রবিবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
পর্যবেক্ষণ

প্যান্ট চুরি মামলার আসামি সাংবাদিক

হারুন উর রশীদ

সাভারের সাংবাদিক নাজমুল হুদা প্রায় এক মাস ধরে কারাগারে। গত মাসে আটকের পর তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে একটি মামলা দেয় পুলিশ। আর সেই মামলায় রিমান্ডেও নেয়। এখন আবারও নতুন করে তাকে রিমান্ডে নেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। সেই চেষ্টার রসদ হিসেবে নাজমুলকে আরও পাঁচটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে, যার একটিতেও তিনি এজাহারভুক্ত আসামি নন। আর এ মামলাগুলোর মধ্যে প্যান্ট চুরির মামলাও রয়েছে! সাভারের সাংবাদিক নাজমুলকে আমি চিনি প্রায় ১০ বছর ধরে। তখন আমি একুশে টেলিভিশনে কাজ করতাম। একুশে টেলিভিশনে প্ল্যানিং এডিটরের দায়িত্বের বাইরেও আমি ‘একুশের চোখ’ নামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের পরিকল্পনা ও উপস্থাপনার দায়িত্বে ছিলাম। কখনো কখনো এর রিপোর্টিংয়ের কাজও করতাম। নাজমুল হুদা তখনো একুশে টেলিভিশনের সাভার-আশুলিয়া প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করতেন। সাভার-আশুলিয়া শিল্প এলাকা এবং গ্রোয়িং সিটি হওয়ায় ওই এলাকায় অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের অনেক বিষয় ছিল। আর সেসব বিষয় আমাকে জানাতেন নাজমুল। নাজমুলের দেওয়া আইডিয়া নিয়ে অন্তত ১০টি অনুষ্ঠান করেছি আমি। তবে নাজমুল আমার অনেক কাছে আসেন রানা প্লাজা ধসের সময়।নাজমুল হলেন একমাত্র সাংবাদিক যিনি রানা প্লাজা ধসের আগের দিন ভবনের ফাটলের ফুটেজ ধারণ করেছিলেন। সেদিন রানা বলেছিলেন, ‘এটা কোনো ফাটল নয়, পলস্তারা খসে পড়েছে।’ একুশে টেলিভিশনে সেই প্রতিবেদন ধসের আগের দিনই প্রচারিত হয়। আর ধসের দিন সকালে জোর করে শ্রমিকদের ভবনে প্রবেশ করানোর ফুটেজও নাজমুল ধারণ করেছিলেন। আর এসব কারণে নাজমুলকে বার বার হত্যার হুমকি দেওয়া হয় তখন। রানা প্লাজা নিয়ে ওই দুটি প্রতিবেদনের জন্য নাজমুল আন্তর্জাতিকভাবেও পরিচিতি পান। তার ওই এক্সক্লুসিভ ফুটেজ বিবিসিসহ পৃথিবীর অনেক বড় বড় টেলিভিশন চ্যানেল দেখিয়েছে। বিবিসি নাজমুলকে কেন্দ্র করে একটি ডকুমেন্টারি ফিল্মও বানিয়েছে।

আহা মামলা! : নাজমুল এখন একুশে টেলিভিশনের পাশাপাশি বাংলাদেশ প্রতিদিনেও সাভার-আশুলিয়া প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। নাজমুল হুদাকে ২৩ ডিসেম্বর রাতে পুলিশ সাভার থেকে টেলিফোনে আশুলিয়ায় ডেকে নিয়ে আটক করে। পরদিন তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা করে আশুলিয়া থানা পুলিশ। এ মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, ‘নাজমুল ২০, ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর আশুলিয়ার পোশাকশ্রমিকদের আন্দোলন নিয়ে মিথ্যা খবর পরিবেশন করেন। আর এ সংবাদ পাঠাতে তিনি মোবাইল ও ল্যাপটপ ব্যবহার করেন। ২২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রতিদিনে লিখেছেন, ‘গতকাল সকাল থেকে আবদুল্লাহপুর বাইপাইল সড়কের দূরপাল্লার এবং আঞ্চলিক গণপরিবহন চলাচল বন্ধ আছে, সাভার ও আশুলিয়ায় ছয় শর বেশি পোশাক কারখানা বন্ধ রয়েছে। বাইপাইল এলাকায় পুলিশ কোনো যানবাহন ঢুকতে দেয়নি ও বন্ধ ঘোষিত ৫৫টি কারখানা ছাড়া বাকি কারখানার শ্রমিকরা কর্মস্থলে উপস্থিত থাকলেও তারা কর্মবিরতি পালন করেন।’

