শনিবার, ২১ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

সাত খুনের দায় র‌্যাবের নয়, ব্যক্তির

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

সাত খুনের দায় র‌্যাবের নয়, ব্যক্তির

নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুন মামলায় র‌্যাবের ২৫ সদস্যের সাজা হওয়ায় র‌্যাবের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়নি বলে দাবি করেছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেছেন র‌্যাবের কিছু সদস্য ব্যক্তিগতভাবে অন্যায় কাজ করেছে। সেটা তাদের দায়। সেটা কিন্তু র‌্যাবের দায় নয়। তিনি গতকাল সকালে র‌্যাব-১৩ রংপুর ব্যাটালিয়নের উদ্যোগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাঠে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।  বেনজীর আহমেদ বলেন, সাত খুনের পরপরই প্রথম র‌্যাবের তদন্তেই জড়িতদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাদের র‌্যাব থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। মামলা হয়েছে। তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। র‌্যাব তাদের কোনো ধরনের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়নি। র‌্যাবের ডিজি বলেন, মানুষকে ফ্যাক্টরি থেকে অর্ডার দিয়ে বানিয়ে আনা হয় না। এখন কেউ যদি অন্যায় প্রলোভনে প্রলোভিত হয়, সেটা তার বিষয়, র‌্যাবের নয়। আমরা বলতে পারি, গত ১৩ বছরে র‌্যাবের যেসব সদস্য অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে, তাদেরকে চিহ্নিত করা হয়েছে। শত শত র‌্যাব সদস্যকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলা হয়েছে। চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারে র‌্যাব খুবই কঠোর। বেনজীর আহমেদ বলেন, র‌্যাবকে এলিট ফোর্স হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। জনগণের জন্য, রাষ্ট্রের জন্য। আমরা আমাদের সব সামর্থ্য ও শক্তি জনগণ এবং রাষ্ট্রের জন্য বিনিয়োগ করতে চাই সর্বোচ্চ দেশপ্রেম, নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে। তিনি বলেন, কোনো সদস্যের অন্যায় অপকর্ম র‌্যাব সহ্য করবে না। যে কোনো মূল্যে আমরা র‌্যাবকে ক্লিন রাখব। উত্তরাঞ্চলে জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে র‌্যাবের ডিজি বলেন, জঙ্গিদের অধিকাংশই উত্তরাঞ্চলে বসবাস করে এটা ঠিক। তবে কেন উত্তরাঞ্চলে জঙ্গির উত্থান, কেন এ অঞ্চলে নতুন করে ২০১৫ সালে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে জঙ্গি হামলা শুরু হলো এটা সামাজিক গবেষণার বিষয়। উত্তরাঞ্চলের ১৪ জেলায় কি কারণে জঙ্গিবাদের উত্থান, উন্মেষ এবং কার্যক্রম ঘটে তা খতিয়ে দেখতে র‌্যাব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে গবেষণা চালানো হচ্ছে। এ গবেষণার মাধ্যমে এ অঞ্চলে এ ধরনের ঘটনা আর যাতে না ঘটে তার একটা স্থায়ী ব্যবস্থা খুঁজে বের করা হবে। তিনি বলেন, অনেক জঙ্গি র‌্যাব-পুলিশের গোলাগুলিতে নিহত হয়েছে। বিশাল সংখ্যক জঙ্গিকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ফলে এ মুহূর্তে হয়তো তাদের দমন করা গেছে। আবার তাদের যে উত্থান হবে না তা বলা যাবে না। কারণ ২০০৪ সালেও জঙ্গিদের দমন করা হয়েছিল। ১২ বছর পর আবার তাদের উত্থান ঘটেছে। তারা শক্তি সঞ্চয় করে পুনর্গঠিত হয়েছে। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সরকারদলীয় এমপি মনজুরুল ইসলাম লিটন হত্যাকাণ্ডের অগ্রগতির বিষয়ে র‌্যাবের ভূমিকা প্রসঙ্গে বেনজীর আহমেদ বলেন, পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব প্রকৃত খুনিদের খুঁজে বের করার কাজ করছে। প্রকৃত খুনিদের বের না করা পর্যন্ত র‌্যাবের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। পরে র‌্যাবের ডিজি দরিদ্র মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন। এ সময় র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আনোয়ার লতিফ, র‌্যাব-১৩ রংপুরের অধিনায়ক কমান্ডার আতিক উল্যাহ, রংপুর রেঞ্জ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) বশির আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর