দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, কেবল সরকারি নয়, সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেই দুর্নীতি আছে। গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এনজিও বিষয়ক ব্যুরো আয়োজিত জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়ন এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে এনজিওদের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন। অনেকে আছেন, যা বিশ্বাস করেন তা বলেন না, আবার যা বলেন, তা বিশ্বাস করেন না। তিনি বলেন, বিভিন্ন সূত্র থেকে আমার কাছে খবর এসেছে, দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের কারণে ঘুষের রেট বেড়ে গেছে। আগে যেখানে ১০ টাকা নেওয়া হতো। এখন ১০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। গ্রেফতারের ঝুঁকি থাকায় তারা আগের চেয়ে বেশি ঘুষ নিচ্ছে। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতির পাগলা ঘোড়ার লাগাম টেনে ধরা খুব কঠিন। অনেকে নিজেরা দুর্নীতি করেন, কিন্তু অন্যদের সৎ থাকতে বলেন। গত এক বছরে ৪০০ জনকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন অসম্ভব নয়। কিন্তু কঠিন। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধির পরও যারা ঘুষ নেন, তাদের বিরুদ্ধে সাহসের সঙ্গে কমিশনে অভিযোগ দিতে হবে। অভিযোগ পেলে রুই-কাতলা কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে হলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, দুর্নীতিবাজদের বিচারের আওতায় আনা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা তৈরি করা এবং তরুণদের দুর্নীতি প্রতিরোধে সম্পৃক্ত করতে হবে। আর এই কাজগুলো করতে হবে সরকারকে। তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদকের একা কাজ করা সম্ভব নয়। প্রত্যেকটি এনজিও অফিসে দুর্নীতির অভিযোগ জমা দেওয়ার একটি বাক্স থাকতে হবে। নিজেরা করির সমন্বয়ক খুশী কবির বলেন, দুর্নীতির চিত্র আগের চেয়ে কমে গেছে। এ জন্য আমাদের হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। কারণ প্রকাশ্যে দুর্নীতি না হলেও ভিতরে ঠিকই দুর্নীতি হচ্ছে। তাই দুর্নীতির যে কোনো তথ্য থাকলে সেটা অবশ্যই দুদককে দ্রুততার সঙ্গে জানাতে হবে। এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. আসাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, এনজিও ব্যক্তিত্ব ফারাহ কবীর, ফিলিপ বিশ্বাস ও সজীব বিশ্বাস।