কিন্তু এ এজাহারেই পুলিশ তথ্য বিকৃত করেছে। আমার কাছে বাংলাদেশ প্রতিদিনের ওই প্রতিবেদনটির প্রিন্ট ও অনলাইন ভার্সন সংরক্ষিত আছে। সেখানে কোথাও ‘সাভার ও আশুলিয়ায় ছয় শর বেশি পোশাক কারখানা বন্ধ রয়েছে’ এ লাইনটি নেই। সেখানে ৫৫টি পোশাক কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার খবরই ছাপা হয়েছে। পুলিশ এজাহারে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছয় শ কারখানা বন্ধের তথ্য ঢুকিয়েছে নাজমুলকে ফাঁসানোর জন্য। আর দশটা পত্রিকা যা তথ্য দিয়েছে নাজমুলও একই তথ্য দিয়েছেন। পুলিশ শুধু নাজমুলের প্রতিবেদনে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ‘অপরাধ’ খুঁজে পেয়েছে।

তার পরও এ মামলায় আদালত নাজমুলকে ২৮ ডিসেম্বর দুই দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। আদালতে নাজমুলের আইনজীবী পুলিশ যে এজাহারে তথ্য বিকৃতি ঘটিয়েছে তা তুলে ধরেছিলেন। এর পরও আদালত নাজমুলের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এ রিমান্ড নিয়ে অবশ্য কথা বলার সুযোগ নেই। কারণ এটা আদালতের এখতিয়ার। তবে একই মামলায় দ্বিতীয় দফায় আবারও নাজমুলকে রিমান্ডে চেয়েছিল আশুলিয়া থানা পুলিশ। কিন্তু আদালত সে আবেদনে সাড়া দেয়নি। তাই পুলিশ এখন নতুন পথ ধরেছে। আর তা হলো, আশুলিয়ার পোশাক কারখানাসংক্রান্ত মামলা খুঁজে বের করে যেসব মামলায় অজ্ঞাত আসামির কথা আছে সেসব মামলায় নাজমুল হুদাকে গ্রেফতার দেখানো। এ পর্যন্ত এ রকম পাঁচটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে প্রতিটি মামলায়ই পুলিশ রিমান্ড চেয়েছে।

অজ্ঞাত আসামি পুলিশের অস্ত্র!

এ মামলাগুলোর দুটি বিশেষ ক্ষমতা আইনে এবং তিনটি পোশাক কারখানায় চুরি, হামলা, শ্লীলতাহানি ও ভাঙচুরের। আশুলিয়া থানায় ১৮ ডিসেম্বর দায়ের করা ২৫ নম্বর মামলায় অভিযোগ হলো একটি পোশাক কারখানায় ঢুকে হামলা, মারপিট, শ্লীলতাহানি, ভাঙচুর ও প্যান্ট চুরির। এ মামলায় সুজন মিয়া ও সাইফুল নামে দুজনসহ অজ্ঞাত পরিচয় অনেককে আসামি করা হয়েছে। এজাহারে সাংবাদিক নাজমুলের নাম বা তাকে সন্দেহ করার কথাও নেই। কিন্তু এ মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে। আশুলিয়া থানায় ২৪ ডিসেম্বর দায়ের করা মামলায় অভিযোগ একই রকম। সেখানে একটি পোশাক কারখানায় ঢুকে হামলা, শ্লীলতাহানি ও চুরির অভিযোগ করা হয়েছে। এ মামলায় ৩৯ আসামির নাম উল্লেখ করেছেন বাদী। ৩৯ জনের মধ্যেও এজাহারে কোথাও সাংবাদিক নাজমুলের নাম নেই। তার পরও পুলিশ অজ্ঞাতের সুযোগ নিয়ে তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছে।

১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের দুটি মামলায়ও গ্রেফতার দেখিয়ে নাজমুলের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। এ দুটির এজাহারেও তার নাম নেই। তবুও পুলিশের ইচ্ছা হয়েছে তাই তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডের আবেদন জানিয়েছে। বিশেষ ক্ষমতা আইনের দুটি মামলাই ২৩ ডিসেম্বর দায়ের করা হয় আশুলিয়া থানায়।

আরেকটি মামলায় নাজমুলকে গ্রেফতার দেখানো হলেও তার নথিপত্র এখনো আদালতে দেয়নি পুলিশ। এটি আশুলিয়া থানায় দায়ের করা হয় ডিসেম্বরে। মামলা নম্বর ২৮। এ মামলার এজাহারেও নাজমুলের নাম নেই। পুলিশের কথা সত্য ধরে নিলে নাজমুল দেখা যাচ্ছে আশুলিয়া এলাকার পোশাক কারখানায় হামলা, ভাঙচুর, শ্লীলতাহানি ও চুরিতে ব্যস্ত। তিনি একজন ভয়ঙ্কর দাগি আসামি। পুলিশ হয়তো আরও মামলা খুঁজছে। হয়তো শেষ পর্যন্ত সাংবাদিক নাজমুল শতাধিক মামলার আসামি ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ হয়ে যাবেন পুলিশের কল্যাণে। হায়রে পুলিশ!

