বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

জেএমবির আইটি প্রধানসহ গ্রেফতার ৪ অস্ত্র গুলি উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে এক জঙ্গি আস্তানায় র‌্যাব অভিযান চালিয়ে নব্য জেএমবির আইটি প্রধানসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। র‌্যাব জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃতরা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির (সারোয়ার-তামিম গ্রুপ) সদস্য। তাদের কাছ থেকে দুটি নাইন এমএম পিস্তল, ২১ রাউন্ড গুলি, দুটি চাপাতি, দুটি ছুরি, গান পাউডার ও বোমা তৈরির বিভিন্ন উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছে। র‌্যাব আরও জানায়, তাদের কাছে তথ্য ছিল দনিয়ার কবিরাজবাগ ২৫১ নম্বরের পাঁচতলা ভবনের চারতলার একটি ফ্ল্যাট ‘জঙ্গি আস্তানা’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার গভীর রাতে সেখানে অভিযান চালানো হয়। তখন গ্রেফতার হয় আশফাক-ই-আজম ওরফে আপেল, মাহবুবুর রহমান, শাহিনুজ্জামান ও আশরাফুল ইসলাম। আশফাক নব্য জেএমবির আইটি শাখার প্রধান। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান সাংবাদিকদের বলেন, সাদা পোশাকে র‌্যাব সদস্যরা ওই বাড়ির চারপাশ ঘিরে রাখে। শেষ রাতের দিকে অতর্কিত অভিযান চালানো হয়। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই গ্রেফতার করা হয় জঙ্গিদের। গ্রেফতারকৃত আশফাকের বাড়ি রংপুর কোতোয়ালি থানায়। জঙ্গিদের বিভিন্ন ওয়েবসাইট পরিচালনা ও ‘টেকনিক্যাল সাপোর্ট’ দেওয়ার দায়িত্ব ছিল তার ওপর। মাহবুবুর রহমানের বাড়ি বগুড়ার গাবতলীতে, শাহিনুজ্জামানের বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুরে এবং আশরাফুল ইসলামের বাড়ি জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে। র‌্যাব সূত্র বলছে, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক থেকে ২০১২ সালে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে বিএসসি পাস করার পর গুলশান, উত্তরা ও মোহাম্মদপুরে বিভিন্ন আইটি ফার্মে প্রোগ্রামার হিসেবে কাজ করত আশফাক। তবে ছাত্রাবস্থাতেই সে ধর্মীয় বইপুস্তক, লিফলেট ও অনলাইনে বিভিন্ন সাইট ঘেঁটে ঘেঁটে উগ্রবাদের দিকে ঝুঁকে পড়ে। ২০১১ সালে রংপুরের হারাগাছায় একটি মাহফিলে কামাল ও সাকিব মাস্টারের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং তাদের মাধ্যমে সে জেএমবিতে যোগ দেয়। পরে রংপুর ও বগুড়ায় কয়েকটি গোপন বৈঠকে অংশ নেয়। আশফাক চট্টগ্রামে অস্ত্র চালানোর ওপর প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর জেএমবির আইটি সেক্টরে কাজ শুরু করে। সেখানেই মানিক নামে অপর এক জেএমবি সদস্যের সঙ্গে তার পরিচয় থেকে সখ্যতা হয়। এই মানিকই সারোয়ার জাহান। জানা গেছে, ধোলাইপাড় থেকে দনিয়া এ কে হাইস্কুলের বাম দিকে মার্কেন্টাইল ব্যাংক শাখার বাম পাশের গলির ভিতর এই ২৫১ নম্বর হোল্ডিংয়ের পাঁচতলা ভবন। ভবন মালিক ২০১১ সালে মারা যান। তার তিন ছেলের মধ্যে দুজন মালয়েশিয়ায় থাকেন। বর্তমানে তার স্ত্রী শায়লা বেগমই এর দেখভাল করেন। ছোট ছেলে সাবের হোসেন দনিয়া এ কে হাইস্কুল থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দেবে। আরও জানা গেছে, পাঁচতলা ভবনের দ্বিতীয়তলার ডান দিকের ফ্ল্যাটে ছিল জঙ্গিদের আস্তানা। অভিযানের পরপরই শায়লা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায় র‌্যাব। রাত ৮টার দিকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর বলেন, বাসার অবস্থান গলির অনেক ভিতরে হওয়ায় অনেক দিন ধরেই ভাড়া হচ্ছিল না। এ জন্য জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে ৭ হাজার টাকায় ফ্ল্যাটটি ভাড়া দিয়ে দেন বলে দাবি করেছেন শায়লা।

সর্বশেষ খবর