শিরোনাম
বুধবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
সুইজারল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ ডব্লিউইএফ সভা আয়োজনে প্রস্তুত

প্রতিদিন ডেস্ক

বাংলাদেশ এবং এর আঞ্চলিক অর্থনীতিকে তুলে ধরতে বাংলাদেশে একটি সভা আয়োজনে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সুইজারল্যান্ডে ডব্লিউইএফের সম্মেলনে যোগদানের আগে সংস্থার নির্বাহী চেয়ারম্যান প্রফেসর ক্লাউস সোয়াবের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে এ ধরনের সভা আয়োজনে প্রস্তুত রয়েছি।’ সুইজারল্যান্ডের ডাভোসের কংগ্রেস সেন্টারে ডব্লিউইএফের ৪৭তম বার্ষিক সভার সাইড লাইনে অনুষ্ঠিত হয় এ বৈঠক। খবর বাসসের। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, শেখ হাসিনা ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বৈঠক চলাকালে বাংলাদেশে অধিক হারে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার জন্য উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানাতেও প্রফেসর ক্লাউসের প্রতি অনুরোধ জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিদেশি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে দেশে নানা রকম সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করেছি। তাদের সেই সুযোগটা গ্রহণ করা উচিত।’ এ প্রসঙ্গে শিল্পায়নের বিকাশ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে তার সরকারের উদ্যোগে দেশে ১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে বিশ্ব বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে ব্র্যান্ডিং করাটা খুব জরুরি বলে এ সময় প্রফেসর ক্লাউস উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে এ সময় ক্লাউস বলেন, বাংলাদেশের কয়েকটি ক্ষেত্রে উন্নয়ন খুব বিস্ময়কর। বিশেষ করে বিশ্বমন্দার মধ্যেও ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন খুব বড় বিষয়। প্রফেসর ক্লাউস বলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে এখন অনেকেই উচ্চাশা পোষণ করেন এবং দেশটির উজ্জ্বল ভবিষ্যতের বিষয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের অনেকেই আশাবাদী।

পরে প্রধানমন্ত্রী একই সেন্টারে ‘শেপিং এ নিউ ওয়াটার ইকোনমি’ শীর্ষক এক কর্মশালায় অংশ নেন। ওয়ার্ল্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান নির্বাহী এন্ড্রু স্টিয়ারের সঞ্চালনায় এ কর্মশালায় ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে যোগদানকারী বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা অংশগ্রহণ করেন। সেখানে প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতিতে তৈরি পোশাক ও বস্ত্রশিল্পের অবদান বিশাল। এ শিল্পে শ্রমিক অধিকার, কর্মস্থলের নিরাপত্তা, পরিবেশগত মানসহ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার ব্যাপারে আমরা দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

বেতনকাঠামো, কর্মস্থলের নিরাপত্তা, রীতিনীতি এবং শিল্প খাতে সহনশীল সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প উচ্চতর মান অর্জন করেছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পোশাককর্মীদের মূল বেতন ৭৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্লোবাল ব্র্যান্ড ও রিটেইলারদের সুপারিশের ভিত্তিতে ৩ হাজার ৭৮০টি কারখানার সব কটির সমীক্ষা শেষ হয়েছে।’ পরে পানিসংক্রান্ত উচ্চপর্যায়ের প্যানেলের একজন সদস্য হিসেবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০৩০ ডব্লিউআরজির মতো উদ্ভাবনী অবকাঠামোর ব্যাপারে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ পানিসম্পদের সংকট বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ২০০৮ সালে ‘২০৩০ ওয়াটার রিসোর্স গ্রুপ’ গঠন করা হয়। এর সদস্যদের মধ্যে রয়েছে— ম্যাককিনসে অ্যান্ড কোম্পানি, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপ এবং ব্যবসায়িক অংশীদারদের একটি কনসোর্টিয়াম : দ্য ব্যারিল্লা গ্রুপ, কোকা-কোলা কোম্পানি, নেসলে এসএ, নিউ হল্যান্ড এগ্রিকালচার, এসএবি মিলার পিএলসি, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড এবং সিনজেন্টা এজি। দেশের শিল্পায়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পানিস্বল্পতা না থাকায় বাংলাদেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আদৌ কোনো সমস্যা নয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও জাতিসংঘ কার্যালয়ে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি শামীম আহসান কর্মসূচিগুলোতে উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর