনি প্রকাশ্যে তা সমর্থন করে যাবেন। আমেরিকার রাজনীতিতে ক্রমেই বেড়ে চলা দলপ্রীতি গণতন্ত্রের জন্য হুমকি বলে উল্লেখ করেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। ওবামা প্রায় ৪০ মিনিট বিদায়ী ভাষণ দেন। তার এই ভাষণ  শোনার জন্য রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যায়। ওবামার ভাষণ শুনতে  লোকজনকে বিভিন্ন ক্লাবে টেলিভিশনের সামনে ভিড় করতে  দেখা যায়। ওবামার ভাষণের সময় ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা, এক মেয়ে, ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, তার স্ত্রীসহ  ডেমোক্রেটিক পার্টির গুরুত্বপূর্ণ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এএফপি, বিবিসি, সিএনএন

সর্বশেষ খবর