শিরোনাম
রবিবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী

পরিবেশবাদীদের রামপাল বিরোধিতা পরিকল্পিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

সুইজারল্যান্ডে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) সম্মেলনে বিশ্ব পরিবেশবাদীদের রামপাল প্রশ্ন পরিকল্পিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের দিয়ে রামপাল নিয়ে বলানো হয়েছে। নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস গংরাই পরিকল্পিতভাবে সেখানে এ ইস্যুটি তুলেছেন।’ সুইজারল্যান্ডে পাঁচ দিনের সফর শেষে গতকাল সকালে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা দেখা করতে গেলে শেখ হাসিনা তাদের এসব কথা বলেন। সাক্ষাতের সময় গণভবনে উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউনূস সাহেবদের অনেক টাকা। তারা টাকা খরচ করিয়ে সেখানে এ ইস্যুটি উত্থাপন করিয়েছেন এবং বিশ্বনেতাদের দিয়ে রামপালের বিরুদ্ধে বলিয়েছেন।

ডব্লিউইএফের সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পরিবেশবাদী আল গোর রামপাল প্রসঙ্গ তুলে আনেন। আল গোর বলেন, ‘গত বছর পর্যন্ত বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত সৌরশক্তির প্যানেল স্থাপনকারী দেশ ছিল। কিন্তু এখন সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল সুন্দরবনে পরিবেশ দূষণকারী একটি নতুন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত্ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। হাজার হাজার মানুষ এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে।’ যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল রামপাল নিয়ে আল গোরের বক্তব্যের প্রসঙ্গ তোলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমিও বিশ্বনেতাদের, পরিবেশবাদীদের চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলে এসেছি আপনারা বাংলাদেশে আসেন। আমরা ঘুরে ঘুরে সব দেখাব। পৃথিবীর যে কোনো পরিবেশবাদী রামপাল প্রকল্প দেখতে আসতে পারেন।’

কেন্দ্রীয় নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানার সুইজারল্যান্ডে বরফ খেলায় অংশ নেওয়া ও ছবি তোলার বিষয়টি নিয়ে প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বরফের দেশে গেলাম তাই ছবি তুললাম। অনেক ঠাণ্ডা। মাইনাস থেকে প্লাসে এলাম।’

দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী : সুইজারল্যান্ডে পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বিমান শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ এবং ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান।

১৬ জানুয়ারি চার দিনের এ সম্মেলনে অংশ নিতে শেখ হাসিনা সুইজারল্যান্ডের আল্পস রিসোর্ট শহর ডাভোসে পৌঁছান।

শুক্রবার বিকালে এমিরেটসের এই ফ্লাইট জুরিখ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা হয়। দুবাইয়ে যাত্রাবিরতি করে গতকাল ঢাকায় এসে পৌঁছে বিমানটি।

শেখ হাসিনাই প্রথম বাংলাদেশি কোনো নির্বাচিত নেতা যিনি এই বার্ষিক সভায় অংশগ্রহণ করলেন। যেখানে রাষ্ট্রনায়ক, শীর্ষ ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, যোগাযোগবিদ, চিন্তাবিদ এবং প্রযুক্তিবিদগণ নানা গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক সমস্যা নিয়ে পর্যালোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী এই বার্ষিক সভায় অংশগ্রহণ ছাড়াও ডব্লিউইএফ-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান প্রফেসর ক্লাউস সোয়াবের সঙ্গে বৈঠক করেন, পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন এবং রাষ্ট্র নায়ক ও সরকার প্রধানসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হন।

সম্মেলনে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী পানি ব্যবস্থাপনা, আঞ্চলিক সহযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা, কর্মসংস্থানসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন এবং প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন। একটি সেশনে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত্ কেন্দ্র প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হয়।

অর্ধ-শতাধিক রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিসহ প্রায় তিন হাজার প্রতিনিধি এবারের সম্মেলনে অংশ নেন।

সর্বশেষ খবর