নাজমুলের প্রতি কেন এত ক্ষোভ?

নাজমুলের বিরুদ্ধে পুলিশের যে প্রচণ্ড ক্ষোভ তা এখন স্পষ্ট। তাই তারা তথ্যপ্রযুক্তি আইনের বিতর্কিত ধারায় অসত্য তথ্য দিয়ে মামলা করেই ক্ষান্ত হয়নি। এখন মামলা খুঁজে খুঁজে তাকে সেসব মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নিতে চায়। এর কারণ কী। নাজমুলকে এরই মধ্যে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাকে আটকের ১০ ঘণ্টা পর মামলা দেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, এ ১০ ঘণ্টা তাকে নির্যাতন চালানো হয়। নাজমুল এখন এক কানে শুনতে পান না বলে তার আইনজীবী অভিযোগ করেছেন। নাজমুলকে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ কি কোনো ভয়ঙ্কর তথ্য পেয়েছে? যদি পেয়ে থাকে তাহলে পুলিশ তা আদালতে জানালে আদালত নিশ্চয়ই তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় ফের রিমান্ড দিত। কিন্তু আদালত তা দেয়নি। আমি ধরে নিতে পারি ওই মামলায় পুলিশ এখন আর সুবিধা করতে না পেরে নতুন নতুন মামলার আশ্রয় নিচ্ছে। আর এজাহারে নাম না থাকার পরও ওইসব মামলায় নাজমুলকে রিমান্ডে নেওয়ার মূল উদ্দেশ্য হলো তাকে নির্যাতন করা। সাভারের অনেক সাংবাদিকই আমার পরিচিত। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ‘নাজমুল এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার রোষে পড়েছেন। নাজমুলের অপরাধ তিনি পোশাকশ্রমিকদের একটি প্রতিবেদন নিয়ে পুলিশের এক বড় কর্তার সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন।’ এ ছাড়া সাভার-আশুলিয়ায় কতিপয় পুলিশের অনৈতিক কাজের ওপর নাজমুল বেশকিছু প্রতিবেদন করেছেন বিভিন্ন সময়ে। কিন্তু আদালতে রিমান্ড আবেদনে পুলিশ দেশের স্বার্থ, জনগণের স্বার্থসহ শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের নাম ভাঙাচ্ছে। দেশের অনেক এলাকার মতো সাভারেও সাংবাদিকদের গ্রুপিং আছে। নাজমুলের প্রতিপক্ষ সাংবাদিকদের কেউ কেউ আমাকে বলার চেষ্টা করেছেন, ‘পুলিশ যে ঘটনায় মামলা করেছে সেই ঘটনায় নাজমুলের দায় নেই। তবে নাজমুলের বিরুদ্ধে পেশাগত অনেক অভিযোগ আছে। তাই আমরা কথা বলতে পারছি না। প্রতিবাদ করতে পারছি না।’ আমার কথা হলো, নাজমুলের বিরুদ্ধে পেশাগত অনেক অভিযোগ থাকলে তার আইনগত প্রতিকারও আছে। সত্যিই যদি নাজমুল কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকেন তার জন্য মামলা হতে পারে। কিন্তু পুলিশ যে মামলা দিয়েছে আর যেসব মামলায় গ্রেফতার দেখাচ্ছে সেখানে তো ওই ধরনের অভিযোগ আমরা পাচ্ছি না। কেন পাচ্ছি না? আর নাজমুলকে পুলিশ এই যে হয়রানি করছে তা কি ওইসব কারণে বৈধ হয়ে গেল?

নাজমুলের বিরুদ্ধে কথিত অভিযোগে মামলার একটি হলো সাভারের এসআই আবদুস সাত্তারের স্ত্রীর শ্লীলতাহানি। ওই ঘটনাটি আমার জানা আছে। বিষয়টি হলো সাভারের গেন্ডা এলাকায় এসআই সাত্তার সরকারি জমি দখল করে একটি বিলাসবহুল বাড়ি বানিয়েছেন বলে অভিযোগ ছিল। ২০১১ সালে সেটা নিয়ে একটি প্রতিবেদন করতে আমি সেখানে যাই। ওই বাড়ি নিয়ে প্রতিবেদন তৈরির একপর্যায়ে আমার ওপর হামলা করেন সাত্তারের লোকজন। ক্যামেরা কেড়ে নিতে চান। পরে পুলিশ এসে তাদের নিবৃত করে। সেখানে নাজমুল ছিলেন না। কিন্তু মামলা হয় নাজমুলের বিরুদ্ধে। তার অপরাধ তিনি আমাকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছিলেন। পরে পুলিশ সদর দফতরের তদন্তে ওই মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হয়।

তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ‘বাপ’!

