শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় গিয়ে ওরাই লাশ

ভিড়ের মধ্যে উঠে গেল বেপরোয়া ট্রাক, মা-ছেলেসহ নিহত ৮ আহত ৯, শোকের ছায়া খাগড়াছড়ির আলুটিলাতে

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় গিয়ে ওরাই লাশ

হেলপার চালাচ্ছিলেন এই ট্রাক। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তিনি উঠিয়ে দেন পুণ্যার্থীদের ওপর —বাংলাদেশ প্রতিদিন

খাগড়াছড়ির আলুটিলায় গতকাল ট্রাকের চাপায় পিষ্ট হয়ে মা-ছেলেসহ আটজন নিহত ও নয়জন গুরুতর আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন মহালছড়ি উপজেলার চুংড়াছড়ির মংপ্রু মারমার স্ত্রী নাইম্রা মারমা (৪০) ও তার ছেলে চিংলা মারমা (১৩), একই এলাকার চাইলাপ্রু মারমার ছেলে উংচানু মারমা (১৫), মংমং মারমার শিশুকন্যা মাথিং মারমা (৫), চাইহ্লা মারমার শিশুকন্যা টুনটুনি মারমা (১০), মংক্ররি মারমার ছেলে অংক্যচিং মারমা (১৫), ববি মারমা (১৩) ও রামগড় উপজেলার পাতাছড়া ইউনিয়নের নাকপা এলাকার আক্যসুই মারমার ছেলে সাথোইপ্রু মারমা (১৫)। নিহতদের মধ্যে উংচানু মারমা ও অংক্যচিং মারমা এসএসসি পরীক্ষার্থী।

 প্রথম দিন বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। জানা গেছে, আলুটিলায় ধাতুচৈত্র বৌদ্ধবিহারের প্রধান ভান্তের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠান ছিল গতকাল। এখানে বহু পুণ্যার্থীর মিলনমেলা ঘটে। এ নিয়ে রাস্তার দুই পাশে মেলা বসে। দোকানে পিঠা খাওয়ার জন্য অনেক লোক জড়ো হয়। এমন সময় ঢাকা থেকে পাথরবোঝাই (চট্ট মেট্রো ১১-৩৮০০) ট্রাকটি জড়ো হওয়া লোকদের ওপর তুলে দেন চালক। এতে সাতজন নিহত ও নয়জন আহত হন। আহতদের মধ্যে ববি মারমা ও অন্য একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক নয়ন ময় ত্রিপুরা জানান, আহতদের অবস্থা এত বেশি খারাপ যে তাদের অন্য কোথাও পাঠানো যাচ্ছে না। পুলিশ ঘাতক ট্রাকটি আটক করেছে। তবে চালক পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। ঘটনার খবর পেয়ে খাগড়াছড়ির এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও পৌর মেয়র মো. রফিকুল আলম আহতদের হাসপাতালে দেখতে যান। ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে নিয়ে আসেন ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। দুর্ঘটনার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা স্বজনদের খুঁজতে হাসপাতালে ভিড় জমান। এ সময় অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। খাগড়াছড়ি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিরা হলেন মাটিরাঙা উপজেলার তবলছড়ি এলাকার মংসাউ মারমার স্ত্রী ম্রানাইউ মারমা (২৫), সদর উপজেলার মাইসছড়ি এলাকার সাজাউ মারমার ছেলে জনি মারমা (২৮), মাটিরাঙা উপজেলার আলুটিলা এলাকার ইন্দ্র ত্রিপুরার ছেলে সুকেন ত্রিপুরা (২৮), মহালছড়ি উপজেলার চেহাইউ মারমার মেয়ে ববি মারমা (৩০), চুংড়াছড়ি এলাকার মংমং মারমার স্ত্রী উমেচিং মারমা, সদর উপজেলার খাগড়াপুর এলাকার তরুণ ত্রিপুরার স্ত্রী পিপি রানী ত্রিপুরা (২৪), রাঙামাটি জেলার সাজেকের দারিপাড়া এলাকার জনি চাকমার ছেলে শান্তিরঞ্জন চাকমা (৪৫), মহালছড়ি উপজেলার চিংলামং মারমার ছেলে চিংক্যহ্লা মারমা (৮), একই এলাকার মংমং মারমার মেয়ে চিংম্রাউ মারমা (১৫) ও পাইসাউ মারমার ছেলে রনি মারমা (৩০)। সর্বশেষ তথ্যে জানা যায়, লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর