বুধবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

নারায়ণগঞ্জে এখনো আলোচনা রায় নিয়ে

রোমান চৌধুরী সুমন, নারায়ণগঞ্জ

চাঞ্চল্যকর সাত খুন মামলার রায় ঘোষণার পরদিন গতকাল নারায়ণগঞ্জ জেলার পাড়া-মহল্লা, অফিস-আদালতসহ সর্বত্রই শুধু ওই রায় নিয়ে আলোচনা। রায়ের বিস্তারিত জানতে সকাল থেকেই সংবাদপত্রে হুমড়ি খেয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ। সোমবার ঘোষিত এ মামলার রায়ে খুনিদের ফাঁসিসহ নানা দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। নিহততের পরিবার থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরের নাগরিক ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা রায়ে সন্তুষ্ট হলেও খুনিরা যেন আইনের ফাঁক গলে উচ্চ আদালত থেকে ছাড়া না পেয়ে যান, এমন দাবিও ছিল জোরালো। তবে ‘এ রায় উচ্চ আদালতে বহাল থাকবে’ এ রকম আশা পোষণ করছেন নিহততের স্বজন ও সাধারণ মানুষ। গতকাল দিনভর নারায়ণগঞ্জ শহর ঘুরে বিভিন্ন ব্যবসায়ী, কর্মজীবী মানুষের সঙ্গে কথা হয় সাত খুনের রায় নিয়ে। মন্তব্যে শহরের চাষাঢ়া এলাকার খাজা সুপার মার্কেটের বই ব্যবসায়ী হামিদ মিয়া জানান, সাত খুন সব ধরনের নারকীয়তাকে হার মানিয়েছে। আদালতের রায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ডিআইটি এলাকার কাপড়ের দোকানি সেলিম খান বলেন, যত ক্রেতা এসেছেন সবাই আলোচনা করেছেন সাত খুনের মামলার রায় নিয়ে। তবে শঙ্কা প্রকাশ করে অনেকেই বলেছেন, শেষ পর্যন্ত খুনিরা ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলবে তো? শহরের সেভেন স্টার হোসিয়ারির মালিক মোস্তফা চৌধুরী জানান, ‘এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে পত্রপত্রিকায় যত রিপোর্ট পড়েছি তাতে খুনিদের সবার নাম মুখস্থ হয়ে গেছে। আদালত উচিত রায় দিয়েছে। যেদিন খুনিদের ফাঁসি হবে সেদিন সপরিবারে মিষ্টি খাব।’ রায়ের পরদিন জেলা শহর থেকে শুরু করে সর্বত্র ছিল পুলিশের ব্যাপক টহল। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে প্রশাসন ছিল প্রস্তুত। রায়ের পরই মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মন্তব্য করেছেন, ‘আমি মনে করি এ রায় উচ্চ আদালতেও বহাল থাকবে’— তার এ মন্তব্যে নিহতদের পরিবারসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি দেখা গেছে। কারণ রায়ের পর অনেকেই শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন উচ্চ আদালত থেকে আপিল করে খুনিরা খালাসের সুযোগ নিতে পারেন।

রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি : সাত খুন মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে দ্রুত বাস্তবায়ন চেয়েছেন নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি, যিনি একটি মামলার বাদী। তিনি গতকাল বলেন, ‘আমরা এখনো হুমকির মধ্যে আছি। নূর হোসেনের সহযোগীরা এখনো এলাকায় রয়েছেন। আমাকে কিছু দিন আগেও চিঠি দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বলা হয়েছিল। এ ছাড়া আমাদের এবং নিহত তাজুলের স্বজনদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য দখল করে নেওয়া হয়েছে। যত দিন রায় কার্যকর না হয় তত দিন আমরা আতঙ্কে থাকব।’

নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের মেয়ে সুস্মিতা সরকার বলেন, ‘রায়ে আমি সন্তুষ্ট। উচ্চ আদালতে রায় বহাল থাকবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। বাবার খুনিদের যত দ্রুত সম্ভব ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলানো হোক।’ নিহত তাজুলের বাবা আবুল খায়ের জানান, এই বৃদ্ধ বয়সে আর কিছু চাই না। চাই পোলাডারে যারা খুন করেছে তাদের ফাঁসি।’

খেপেছেন নীলা : সাত খুন মামলার রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নূর হোসেনের সাবেক বান্ধবী জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা দাবি করেছেন তিনি নূর হোসেনের বিবাহিত স্ত্রী, গার্লফ্রেন্ড নন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম নীলাকে নূর হোসেনের গার্লফ্রেন্ড বলে উল্লেখ করায় তিনি এ মন্তব্য করেন। এই প্রতিবেদক তাদের বিয়ের কাবিননামা দাবি করলে নীলা বলেন, ওটা তো নূর হোসেনের কাছে।

সর্বশেষ খবর