বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
সহকর্মীর জামিন নামঞ্জুরের জের

চট্টগ্রাম আদালতে ভাঙচুর করলেন আইনজীবীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম আদালতে ভাঙচুর করলেন আইনজীবীরা

চট্টগ্রাম আদালত ভবনে জানালার ভেঙে ফেলা কাঁচ —বাংলাদেশ প্রতিদিন

মানব পাচার আইনের মামলার আসামি আইনজীবী ও তার স্ত্রীকে জামিন না দেওয়ায় গতকাল আইনজীবীরা চট্টগ্রামের আদালতে নজিরবিহীন ভাঙচুর চালিয়েছেন। এ অবস্থায় একপর্যায়ে আদালত আসামিদের জামিন দিয়েছে।

মানব পাচার আইনের মামলার আসামিরা হলেন অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন (৪০) ও তার স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার (৩২)।

জানা গেছে, বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম সাহাদাৎ  হোসেন ভূঁইয়া আসামিদ্বয়ের জামিন নামঞ্জুর করলে বিক্ষোভে নামেন আইনজীবীরা। এ সময় তারা বিচারকের এজলাস এবং খাস কামরার জানালা ভাঙচুর করেন। এ ঘটনার ছবি তুলতে গেলে কয়েকজন আইনজীবী বাংলানিউজের সিনিয়র ফটোকরেসপন্ডেন্ট উজ্জ্বল কান্তি ধরকে লাঞ্ছিত করে ক্যামেরা কেড়ে নেন। পরে জেলা আইনজীবী সমিতির সহসাধারণ সম্পাদক মো. রাসেল ক্যামেরা উদ্ধার করে তা ফেরত দেন। এ অবস্থার একপর্যায়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে শুনানির পর মহানগর হাকিম মাসুদ পারভেজ আসামিদ্বয়ের জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতের এক কর্মকর্তা বলেন, পতেঙ্গা থানার ফাইল শুনানি শেষ হওয়ার পর আইনজীবীদের বিশেষ অনুরোধে জামিনের আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়। আসামির পক্ষে প্রায় দেড়শ আইনজীবী শুনানিতে অংশ নেন। জামিন নামঞ্জুরের পর আইনজীবীরা চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করলে বিচারক খাস কামরায় চলে যান। এ সময় পাথরের আঘাতে এজলাসে বিচারকের চেয়ারের ওপরের কাচ ভেঙে যায়। বিকাল থেকে সন্ধ্যায় সিএমএম এবং অতিরিক্ত সিএমএম’র আদালতের সামনে অবস্থান নিয়ে কয়েকশ আইনজীবী মিছিল করে এবং স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিমের অপসারণ দাবি করেন।  অ্যাডভোকেট মাইনুদ্দিন বলেন, আইনজীবী এবং তার স্ত্রীর নাম মামলার এজাহারে ছিল না। এরপরও ফরোয়ার্ডিংয়ে তাদের নাম উল্লেখ করে রিমান্ডের আবেদন পাঠানো হয়। আদালত রিমান্ড এবং জামিন নামঞ্জুর করেছেন। জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় আদালতে বিক্ষোভ করেছেন আইনজীবীরা। রাত সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রাম জেলার ঊর্ধ্বতন বিচারকরা ভাঙচুরকৃত ঘটনাস্থলগুলো সরেজমিনে পরির্দশন করেন। আসামিদের জামিন মঞ্জুরের পর আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আইনজীবীদের বিক্ষোভের পর সিএমএম আদালতে জামাল ও ইয়াছমিনের আবারও জামিনের আবেদন করা হয়। সিএমএম জামিন শুনানির জন্য মহানগর হাকিম মাসুদ পারভেজকে দায়িত্ব দেন। জামিন শুনানিতে সিনিয়র আইনজীবীরা অংশ নিয়েছেন। পাঁচ মিনিটের শুনানি শেষে আদালত এক হাজার টাকার বন্ডে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতির জিম্মায় দুজনের জামিন মঞ্জুর করেছেন। একই কথা বললেন, অ্যাডভোকেট মাইনুদ্দিন ও অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী। এরপর আইনজীবীরা জামিন পাওয়া অ্যাডভোকেট জামাল হোসেনকে নিয়ে সিএমএম আদালতের বাইরে আনন্দ, উল্লাস করেন।

এদিকে দায়িত্বপালনের সময় আইনজীবীরা সাংবাদিকের ক্যামেরা কেড়ে নেওয়াসহ কয়েকজন সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী।

সর্বশেষ খবর