মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

ওমরাহ পালন করলেন কমিউনিস্ট নেতা মনজুরুল আহসান

রুহুল আমিন রাসেল

ওমরাহ পালন করলেন কমিউনিস্ট নেতা মনজুরুল আহসান

পবিত্র ওমরাহ পালন করলেন দেশের অন্যতম প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতা মনজুরুল আহসান খান। ওমরাহ পালনকালে দেশের সবার জন্য তিনি দোয়া করেছেন। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি জানান, বামপন্থিদের সবার মাথায় যাতে বুদ্ধি আসে, সেজন্যও তিনি দোয়া করেছেন। কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক এই সভাপতি ঢাকা থেকে ১২ জানুয়ারি মক্কার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। তিনি গতকাল মক্কা থেকে মদিনায় গিয়েছেন। মনজুরুল আহসান খান ২৫ জানুয়ারি ঢাকায় ফিরছেন। দেশের অন্যতম দুই বামপন্থি নেতা ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর পর প্রাচীন বাম-রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি—সিপিবির এই উপদেষ্টার পবিত্র ওমরাহ হজ পালনের বিষয়টি কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বেশ আলোচিত। মুক্তিযুদ্ধে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি ও ছাত্র ইউনিয়নের বিশেষ গেরিলা বাহিনীর কমান্ডার মনজুরুল আহসান খানের ওমরাহ পালনের তিনটি ছবি শনিবার মক্কার মাসজিদুল হারাম থেকে তার বোনজামাই মহিউদ্দিন হাফিজ-উল হক নিজের ফেসবুকে পোস্ট দেন। এর পরই ব্যাপারটি দেশের বাম-প্রগতিশীল ও কমিউনিস্ট পার্টির নেতা-কর্মী এবং গণমাধ্যমের নজরে আসে। গতকাল সৌদি আরব থেকে টেলিফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মনজুরুল আহসান খান বলেন, ঐতিহাসিক নিদর্শন দেখতে দেখতে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘হুইল চেয়ার আর ক্র্যাচে ভর করে হাঁটি। আমি ২৫ জানুয়ারি ফিরব। মদিনায় থাকব। সেখানে দেখার জায়গা অনেক। ওগুলো একটু দেখে ঢাকায় ফিরব।’ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাজনীতিতে একটা স্থবিরতা বিরাজ করছে। এখানে উন্নয়নের নামে গণতন্ত্রকে সংকুচিত করা হচ্ছে। কোনো বিরোধী মত হলেই...। বিভিন্ন ঘটনা হচ্ছে, ক্রসফায়ার ইত্যাদি। এগুলোও ভালো লক্ষণ নয়। এটা হচ্ছে ডিট-স্টেটের লক্ষণ। বামপন্থিরা জনগণের প্রত্যাশিত ভূমিকা রাখতে পারছেন না— এমন প্রশ্নের জবাবে অভিজ্ঞ এই কমিউনিস্ট নেতা বলেন, ‘কিছু ভূমিকা তো রাখছেনই। যেমন তেল-গ্যাস জাতীয় কমিটি আন্দোলন। তারা একটা ভূমিকা রাখছে। সেই ভূমিকা আরও রাখতে পারত, যদি বামপন্থিরা ঐক্যবদ্ধ হতেন। আমরা কমিউনিস্ট পার্টি থেকে চেষ্টা করছি ঐক্যবদ্ধ হতে। কিন্তু এখনো সে ঐক্য অগ্রসর হয়নি। কিছু হয়েছে। এখনো আমরা চেষ্টা অব্যাহত রাখব। আর সারা বিশ্বেই তো রাজনীতিতে একটা সংকট চলছে। বিশেষ করে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের উত্থানের ফলে রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে বিকৃতি করে ফেলা হয়েছে। তদুপরি বিশ্ব পুঁজিবাদের যে অর্থনৈতিক সংকট, তার প্রভাব আমাদের ওপরও পড়ছে। আমাদের দেশের বেকারত্ব-দুর্নীতি-দারিদ্র্য চরম আকার ধারণ করেছে।’

দেশের বামপন্থা রাজনীতির আত্মসমালোচনার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মনজুরুল আহসান খান আরও বলেন, ‘আমি আশা করব যে, বামপন্থিরা ঐক্যবদ্ধ হবেন এবং তারা রাজনীতিতে একটা ভালো অবস্থান করতে পারবেন। আমরা সেই সম্ভাবনা তেল-গ্যাস জাতীয় কমিটির মাধ্যমে দেখছি। তারা একটা বিরাট আস্থা অর্জন করতে পেরেছে এবং আমাদের দেশের পরিস্থিতি প্রভাবিত করছে। আশা করব, বামপন্থিরা ঐক্যবদ্ধ হলে এটা আরও এগোবে।’

সর্বশেষ খবর