সোমবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

দল-মতের পার্থক্য ভুলে গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ত্বরান্বিত করুন : রাষ্ট্রপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, একটি গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্য থেকে জাতির অগ্রযাত্রার আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবরূপ দিতে বর্তমান সরকারের প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে এবং দল-মত-পথের পার্থক্য ভুলে জাতির গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।

জাতীয় সংসদে ২০১৭ সালের প্রথম অধিবেশনে (শীতকালীন) গতকাল সন্ধ্যায় দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন। এর আগে বিকাল ৪টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়। রাষ্ট্রপতি বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করে আসছে। এ কারণে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির যে পথে আমরা হাঁটছি, সে পথ ধরেই বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে এবং বিশ্বসভায় একটি উন্নত দেশ হিসেবে অধিষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, গত মেয়াদে গৃহীত কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকার এ লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ফলে দেশে নাশকতার কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং জনজীবনে স্বস্তি বিরাজ করছে। সরকারের দক্ষ পরিচালনায় অর্থনীতির সব সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। সামাজিক সূচকসমূহের অগ্রগতিতে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশসমূহের তুলনায় অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে গেছে। রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতীয় সংসদ দেশের আপামর জনসাধারণের আশা-আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুদৃঢ়করণের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও আলোকিত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সংহতকরণ এবং জাতির অগ্রযাত্রার স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে। আমি জনগণের প্রত্যাশা পূরণের প্রতিষ্ঠান এই মহান জাতীয় সংসদে সরকারি দল এবং বিরোধী দলসহ সবাইকে যথাযথ ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাই। তিনি বলেন, একটি গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্য থেকে জাতির অগ্রযাত্রার আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবরূপ দিতে বর্তমান সরকারের প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতা সমুন্নত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুজ্জ্বল রাখতে, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় করতে, দেশ থেকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে এবং শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে বাঙালি জাতিকে আবারও ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস গ্রহণ করতে হবে। রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে সরকারের নানা উন্নয়ন মূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, ‘রূপকল্প-২০২১’ এবং দিনবদলের সনদের ভিত্তিতে প্রণীত পরিকল্পনা ও ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার আওতায় আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হবে এবং ২০৪১ সালে বিশ্বসভায় একটি উন্নত দেশের মর্যাদায় অভিষিক্ত হবে, এটাই জাতির প্রত্যাশা। এক ঘণ্টারও বেশি সময় দেওয়া বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি বর্তমান সরকারের নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড এবং দেশ পরিচালনার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

সর্বশেষ খবর