নাজমুলের মুক্তি দাবি করে এরই মধ্যে সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার বিবৃতি দিয়েছে। তারা বিতর্কিত তথ্যপ্রযুক্তি আইনে নাজমুলকে গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে ওই আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছে। তবে তারা হয়তো এখনো বুঝতে পারেনি বাংলাদেশে সাংবাদিক হয়রানির আরও কত কৌশল আছে পুলিশের। আর এ হয়রানি করতে আকাশের তারার মতোই পুলিশের ধারা। নাজমুলের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা হওয়ার পর রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, জানতে চেয়েছে সর্বশেষ পরিস্থিতি। তখনকার পরিস্থিতি তখন জানিয়েছি। তবে এখন তাদের বলছি, এখনকার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। আশুলিয়া থানা পুলিশ যত মামলা পাচ্ছে সব মামলায়ই নাজমুলকে আসামি করছে। আশুলিয়া পুলিশই যেন আইন। তারা তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ‘বাবা’। তথ্যপ্রযুক্তি আইন বাতিল করে কী হবে!

জাস্ট কৌতূহল! : কানাডাপ্রবাসী সাংবাদিক সওগাত আলি সাগর তার ফেসবুকে নাজমুলকে নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি জানতে চেয়েছেন, ‘নাজমুল হুদা নামে সাভারের একজন সাংবাদিককে গ্রেফতার করে আটকে রাখার ব্যাপারে ঢাকার সাংবাদিক ইউনিয়ন তথা সাংবাদিক নেতাদের কোনো প্রতিক্রিয়া আছে কি? জাস্ট কৌতূহল।’ আর সেখানে জবাবে একাত্তর টেলিভিশনের যুগ্ম প্রধান বার্তা সম্পাদক মনির হোসেন লিটন বলেছেন, ‘সাগর ভাই! নাজমুল হুদা অন্তত তিন মাসের জন্য আপনার মফস্বল-কলিগ ছিল। সে মনে হয় এখনো একুশে টিভিতেই আছে, যেই টিভির সিইও আমাদের বিএফইউজের সভাপতি বুলবুল ভাই। তাই সাংবাদিক ইউনিয়ন বা নেতাদের প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি বুলবুল ভাই ভালো জানেন। নাজমুলের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ থাকতেই পারে, কিন্তু প্যান্ট চুরি! এ যে সাবের হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিএনপি আমলে দেওয়া প্লেট চুরির মামলার সমগোত্রীয় হয়ে গেল! যতদূর জানি এর আগে তার বিরুদ্ধে মাইক্রোবাস চুরির মামলা ছিল। পুলিশ এখন মাইক্রোবাস থেকে প্যান্টে নেমে এসেছে।’ সাংবাদিক নাজমুল হুদাকে আটকের পর ফ্রান্সের বার্তা সংস্থা এএফপির বাংলাদেশ ব্যুরোপ্রধান শফিকুল আলম একটি লেখা লিখেন। সেখানে রানা প্লাজা নিয়ে নাজমুলের এক্সক্লুসিভ ফুটেজ এবং সাহসী সাংবাদিকতার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘নাজমুলের জন্ম যদি আমেরিকায় হতো, তাহলে নাজমুল রানা প্লাজার ওই ফুটেজ ও প্রতিবেদনের জন্য পুলিত্জার পেতেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য নাজমুলকে এখন পোশাক কারখানার শ্রমিকদের আন্দোলন নিয়ে রিপোর্ট করায় আটক হয়ে কারাগারে যেতে হয়েছে। বাংলাদেশের পুলিশ নাজমুলের প্রতি আরেকটু সহনশীলতা দেখাতে পারত।’

আর আমার কথা হলো সহনশীল হওয়ার প্রয়োজন নেই। পুলিশকে সত্যনিষ্ঠ হওয়ার আহ্বান জানাই। প্রতিহিংসা নয়, আইনের সঠিক প্রয়োগের আহ্বান জানাই। পুলিশের পোশাক পরে ব্যক্তিগত আক্রোশ চরিতার্থ করা থেকে নিবৃত হওয়ার আহ্বান জানাই।

সবশেষে সরকারের কাছে আবেদন, সাংবাদিক নাজমুল হুদার প্রতি সুবিচার করুন, প্লিজ।

লেখক: সাংবাদিক ইমেইল : [email protected]

সর্বশেষ খবর