বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

ইসির চাহিদা অনুসারে সব সহায়তা দেওয়া হবে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সব নির্বাহী বিভাগের কর্তব্য। এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সব নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুসারে সরকার তথা নির্বাহী বিভাগ সব ধরনের সহায়তা করছে। আগামীতে সব ধরনের সহযোগিতাও অব্যাহত থাকবে।

জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে গতকাল টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাসদের এমপি নাজমুল হক প্রধান (পঞ্চগড়-১)-এর তারকা চিহ্নিত লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে সন্ধ্যায় ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী লিখত জবাবে বলেন, প্রথমবারের মতো দলীয়ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রশংসিত নির্বাচন হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। সব নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের চাহিদানুযায়ী সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োগসহ সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাননীয় উচ্চ আদালতের নির্দেশে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হওয়ায় নির্বাচিত দলীয় সরকারের অধীনে দশম জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনকালীন সময়ে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা এবং সরকারি ব্যক্তিবর্গের নির্বাচনী প্রচারণার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে একটি আদর্শ আচরণ বিধিমালা প্রণয়ন করে। তিনি আরও বলেন, ভোটারদের জন্য ভোটারগণ যাতে নির্বিঘ্নে ও স্বাচ্ছন্দ্যে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারেন এবং নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন সেজন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এ ছাড়া নির্বাচনোত্তর বিজয়ী-বিজিত প্রার্থী ও তার সমর্থকদের প্রতিক্রিয়া-সহিংসতায় উদ্বুদ্ধ অনাকাঙ্ক্ষিত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, বিজয় মিছিলের বিষয়ে আচরণ বিধিমালা প্রতিপালনসহ তাত্ক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক সব ধরনের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। নির্বাচন কমিশনের উন্নয়ন নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকার নির্বাচন কমিশনের কাজকে আরও গতিশীল করার জন্য নির্বাচন কমিশনের নিজেস্ব ভবন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের নিজস্ব ভবন এবং মাঠপর্যায়ের প্রতিটি কার্যালয়ের নিজস্ব ভবন নির্মাণ করেছে।

নুরুল ইসলাম ওমরের (বগুড়া-৬) প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ পেরিয়ে একটি শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ, সুখী এবং উন্নত জনপদে পরিণত করার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।

ফেরত আসতে হবে না : কামাল আহমেদ মজুমদার (ঢাকা-১৫)-এর তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৫ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর টেলিফোনিক আলাপের পরিপ্রেক্ষিতে মালয়েশিয়া সরকার বিদেশি কর্মীদের জন্য সাময়িক ওয়ার্ক পাস ইস্যুর ঘোষণা দিয়েছে। ফলে মালয়েশিয়ায় আবস্থানরত আনুমানিক ৩ লাখ ৫০ হাজার বাংলাদেশি কর্মী সে দেশেই কাজের সুযোগ পাবে। তা না হলে কর্মীদের দেশে ফিরে আসতে হতো। এ সময় শেখ হাসিনা আরও বলেন, বিশ্বের ১৬২টি দেশে এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশি কর্মী বর্তমানে কর্মরত আছে। বিদেশে যেসব কর্মী আন ডকুমেন্টেড অবস্থায় আছে তাদের সংশ্লিষ্ট দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে বৈধকরণ, আইনি সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে সৌদি আরবে প্রায় ৮ লাখ, মালয়েশিয়ায় ২ লাখ ৬৭ হাজার এবং ইরাকে ১০ হাজার আন ডকুমেন্টেড বাংলাদেশি শ্রমিকের বৈধতা প্রদান করা হয়েছে। এ সময় তিনি জানান, যে কোনো আইন বহির্ভূত কাজের সঙ্গে জড়িত রিক্রুটিং এজেন্সি ও মেডিকেল সেন্টারগুলোকে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইনের আওতায় তাত্ক্ষণিক জরিমানা ও কারদণ্ডে দণ্ডিত করছে।

সর্বশেষ খবর