বুধবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

মৃত্যু পরোয়ানা শুনলেন মুফতি হান্নান

গাজীপুর প্রতিনিধি

মৃত্যু পরোয়ানা শুনলেন মুফতি হান্নান

সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর সিলেটে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি আবদুল হান্নানের মৃত্যু পরোয়ানা ও রায়ের কপি গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছেছে। কারাগারে বন্দী মুফতি হান্নানকে তার মৃত্যু পরোয়ানা ও আপিলের রায় পাঠ করে শুনিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।

কাশিমপুর কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, ২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারে বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। এতে আনোয়ার চৌধুরী আহত হন এবং পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ নিহত হন তিনজন। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালত হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ তিন জঙ্গিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড এবং তার ভাই মহিবুল্লাহ মফিজ ও আবু জান্দাল নামের অপর একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুজন হলেন—শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার ওরফে রিপন। এরপর ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষের আপিল ও রাষ্ট্রপক্ষের ডেথ রেফারেন্সের (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের আবেদন) শুনানি শেষে গত বছর ১১ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট বেঞ্চ আসামিদের আপিল খারিজ করে রায় দেয়। হাই কোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করেন মুফতি হান্নান ও বিপুল। আর দেলোয়ারের পক্ষে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আইনজীবী নিয়োগ করা হয়। শুনানি শেষে আসামিদের আপিল খারিজ করে হাই কোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখে ৭ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বিভাগ ওই রায় দেয়। ১৭ জানুয়ারি আপিল বিভাগ ৬৫ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ করে। আপিল বিভাগের রায়টি হাই কোর্ট হয়ে বিচারিক আদালতে পাঠানো হয়। বিচারিক আদালত মৃত্যু পরোয়ানা জারি করার পর তা গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। শুক্রবার তা কারাগারে পৌঁছায়। এরপর বন্দী মুফতি হান্নানকে মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে তিনি রিভিউ করবেন বলে তার আইনজীবী জানিয়েছেন। দণ্ডিত পাঁচ আসামির সবাই কারাগারে আছেন।

আপিল বিভাগে আপিল খারিজ হওয়ার পর এখন কেবল রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন (রিভিঊ) করার সুযোগ রয়েছে আসামিদের। তা নাকচ হয়ে গেলে শেষ চেষ্টা হিসেবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন। সে আবেদনও প্রত্যাখ্যাত হলে কারাবিধি অনুযায়ী তাদের দণ্ড কার্যকর করবে সরকার।

সর্বশেষ খবর