শুক্রবার, ২০ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

স্বামীকে খুন করে থানায় স্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

তিনটি বিয়ে করাই কাল হলো ফজল শেখের। তিন স্ত্রীকেই রেখেছিলেন। তবু অভিযোগের শেষ ছিল না। ছোট স্ত্রীর প্রতি বেশি ভালোবাসা ছিল তার— এমন অভিযোগ ছিল অন্য স্ত্রীদের। এ নিয়ে রাতভর ঝগড়ার পর বড় স্ত্রী চন্দ্র বাহারের হাতে জীবন দিতে হয়েছে তাকে। গতকাল সকালে রাজধানীর মধ্য বাড্ডা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্বামীকে হত্যার পর চন্দ্র বাহার বাড্ডা থানা পুলিশের কাছে ধরা দেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিমর্ষ ওই নারী উন্মাদের মতোই থানায় ঢুকেছিল। কার কাছে যাবেন জানতে চাইলে ওই নারী বলেন, আমাকে গ্রেফতার করুন। আমি আমার স্বামীকে খুন করেছি। হতবাক হয়ে পুলিশ সদস্যরা তাত্ক্ষণিকভাবে ওই নারীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফজলের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠানো হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে চন্দ্র বাহার জানিয়েছে, রাতে একসঙ্গে ছিলেন ফজল শেখ ও চন্দ্র বাহার। ছোট স্ত্রীর প্রতি বেশি ভালোবাসা ও তার সঙ্গে বেশি থাকা নিয়ে রাতে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। ফজল তখন অকথ্য ভাষায় তাকে বকাঝকা দেন। রাতে আর ঘুমাননি চন্দ্র বাহার। অন্যদিকে ভোরে ঘুমে বিভোর ছিলেন ফজল। ঠিক তখনই ঘটনার জন্ম দেন চন্দ্র বাহার। ঘুমন্ত স্বামীকে শীলপাটা দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। সঙ্গে সঙ্গে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হলে অচেতন হয়ে যান ফজল। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার পুরুষাঙ্গ কেটে দেন চন্দ্র বাহার। তিনি হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিতে রাজিও হয়েছেন। জানা গেছে, প্রায় ১৭ বছর ধরে বাড্ডা এলাকায় বসবাস করছিলেন ফজল শেখ। মধ্য বাড্ডার আদর্শ নগর এলাকায় পাশাপাশি দুটি বাসায় তিন স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন তিনি। ঘটনার দিন ছোট স্ত্রী রুমি ছিলেন ভারতে। মেজো স্ত্রী হবিগঞ্জে তার বাবার বাড়িতে। বড় স্ত্রী চন্দ্র বাহারের সঙ্গেই ছিলেন ফজল শেখ। বড় স্ত্রী চন্দ্র বাহারের গর্ভজাত চার ছেলে, মেজো স্ত্রীর গর্ভজাত দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ফজল শেখের তিন স্ত্রীর গ্রামের বাড়িই হবিগঞ্জে।

বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল জানান, ছোট স্ত্রী রুমির প্রতি বেশি ভালোবাসা ও তার সঙ্গে বেশি সময় কাটানোর কারণেই ক্ষুব্ধ ছিলেন বড় স্ত্রী চন্দ্র বাহার। ক্ষুব্ধ হয়েই তিনি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহূত শীলপাটা ও ধারালো অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। নিহতের বাড়ি হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানার বড়ইগুড়ি গ্রামে। ফজল শেখ পেশায় রিকশাচালক ছিলেন। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। ওই মামলায় চন্দ্র বাহারকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। আজ শুক্রবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর