বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভয় করার কোনো কারণ আওয়ামী লীগের নেই

আহমদ সেলিম রেজা

ভয় করার কোনো কারণ আওয়ামী লীগের নেই

বদরুদ্দীন উমর

স্বাধীন ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েই রাষ্ট্রপতি তার মতামত দেবেন বলে মনে করেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি বদরুদ্দীন উমর। গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মত ব্যক্ত করেন।

বদরুদ্দীন উমর বলেন, নির্বাচনকে ভয় করার কোনো কারণ নেই আওয়ামী লীগের। কারণ নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে অনেক কথাবার্তা এবং তৎপরতা দেখানো হলেও কার্যত ভবিষ্যৎ নির্বাচন কমিশনও প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এ ছাড়া রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগ মেনে নেবে, এটা একটা হাস্যকর ব্যাপার। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েই রাষ্ট্রপতি তার মতামত দেবেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলেছেন। তারা সে প্রস্তুতি নিতেই পারেন। এ জন্য পুলিশ এবং নির্বাচন কমিশনকেও প্রস্তুত করা দরকার। এ প্রস্তুতি কীভাবে নিতে হয় সে ব্যাপারে আওয়ামী লীগের দক্ষতা নিয়ে সন্দেহের কোনো কারণ নেই। বদরুদ্দীন উমর বলেন, দেশে ও দেশের বাইরে মুখ দেখানোর জন্য আওয়ামী লীগ আর ৫ জানুয়ারির মতো কোনো কেলেঙ্কারির নির্বাচন করবে বলে মনে হয় না। তবে তাদের চেষ্টা থাকবে দমন-পীড়ন চালানোর পাশাপাশি বিরোধী দলের সঙ্গে এক ধরনের সমঝোতায় আসা। এতে বিএনপি ক্ষমতায় আসতে না পারলেও তারা দমন-পীড়ন কিছুটা এড়াতে পারে। ক্ষেত্র বিশেষে তারা সুযোগ-সুবিধায় সামান্য হলেও ভাগ বসাতে পারবে। তিনি বলেন, আমাদের মতো দেশে সাধারণভাবে নির্বাচনে জনগণের প্রকৃত মতামতের প্রতিফলনের তেমন সুযোগ থাকে না। কারণ নির্বাচন নিরপেক্ষ হলেই জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটবে এমনটা নয়। তার জন্য অন্য শর্তও পূরণ হওয়া দরকার। এ কারণে যে জনমত নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা শাসক শ্রেণির হাতে অনেকভাবেই থাকে। এক প্রশ্নের জবাবে বদরুদ্দীন উমর বলেন, ভারত সঙ্গে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সুসম্পর্ক আওয়ামী লীগের জন্য সুবিধাজনক। তবে এ সম্পর্ক যে বাংলাদেশ ও জনগণের জন্য সুবিধাজনক, এটা বলার উপায় নেই। এই সুসম্পর্কের কারণে বাংলাদেশ ভারত সরকারকে এক তরফা অনেক সুবিধা দিয়েছে। তারা করিডর দিয়েছে, উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে এদেশের পানি ও মাটির ওপর দিয়ে যোগাযোগসহ অনেক ধরনের বাণিজ্যিক সুবিধা দিয়েছে। নৌ-বন্দরগুলো ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছে। এরকম অনেক সুবিধা দেওয়া সত্ত্বেও ভারত সরকার বাংলাদেশকে কিছুই দেয়নি। এমনকি তিস্তার পানির মতো অতি প্রয়োজনীয় বিষয়টি বছরের পর বছর তারা ঝুলিয়ে রেখেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এ অবস্থার পরিবর্তন হবে বলে মনে হয় না। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা ব্যানার্জি যেভাবে কেন্দ্রের সঙ্গে তার রাজ্যের দাবি-দাওয়া নিয়ে দরকষাকষি-চেঁচামেচি করেন তা করার ক্ষমতা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের নেই।

সর্বশেষ খবর