শিরোনাম
বুধবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

একতরফাভাবে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা করা মুক্তিযুদ্ধের পরিপন্থী

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

একতরফাভাবে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা করা মুক্তিযুদ্ধের পরিপন্থী

কর্নেল (অব.) জাফর ইমাম

একতরফাভাবে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছেন কর্নেল (অব.) জাফর ইমাম বীরবিক্রম। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন এমএনএ, এমপি, রাজনৈতিক সংগঠক, প্রশিক্ষক, বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধি, সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিনিধি, মুজিব বাহিনীসহ স্বীকৃত সব বাহিনীর প্রতিনিধি সর্বোপরি যুদ্ধকালীন রণাঙ্গনের বিভিন্ন পর্যায়ের কমান্ডারদের পাশ কাটিয়ে যে বাছাই কমিটি করা হয়েছিল তা সম্পূর্ণভাবে একতরফা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থীও বটে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় একথা বলেন তিনি। জাফর ইমাম বলেন, মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) প্রতিনিধি, মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রতিনিধি এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত। এরা সবাই একই উেসর প্রতিনিধিত্ব করেন। যেমন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী তিনি আবার জামুকারও চেয়ারম্যান। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একযোগে কাজ করেন। আর যিনি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা নেতা তিনিও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কিনা তারও নিশ্চয়তা নেই। তাই বলব এ কমিটির সদস্যদের আগে যাচাই-বাছাই করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সম্পৃক্ত সংগঠনসমূহের প্রতিনিধিদের নিয়ে এই যাচাই-বাছাই করার উদ্যোগ গ্রহণ না করলে সঠিক তালিকা কখনো প্রণয়ন করা সম্ভব হবে না। পাশাপাশি প্রশ্নবিদ্ধ বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধাদের কারণে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস হবে বিকৃত। জাফর ইমাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে আহ্বান জানিয়ে এসেছেন যুদ্ধকালীন এমএনএ, এমপি, সংশ্লিষ্ট সংগঠন, মুজিব বাহিনীসহ আঞ্চলিক কমান্ডারদের সহযোগিতায় মুক্তিযোদ্ধা বাছাই কমিটি গঠনের মাধ্যমে একটি সঠিক তালিকা তৈরির মহৎ কাজটি সফল করা হোক। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসের স্বার্থে ও চেতনাকে সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৬ থেকে আজ পর্যন্ত সবাইকে সম্পৃক্ত করে যে তালিকা প্রণয়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে আসছেন সেই আলোকে সমন্বয় যাচাই-বাছাই কমিটি করা হোক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আপসহীন ভূমিকাকে সর্বস্তরের মুক্তিযোদ্ধারা অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে দেখে আসছেন। বর্তমানে সশস্ত্র সহ মুক্তিযোদ্ধারা অনেকে হতাশ। অনেকে নীরবে অশ্রু বিসর্জন করছেন। ভবিষ্যতে যারাই মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই করবেন সংশ্লিষ্ট নিরপেক্ষ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তাদের যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করা উচিত। তাই সবাই এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে যেন এ ব্যাপারে ব্যর্থতার জন্য আমাদের জবাবদিহি করতে না হয়।

সর্বশেষ খবর